ভূমিকা: জোয়ার বা জওয়ার বা দিধান বা কাশজোনার বা কুরবি (বৈজ্ঞানিক নাম: Sorghum bicolor, ইংরেজি নাম: Sorghum.) পোয়াসি পরিবারের Sorghum গণের তৃণ। সকল পরিবেশে জন্মাতে পারে।
বর্ণনা: জোয়ার বা জওয়ার বর্ষজীবী বা স্বল্পকাল স্থায়ী বহুবর্ষজীবী তৃণ, কান্ড প্রায় ৪ মিটার উঁচু, খাড়া, নিরেট। পত্রফলক রৈখিক, গোড়া গোলাকার, অনুফলক শক্ত, শীর্ষ গোলাকার, প্রান্ত সিলিয়াযুক্ত, আবরণ গোলাকার, রোমশ বিহীন।
পুষ্প বিন্যাস বৃহৎ পেনিকেল, ৮-৪০ সেমি লম্বা, শিথিল বা সঙ্কুচিত, নিচের শাখা সমুহ আবর্ত, স্পাইকলেট জোড়াবদ্ধ, অসম, অবৃন্তক স্পাইকলেট ডিম্বাকার, ৫-৭ মিমি লম্বা, পরিঘাতকলা খররোমাবৃত, সবৃন্তক স্পাইকলেট রৈখিকউপবৃত্তাকার, গাঢ় বাদামী। নিচের গুম ৫-৬ মিমি লম্বা, চর্মবৎ, ১২-১৫ শিরাল, শিরা উজ্জ্বল, পরিপক্ক অবস্থায় গাঢ় বাদামী বর্ণে পরিনত, ওপরের ঘুম ৫-৬ মিমি লম্বা, চর্মবৎ ৯-শিরাল লাল বা লালাভ-বাদামী। নিচের লেমা ৫-৬ মিমি লম্বা, ঝিল্লিযুক্ত, কিলযুক্ত, ৩- শিরাল, প্রান্ত রোমশ, ওপরের লেমা ডিম্বাকার, ৪.০-৪.৫ মিমি লম্বা, ৩-শিরাল, ঝিল্লিযুক্ত, প্রান্ত সিলিয়া যুক্ত, শূক ১০-১২ মিমি লম্বা। পেলিয়া রৈখিক, ৩ মিমি লম্বা, রোমশ, প্রান্ত ঝিল্লিময়। পুংকেশর ৩টি, পরাগধানী ৩-৪ মিমি লম্বা, হলুদ। ক্যারিঅপসিস উজ্জ্বল, প্রশস্ত উপবৃত্তাকার, ২-৩ মিমি লম্বা, লাল বা লালাভ-বাদামী, ১ মিমি লম্বা। ফুল ও ফল ধারণ: আগস্ট-অক্টোবর।
ক্রোমোসম সংখ্যা: ২n = ৩৬, ৫৪ (Fedorov, 1969)।
আবাসস্থল ও চাষাবাদ: বিভিন্ন শ্রেণীর মৃত্তিকা, গভীর তলের বালু থেকে কাদামাটি।
বিস্তৃতি: জোয়ার বা জওয়ার বিশ্বব্যাপী চাষাবাদকৃত। বাংলাদেশের মধ্য ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জন্মে।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: আফ্রিকা ও ভারতের শুষ্ক অঞ্চলের মানুষের জওয়ার প্রধান খাদ্য। এটি অশ্ব ও গবাদি পশুর খাদ্য। কাণ্ড ঘরের ছাউনি ও জ্বালানীরূপে ব্যবহার করা হয় (Skerman and Riveros, 1990)। আফ্রিকায় এই শস্য দ্বারা মদ তৈরী করা হয় (Purseglove, 1968)। বীজ পৈত্তিক সমস্যা, অর্শ, আলসার, টিউমার মূত্রথলি ও কিডনির সমস্যা নিরসনে মুত্রনালী ঔষধরূপে গ্রহণ করা হয় (Kirtikar et al., 1935)।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১২তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) জওয়াব প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের সংকটের কারণ দেখা হয়েছে আবাদে অনাগ্রহ এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে প্রজাতিটি সর্বপ্রকার উপজাতকে জীবিত জিন ব্যাংকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।[১]
তথ্যসূত্র:
১. এস নাসির উদ্দিন (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১২ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৩৫। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।