ভারত পৃথিবীর বৃহৎ নয়া উপনিবেশিক পুঁজিবাদী শোষণমূলক রাষ্ট্র

ভারত পৃথিবীর অন্যতম এবং দক্ষিণ এশিয়ার সুবৃহৎ পুঁজিবাদী শোষণনির্ভর নয়া উপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদ দ্বারা নিপীড়িত রাষ্ট্র। ভারত বিশ্বপরিস্থিতিতে ক্রমেই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই দেশটি ১৫ হাজার কিলােমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর চীন, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত।

এই বিশাল দেশের উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে ভারতীয় উপদ্বীপের প্রান্তবিন্দু পর্যন্ত ৩ হাজার কিলােমিটার দীর্ঘ। ভারতের তিন বৃহৎ নদী সিন্ধু, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র চিরতুষারাবৃত ও হিমবাহকীর্ণ হিমালয়ের সুউচ্চ শৃঙ্গসমূহ থেকে উৎপন্ন এবং উপনদী সহ দেশের শস্যভাণ্ডারস্বররূপ তার সমভূমিগুলিকে জলসিক্ত করে প্রবাহিত। এসব বিশাল সমভূমির পর রয়েছে দাক্ষিণাত্যের মালভূমি-মরভূমি ও অনুচ্চ পর্বত অধ্যুষিত এক বিস্তৃত অঞ্চল। ভারত মহাসাগরমুখী এর পূর্ব উপকূল উষ্ণমণ্ডলীয় বনে আচ্ছন্ন। দেশের শ্যামল সম্পদের সঙ্গে এখানে আছে লােহা, ম্যাঙ্গানিজ, বক্সাইট, সােনা ও অন্যান্য প্রয়ােজনীয় ধাতুর সমদ্ধ খনি।

প্রাচীন সভ্যতাগর্বী এই দেশে বহু, জাতি ও উপজাতির বাস এবং এর জনসংখ্যা ৬৮৪ কোটির বেশি। দেশের রাজধানী দিল্লিতে দেড় কোটি মানুষের বাস। লক্ষাধিক জন অধ্যুষিত অন্যান্য বৃহৎ শহরের মধ্যে কলিকাতা, বােম্বাই, মাদ্রাজ, হায়দরাবাদ, আহমেদাবাদ, ব্যাঙ্গালাের, কানপুর, পুনে উল্লেখ্য।

ভারতের ইতিহাস

মূল নিবন্ধ ভারতের ইতিহাস প্রসঙ্গে

দুই শতকেরও বেশি সময় ভারত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের নির্যাতন সহ্য করেছে। ভারতীয় জনগণ তাদের বিরুদ্ধে কখনই সংগ্রাম ত্যাগ করে নি। ঔপনিবেশিক শােষণমুক্ত ভারতীয় জনগণ এখন প্রগতি ও গণতন্ত্র এবং নিজ দেশের শুভ ভবিষ্যতের জন্য সংগ্রামে ক্রমেই এগিয়ে চলেছে।

সাত দশকের অধিক কাল ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছে। ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাফল্য অর্জিত হয়েছে এবং সে তার সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক অবস্থান সংহত করেছে।

ভারতের অর্থনীতি

ভারতের অর্থনীতি একটি উন্নয়নশীল বাজার অর্থনীতি হিসাবে চিহ্নিত। ভারতের অর্থনীতি ক্রয় ক্ষমতায় বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এবং পঞ্চম বৃহত্তম নামমাত্র (ইংরেজি: Nominal) অর্থনীতি।

কংগ্রেস ৫৬৫টি প্রিন্সলি স্টেটকে ১৯৪৭ সালে দখল করে নেয়। ব্রিটিশরাও ভারতের বিভিন্ন অংশ গত দুশো বছরে দখল করেছিল। ফলে ব্রিটিশদের সাথে কংগ্রেসের পার্থক্য কোথায়? ১৯৪৭ সাল থেকে ভারত নয়া উপনিবেশিক। ভারতের বুর্জোয়ারা কেন ট্রেন ইঞ্জিন, বিমান ইঞ্জিনসহ অধিক ভারী শিল্পে যাচ্ছে না? কারণ ওরা এখনো সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর অনুগত, তাদের সাথে দ্বন্দ্বে যাবে না।

ভারতে অনেক প্রদেশে কেন প্রাচীন পদ্ধতির কৃষি ব্যবস্থা এখনো বিরাজমান? কৃষক, মূলত পুরুষ কৃষক আত্মহত্যা করে তার পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে; পুরুষ হয়েছে, অথচ পরিবারে খাবার-কাপড় দিতে পারে না। মরদ হয়েছে, অথচ পোষার ক্ষমতা নাই। এই চিন্তাটা থেকেই আত্মহত্যা, এটা সামন্তবাদ

যে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলে, ক্ষেতে সেচ দেয় তা সম্ভবত চীনা ও উশা ব্রান্ডের নিজস্ব উৎপাদন হলেও, পূর্ব ভারতে তো সেগুলো আমদানি করাই। ফলে ভারতের বিশাল অংশে থাকল প্রাচীন সেচ পদ্ধতি। চীনের সাথে ভারতের সম্পর্ক শেষ হলে, বিদেশি ডিজেল ইঞ্জিন না আসলে, বাকি থাকে প্রাচীন সেচসহ পরিবহন পদ্ধতি; ওটাও সামন্তবাদ। ফলে ভারতে কাঠামোটা এখনো সামন্তবাদী, যদিও খোলসটা পুঁজিবাদী।

আরো পড়ুন:  অসমে বাঙালির শরশয্যা

মিশ্র অর্থনীতি

সদ্যস্বাধীন দেশগুলির মধ্যে ভারতই প্রথম দেশ যে তার অর্থনীতিতে পরিকল্পনার উপাদান যােজন করেছে। তার ভারী শিল্পের প্রধান শাখাগুলি, পরিবহণ ও যােগাযােগ, ব্যাঙ্ক ও ইনসিওরেন্স কোম্পানিগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত। ভাষান্তরে অর্থনীতির মূল উপাদানগুলি সরকারী নিয়ন্ত্রণাধীন।

সােভিয়েত সাহায্যে নির্মিত ও নির্মিতব্য বহুসংখ্যক প্রকল্প রাষ্ট্রীয় খাতের বুনিয়াদস্বরূপ। এগুলিতে বার্ষিক ১ কোটি টন পর্যন্ত ইস্পাত, ১ কোটি ২০ লক্ষ টনের বেশি তৈলসামগ্রী উৎপন্ন হয়।

রাষ্ট্রীয় খাতের অনুরূপ ব্যক্তিগত খাতও ভারতের অর্থনীতিতে গুরত্বপূর্ণ অবস্থানে আবদ্ধ। স্বাধীনতার পর দেশের শিল্পায়নের প্রক্রিয়ায় এখানকার শিল্পােৎপাদন ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মােট জাতীয় উৎপাদের হিসাবে ভারত বিশ্বের ১২টি শিল্পােন্নত দেশের অন্তর্ভুক্ত।

অথচ তার শিল্প ও কৃষির বৃদ্ধিহার আজও জনসংখ্যা বৃদ্ধিহারের পশ্চাদবর্তী। জনসংখ্যার দরিদ্র অংশের জীবিকার মানােন্নয়নের জন্য সামাজিক-অর্থনৈতিক পুনর্গঠন সম্প্রসারণ, কৃষিসংস্কার, সমবায়ী ব্যাঙ্কসমূহ গঠন, অর্থনীতির রাষ্ট্রীয় খাতের মজবুতি ও অন্যান্য ব্যবস্থার চূড়ান্ত ভূমিকা অনস্বীকার্য।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রায় ১০০টি বৃহৎ শিল্পসংস্থা (কর্মীসংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ) নিয়েই ভারতের বিকাশমান আধুনিক শিল্পের মূল অংশটি গঠিত। দেশের মােট শিল্পােৎপাদনে রাষ্ট্রীয় খাতের অংশভাগ প্রায় অর্ধেক। নিরন্তর বর্ধমান এই রাষ্ট্রীয় খাতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ধাতু, তৈল, রাসায়নিক, ইঞ্জিনিয়রিং এবং দেশের শিল্পয়ননিয়ন্তা অন্যান্য প্রধান শিল্পাবলী। কিন্তু উৎপন্ন পণ্য দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে না পারায় ভারতে নতুন নতুন বৃহৎ প্রকল্পের নির্মাণ চলছে।

ভারতের প্রথম লৌহ ও ইস্পাত প্রকল্প হলো ভিল্লাই কারখানা (মধ্যপ্রদেশ)। সােভিয়েত সাহায্যে নির্মিত এই কারখানাটির বার্ষিক উৎপাদন পরবর্তীকালে ৭০ লক্ষ টনে পৌঁছবে। ররকেলা (উড়িষ্যা) ও দুর্গাপুরে (পশ্চিমবঙ্গ) ধাতুশিল্প কারখানাগুলি নির্মিত হয়েছে। বকারাে লৌহ ও ইস্পাত কারখানাটিও সােভিয়েত সাহায্যে নির্মিত এবং এটি প্রথম পর্যায়ে বছরে ১৫ লক্ষ টন ইস্পাত উৎপাদন করছে। কারখানাটি সম্পূর্ণ হলে এতে বছরে ১ কোটি টন পর্যন্ত ইস্পাত উৎপাদিত হবে।

দেশের বিকাশমান ইঞ্জিনিয়রিং শিল্প ক্রমেই অধিক পরিমাণে মেশিনপত্র ও কারখানাদির অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করছে। নতুন নতুন মেশিন টুলস ও বিদ্যুৎ-ইঞ্জিনিয়রিং কারখানা তৈরি ও চালু হচ্ছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখ্য: ভারী মেশিন তৈরির কারখানা (রাঁচি), খনিযন্ত্র তৈরি কারখানা (দুর্গাপুর), ভারী বৈদ্যুতিক সাজসরঞ্জাম কারখানা (হরিদ্বার)। কলিকাতার অদূরবর্তী চিত্তরঞ্জন (রেলইঞ্জিন নির্মাণ) ও বিশাখপট্টম (জাহাজ নির্মাণ) গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকেন্দ্র। কলিকাতা, বােম্বাই ও মাদ্রাজে মোটর যােজন কারখানা এবং ব্যাঙ্গালােরের বিমান কারখানাও প্রসঙ্গত উল্লেখ্য। কলিকাতার নিকটস্থ সিন্ধ্রিতে এশিয়ার (সােভিয়েত ইউনিয়নের এশীয় অঞ্চল বাদে) বৃহত্তম নাইট্রোজেন সার কারখানা অবস্থিত।

আরো পড়ুন:  ইরান সাম্রাজ্যবাদ দ্বারা নিপীড়িত পুঁজিবাদ অনুসারী দেশ

ভারতের কৃষি অর্থনীতি

তুলাশস্য উৎপাদনে পুঁজিবাদী বিশ্বে ভারতের স্থান প্রথম (বার্ষিক প্রায় ৮০০ কোটি মিটার)। বােম্বাই ও আহমেদাবাদ বৃহত্তম বস্ত্রশিল্পকেন্দ্র। কলিকাতার অদূরস্থ শতাধিক পাটকলে বছরে ১০ লক্ষ টনের বেশি চট, ক্যানভাস, দড়ি ও অন্যান্য সামগ্রী উৎপন্ন হয়।

ভারতের খাদ্যশিল্প বছরে ৩০ লক্ষ টনের বেশি চিনি, লক্ষ লক্ষ টন তামাক, চা, উদ্ভিজ্জ তৈল ও অন্যান্য সামগ্রী উৎপাদন করে। কৃষিজাত কাঁচামাল ব্যবহারকারী কুটিরশিল্পগুলি থেকেও প্রচুর পরিমাণ ভােগ্যপণ্য উৎপন্ন হয়।

যে-কৃষিতে ভারতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থ মানুষ কর্মরত তা বছরে জাতীয় আয়ের ৫০ শতাংশ অর্জন করে। ‘সবুজ বিপ্লব’ নামাঙ্কিত গ্রামাঞ্চলে সংগঠিত কৃষি-টেকনিকাল ব্যবস্থাদির ফলে বড় জমিদার ও ধনী কৃষকদের খামারে খাদ্যোৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ধান ভারতের প্রধান খাদ্যফসল। গম, জোয়ার এবং ভুট্টাও সেখানে চাষ করা হয়। ভারতের শিল্পলগ্ন ফসলের মধ্যে তুলা, পাট, চা, তামাক, আখ ও চীনা বাদাম উল্লেখ্য।

ভারতে গরুর সংখ্যা পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম (২০ কোটি), কিন্তু উৎপাদনশীলতার হিসাবে এগুলি পৃথিবীর নিকৃষ্টতমদের অন্তর্গত।

উত্তর-পর্ব অঞ্চলে (পশ্চিম বঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যা) প্রচুর পরিমাণে ধান, আখ ও চা উৎপাদিত হয়; এসঙ্গে এটি দেশের কয়লা ও ধাতু শিল্পের কেন্দ্রস্থল। এখানকার ভারী ইঞ্জিনিয়রিং (কলিকাতা, রাঁচী) দ্রুত উন্নতিমুখী। উত্তরে কেন্দ্রীয় অঞ্চল (উত্তর প্রদেশ) ভারতের শস্যাগার (গম, ভুট্টা) স্বরূপ; তাছাড়া এখানে প্রচুর শিপলগ্ন ও তৈলােৎপাদী ফসল তােলা হয় এবং ভারী মেশিন নির্মাণ (হরিদ্বার) ও জলবিদ্যুৎ শিল্পও অবস্থিত। ভিলাই লৌহ ও ইস্পাত কারখানা এবং এর আনুষঙ্গিক সংস্থাগুলি মধ্যপ্রদেশের শিল্পসজ্জা হিসাবে চিহ্নিত; শস্য ও তুলা উৎপাদন এখানকার কৃষির উল্লেখ্য বৈশিষ্ট্য।

দক্ষিণ ভারত (অন্ধপ্রদেশ, মহীশুর, তামিলনাড়ু, কেরালা) ধান, তুলা ও তামাক চাষের গুরত্বপূর্ণ অঞ্চল, এখানে বহুল পরিমাণে চীনা বাদাম ও অন্যান্য তৈলােৎপাদী ফসল উৎপন্ন হয়।

এই অঞ্চলে নারিকেল, চা, গােলমরিচ, কফি ও বাগানের অন্যান্য ফসল জন্মে। এখানে ঐতিহ্যবাহী শিল্প (তুলাবস্ত্র, চামড়া, চা-প্রসেসিং) তথা নতুন নতন শিল্পশাখার উন্নয়ন সহজলক্ষ্য। শেষােক্তদের মধ্যে উল্লেখ্য; মেশিন নির্মাণ (মাদ্রাজ, বাঙ্গালাের), ধাতু তৈরি, তৈলশােধন (বিশাখাপট্টম, কোচিন)।

ভারতের পশ্চিম অঞ্চল (মহারাষ্ট্র, গুজরাট) তুলা ও চীনা বাদাম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এখানকার বাগান (পাতি লেবু, কলা, আম) এবং পশুপালন উন্নত মানের। বস্ত্রশিল্পই (বােম্বাই) এই অঞ্চলের সর্বপ্রধান শিল্প। তৈল-নিষ্কাশন (আংক্লেশ্বর), তৈলশােধন ও তৈল-রসায়ন এবং মেশিন নির্মাণও (বােম্বাই) বিকশিত হচ্ছে। উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল (পাঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, জম্ম, এবং কাশ্মীর, দিল্লির কেন্দ্রশাসিত এলাকা) পশুপালনের (গরু, ভেড়া, উট) তথা গম, ভুট্টা ও তুলা উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র। এই অঞ্চলের শহরগুলিতে তুলাবস্ত্র, রেশম ও পশম উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি অবস্থিত। এখানকার মেশিন টুলস উৎপাদন ও ইঞ্জিনিয়রিংয়ের অন্যান্য শাখা-প্রশাখা (দিল্লি) এবং রাসায়নিক (আকরিক সার) ও সিমেন্ট শিল্পগুলি এখন বিকাশমান। ৪০০ হাজার কিলােওয়াট শক্তি সম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রানাপ্রতাপসাগরে অবস্থিত।

আরো পড়ুন:  সীমান্ত হত্যা হচ্ছে সাড়ে চার দশকে দেড় হাজারের অধিক নিরপরাধ বাংলাদেশী হত্যা

জনসংখ্যার উপাত্ত, ভাষা ও ধর্ম

ভারতীয় জনসংখ্যার মাত্র এক-পঞ্চমাংশ শহরবাসী। শহর ও গ্রামের সেবাব্যবস্থা ও সুবিধাদি এবং স্বাস্থ্যলগ্ন পরিস্থিতির এখন উন্নতি ঘটছে। মহামারী নির্মূল করার ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে এবং রােগীর সংখ্যা কমছে। দেশের জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান অংশ স্বাক্ষর হয়ে উঠছে। ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলি বর্ধমানসংখ্যক জাতীয় বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। জাতীয় বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির বিকাশ ঘটছে।

ভারতের প্রধান প্রধান জাতিসত্তার বসতিস্থল অনুসারে দেশের রাজ্যসীমান্ত পুনর্গঠিত হয়েছিল। রাজ্যগুলি ও তদপেক্ষা বড় অঞ্চল নিজ নিজ প্রাকৃতিক অবস্থা এবং জনসংখ্যা, উন্নয়নের মান ও অর্থনীতির কাঠামাে দ্বারা চিহ্নিত।

ভারতের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির ভবিষ্যৎ উন্নতি দেশে প্রবর্তিত সামাজিক-অর্থনৈতিক সংস্কারের গভীরতা সাধন এবং তার অনুসৃত  শান্তিপূর্ণ বৈদেশিক নীতির সঙ্গে অচ্ছেদ্যভাবে জড়িত।

সােভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পাদিত মৈত্রী ও সহযােগিতার চুক্তি ভারতে সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রগতির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উল্লেখ্য সাহায্য দিচ্ছে। লেওনিদ ব্রেজনেভের কথায়: ‘সােভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত অকপট বন্ধুত্বের ও বহুমুখী সহযােগিতার সম্পর্ককে সােভিয়েত জনগণ উচ্চ মূল্য দেয়। আমাদের দু’দেশের স্বার্থানুকূল এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যেমন এশিয়া তেমনি সমগ্র দুনিয়ায় আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানের উপর কল্যাণকর প্রভাব বিস্তার করে।’

ভূগোল ইতিহাসের ভিত্তি। একটি দেশের ভৌগোলিক অবস্থান, পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, জলবায়ু সামগ্রিকভাবে সেই দেশের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রভাব বিস্তার করে। ভারতের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যাবলী খুবই আকর্ষণীয়। পাহাড়, পর্বত, জঙ্গল, নদী, সমুদ্র- সব কিছু মিলে ভারতের নিজস্ব ভৌগোলিক অস্তিত্ব রয়েছে। ভৌগোলিক বৈচিত্র্য বিবেচনায় এবং বিশালতার কারণে ভারতকে উপমহাদেশ বলা হয়। পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত বিন্ধ্য পর্বতমালা ভারতকে সুস্পষ্ট দুটি ভাগে ভাগ করেছে- উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারত। হিমালয় পর্বত ভারতের ইতিহাসের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে। হিমালয়, বিন্ধ্য পর্বতমালা, ভূ-প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, নদ-নদী ইত্যাদির প্রভাবে প্রাচীন যুগ থেকেই ভারতের ইতিহাস স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়েছে। 

Leave a Comment

error: Content is protected !!