মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক (Mustafa Kemal Ataturk ১৯ মে ১৮৮১- ১০ নভেম্বর ১৯৩৮) ছিলেন আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা। তরুণ তুর্কি বিপ্লবের (১৯০৮) সময় তিনি একজন সেনানায়ক ছিলেন। প্রথম বিশ্ব-মহাযুদ্ধে তুরস্কের পরাজয় ঘটলে তিনি ন্যাশনালিস্ট পার্টি গঠন এবং সেনাবাহিনীর সাহায্যে গ্রিক ও অন্যান্য বিদেশি শক্তিকে পরাভূত করে তুরস্কের শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন (১৯২১-২২)।
কামাল আতাতুর্ক তুরস্কে সুলতানি শাসন ও মুসলিম ধর্মের প্রতিভূ খলিফার পদ লুপ্ত করে সাধারণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। বার চারেক তুরস্কের একনায়কতন্ত্রী প্রেসিডেন্ট (১৯২৩-৩৮) ছিলেন; সেই সময়ে তিনি তুরস্ককে পাশ্চাত্য ধারায় একটি আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ (Secular) রাষ্ট্রে পরিণত করেন। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের যাবতীয় অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠানকে তিনি ইসলাম ধর্মীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করেন।
মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক শরিয়তি দণ্ডবিধির পরিবর্তে সুইস বেসামরিক ও ইতালীয় দণ্ডবিধি প্রবর্তন করেন। পােশাক-পরিচ্ছদ, বিবাহবিধি ইত্যাদি ইসলামি রীতিনীতির আমুল পরিবর্তন এবং আধুনিকতা ও সেকিউলারিজমের গােড়াপত্তন তাঁর প্রধান কীর্তি। তুর্কি ভাষার লিপি হিসেবে আরবি লিপির পরিবর্তে রােমান বর্ণমালা তিনি প্রবর্তন করেন। ক্রমবর্ধিষ্ণু জাতীয় একাত্মভাব বজায় রেখে কামাল ইসলামি সংস্কৃতির পরিবর্তে পাশ্চাত্যের আধুনিক মানসিকতা দেশবাসীর মনে সঞ্চারিত করেন। তাঁর অনুসৃত বিধিব্যবস্থা কামালবাদ নামে পরিচিত।
তথ্যসূত্র:
১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৮৩।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।