সুবোধ ঘোষ একজন বাংলা কথাসাহিত্যিক

সুবোধ ঘোষ (জন্ম: ১৯০৯ – মৃত্যু: ১০ মার্চ, ১৯৮০) একজন বাংলা কথাসাহিত্যিক। বাংলাভাষী পাঠকসমাজে সুবোধ ঘোষ এখনও অনেক প্রাসঙ্গিক। বিশেষ করে তার সৃষ্ট ‘অযান্ত্রিক’ এবং ‘ফসিল’-এর মতো দুটি গল্পের জন্য বাংলা সাহিত্যের যুগান্তকারী স্থান অধিকার করে আছেন।

জন্ম ও শৈশব:

সুবোধ ঘোষের জন্ম বিহারের (বর্তমান ঝাড়খণ্ডের) হাজারিবাগের এক নিম্নমধ্যবিত্ত কায়স্থ পরিবারে, ১৯০৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। চার পুরুষের বসতি তৎকালীন ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে হলেও তার বাবা ছেলেকে আশৈশব বড়ো করে তুলেছিলেন হাজারিবাগে। জেলখানার অধস্তন চাকুরে শ্রী সতীশচন্দ্র ঘোষ ও শ্রীমতী কনকলতাদেবীর সাত সন্তানের মধ্যে সুবোধ ঘোষ দ্বিতীয়।

শিক্ষাজীবন:

ছেলেবেলা থেকেই পড়াশোনায় তুখোড় ছিলেন সুবোধ; ক্লাসে একবার ডাবল প্রমোশনও পেয়েছিলেন। হাজারিবাগ জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ভর্তি হন হাজারিবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন জ্যেষ্ঠভ্রাতা সুধীর ঘোষ। তার উপার্জিত সামান্য অর্থে যখন সংসার চলছেই না তখন পড়ালেখার পাট চুকিয়ে সুবোধ ঘোষকে জীবিকার সন্ধানে বেরিয়ে পড়তে হয়। তখন তার বয়স মাত্র পনের বছর।

প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে লেখাপড়ার ইতি ঘটলেও সুবোধ ঘোষ জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিচিত্র উৎস থেকে জীবনের পাঠ গ্রহণ করেছিলেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গ-সান্নিধ্য অর্জন করে তিনি অভিজ্ঞতালোককে করে তুলেছেন প্রসারিত। কৈশোরে সান্নিধ্য পেয়েছেন কবি কামিনী রায়ের, তাঁর কাছ থেকে ‘গুঞ্জন’ ও ‘অশোক সঙ্গীত’ উপহার পেয়েছেন। তাঁর স্বকণ্ঠ আবৃত্তি শুনেছেন। এছাড়াও সেন্ট কলম্বাস কলেজের ছাত্র থাকাকালেই তিনি বিশিষ্ট দার্শনিক ও গবেষক মহেশ ঘোষের ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করতেন।

সংস্কৃত ও বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য, ইতিহাস-দর্শন-ধর্মতত্ত্ব-প্রত্নতত্ত্ব-পুরাতত্ত্ব-নৃতত্ত্ব, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, জ্যোতিষশাস্ত্র এমনকি সামরিক বিদ্যায়ও তিনি জ্ঞান অর্জন করেছেন। বন্ধু রমেশচন্দ্রের পিতা নৃতাত্ত্বিক শরৎচন্দ্র রায়ের সান্নিধ্যলাভ ও তাঁর গবেষণাকর্ম পাঠ করে ধারণা নিয়েছেন ভারতবর্ষের আদিবাসী জনজাতি সম্পর্কে; জিওলজিক্যাল সার্ভের প্রথম ভারতীয় ডিরেক্টর পিতামহের বন্ধু রায়বাহাদুর পার্বতীলাল দত্তের কাছে। শুনেছেন নদী-পাহাড়-সমুদ্র-পাথর-ফসিলের গল্প ।

কর্মজীবন:

প্রথম চাকরি কিশোর সুবোধ ঘোষের জন্য ছিল রীতিমতো ভয়াবহ ও ঝুঁকিপূর্ণ। চাকরিটি ছিলো হাজারিবাগ দেহাতি বস্তিতে মড়ক প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার কাজ। মাস ছয়েক দক্ষতার সঙ্গে এই কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে হাজারিবাগ মিউনিসিপ্যালিটি একটি প্রশংসাপত্রও দিয়েছিল। তাঁর দ্বিতীয় চাকরি ছিল বাস কন্ডাক্টরের। হাজারিবাগ লালমোটর কোম্পানির এই বাস রাত্রিবেলা অরণ্যপথে ছুটত ছোটনাগপুর মালভূমির ওপর দিয়ে। কিছুদিন ট্রাক চালক হিসেবে কাজ করেছে। সুবোধ। এসব অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছিলেন কালোত্তীর্ণ গল্প অযান্ত্রিক।

অভাব গল্পকার সুবোধ ঘোষকে বিচিত্র সব পেশায় নিয়োজিত হতে বাধ্য করে। কখনো মালগুদামের স্টোরকিপার ও সুপারভাইজার, কখনো শিকারিদলের সসঙ্গী আবার কখনো বা সার্কাসদলের কর্মী। একবার লুঙ্গি, ফতুয়া আর গৈরিক পোশাক গায়ে চড়িয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন।

আরো পড়ুন:  বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ শতকের বাংলা সাহিত্যে কথাসাহিত্যিক

বেনারসে যাওয়ার পথে বিনাটিকিটে ট্রেনে চড়ার অপরাধে একরাত্রি হাজতেও কাটাতে হয়েছিল। প্রত্যাবর্তনের টিকিটের পয়সা অবশ্য ঠিকই জুটিয়ে নিয়েছিলেন সুবোধ। এজন্য একদিনের জন্য নিতে হয়েছি সন্ন্যাসবেশ। গঙ্গায় স্নান সেরে মুণ্ডিত মস্তকে তিলক কেটে তিন ঘণ্টা বটগাছের তলা ধ্যানের ভান করে ধুতির আঁচল পেতে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।

জীবিকার তাগিদে সার্কাসের লটবহর টানার কাজ করার সময় রপ্ত করেছিলেন। ট্রাপিজ’, ‘হরাইজন্টালবারের মতো সাকাসের কয়েকটি খেলাও। এরপর চলে যা মুম্বাই। সেখানে নিযুক্ত হলেন টিকা দেওয়ার কাজে। এবার অবশ্য মড়ক লাগা বস্তিবাসীদের নয়, হজ্জযাত্রীদের টিকা দেওয়ার চাকরি নিয়ে চড়ে বসলেন এডেনগামী জাহাজে। হেঁয়ালি কর্মদেবতা তাঁকে এই সময়ে নিয়োজিত করলেন আরও বিচিত্র তিনটি কাজে : প্রথমে মিউনিসিপ্যালিটির রাস্তা ঝাঁট দেওয়া, দ্বিতীয় পর্যায়ে বেকারির ব্যবসা এবং তৃতীয় পর্যায়ে ওভারসিয়ারের কাজ। আত্মজীবনীমূলক রচনা ‘সেদিনে আলোছায়া’য় সুবোধ ঘোষ অকপটে বিবৃত করেছেন সেই দিনগুলোর কথা—

সামান্য রকমের একটা আর্থিক রোজগার ঘটিয়ে দিতে পারে, এরকম একটি জীবিকার আশাও যে কী ভয়ানক কুহকিনী হতে পারে, সেটা ত্রিশ বছর বয়সে কোঠায় পা দেবার আগেই হাড়ে হাড়ে বুঝতে হয়েছিল।

সংগ্রামমুখর জীবনে বহু চড়াই উতৎরাই পেরিয়ে বিশ শতকের তিরিশের দশকে কলকাতায় এসে থিতু হবার চেষ্টায় শ্রী গৌরাঙ্গ প্রেসে প্রথমে প্রুফ দেখার কাজ ও পরে সেখানে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন সুবোধ ঘোষ। ১৯৩৫-৩৬ সালের দিকে আরও কিছু বিচিত্র পেশার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। দুপয়সা রোজগারের জন্য। কখনো টিউশনি, কখনো চায়ের দোকান, হোটেল ব্যবসা, মুরগি পালন এমনকি মিষ্টিমাখনের দোকান খুলে বসেছিলেন এই কালজয়ী গল্পকার।

রোজ সকালে হেঁটে এক উকিলবাবুর ছেলেদের পড়াতে যেতেন। মাইনে ছিল দশ টাকা, একদিন কামাই হওয়ায় সম্রান্ত উকিল তা থেকে কেটে রেখেছিলেন পাঁচ আনা। অবশেষে জীবনের মোড় ঘুরে যায় আনন্দবাজার পত্রিকার চাকরির মাধ্যমে। গৌরাঙ্গ প্রেসের প্রুফরিডা থেকে নিয়তি তাঁকে টেনে নিয়ে যায় আনন্দবাজার পত্রিকার ‘রবিবাসরীয়’তে। ১৯৪৫ সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় সাংবাদিক হিসাবে যোগদানই তাঁর লেখক হয়ে ওঠা পথ সুগম করে দেয়। একটানা চল্লিশ বছর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিবেদন, কলম, সম্পাদকীয় লিখেছেন, পত্রিকার জন্য গল্প, কবিতা, প্রবন্ধের পরিবর্তন বা পরিমার্জন করেছেন, এবং এ-পত্রিকা অবলম্বন করে শুরু করেছেন লেখকজীবন।

সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ:

আনন্দবাজার পত্রিকার কতিপয় সাহিত্যপ্রেমী প্রতিমাসের দুটি রবিবার কোনোও এক সদস্যের গৃহে একত্র হতেন ‘অনামীসঙ্গে’র ব্যানারে। সাহিত্যের আলোচনা ও নিজ নিজ লেখা পাঠ করতেন এর সদস্যরা। অরুণ মিত্র, স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য, বিনয় ঘোষ, পুলকেশ দে সরকার, মন্মথ সান্যাল প্রমুখ ছিলেন এই সঙ্ঘে উল্লেখযোগ্য সদস্য। এখানে সুবোধ ঘোষের আবির্ভাব আকস্মিক। তিনি সভায় আসতেন মূলত পেটপূজার টানে; অপেক্ষা করতেন কখন জিলিপি, মিষ্টি আসবে। দরজার কাছাকাছি বসতেন, যাতে খেয়ে চটজলদি কেটে পড়া যায়। বিষয়টি ধরা পড়ে গেল স্বর্ণকমলবাবুর কড়া নজরদারিতে। কিছু লিখে না আনলে সভায় সুবোধ ঘোষের আসা প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়। কি আর করা! ঠিক করলেন, পরের আসরে লেখা নিয়েই তবে আসবেন। সকাল দশটা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত অনেক খাটাখাটুনির পর লিখে ফেললেন ‘অযান্ত্রিক’ ও ‘ফসিল। প্রথম গল্প লেখার এই অভিজ্ঞতার কথা সুবোধ ঘোষ বলেছেন :

আরো পড়ুন:  নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন কথাসাহিত্যিক, গবেষক ও সমালোচক

সন্ধ্যা বেলাতে বৈঠক, আমি দুপুর বেলাতে অর্থাৎ বিকেল হবার আগেই মরিয়া হয়ে সাত তাড়াতাড়ি গল্প দুটি লিখে ফেলেছিলাম। আশা ছিল, এইবার অনামীদের কেউ আর আমার সম্পর্কে রীতি ভঙ্গের অভিযোগ আনতে পারবেন না । কিন্তু একটুও আশা করিনি যে বন্ধু অনামীরা আমার লেখা ওই দুই গল্প শুনে প্রীত হতে পারেন। অনামী বন্ধুদের আন্তরিক আনন্দের প্রকাশ ও উৎসাহবাণী আমার সাহিত্যিক কৃতার্থতার প্রথম মাঙ্গলিক ধান দূর্বা।

সেই শুরু। অতঃপর লিখেছেন একটানা। কোনো মতো কিংবা পথের তাবেদারি না করে তিনি শিল্পের তাগিদে লিখেছেন। সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত জগত্তারিণী পুরস্কার।

রাজনীতি-সংশ্লিষ্টতা:

সুবোধ ঘোষ ছিলেন কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ১৯৪২ সালের আগস্ট বিপ্লবে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য যেমন কারাবরণ করেছেন তেমনি আবার মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের প্রতিও ছিলেন অনুরক্ত। ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কংগ্রেস সাহিত্য সংঘের তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট দাঙ্গাবিধ্বস্ত নোয়াখালীতে যান গান্ধীজির সফরসঙ্গী হয়ে।

বিবাহ ও সংসারজীবন:

১৯৩৯ সালে সুবোধ ঘোষের বিয়ে হয় পূর্ণিয়ার ডাকসাইটে জেলার মুকুন্দবিহারী বসুর প্রথমা কন্যা শ্রীমতী মুকুলরাণীর সঙ্গে। বিবাহবাসরে পাত্রের হাতে ভাঙা ও মরচেধরা সুটকেস দেখে কন্যা বেশ ঘাবড়ে গেলেও দাম্পত্যজীবনে তার প্রভাব পড়েনি। সংসারে টানাটানি থাকলেও টান পড়েনি দাম্পত্যসম্পর্কে, বেশ সুখেরই ছিল তাঁদের যুগলজীবন। সুবোধ-মুকুলরাণীর সংসারযাত্রা শুরু হয়েছিল কাঁকুলিয়ার ভাড়া বাড়িতে। ১৯৫৬ সালে অবশ্য পাতিপুকুরে আরেকটি বাড়ি ভাড়া নেন তিনি। স্বামীর অর্থকষ্টের কথা উপলদ্ধি করে কোনো কিছুই আব্দার করতেন না শিক্ষিত-বিচক্ষণ মুকুলরাণী।

ভাগ্যদেবতা মুখ ফিরে তাকালে কেবল একটি জিনিসই চেয়েছিলেন, একটুখানি মাথা গোঁজার ঠাই। নিজেদের বাড়ি ছিল না; তাই স্ত্রীর এমন চাওয়া অল্পদিনের মধ্যেই পূরণ করেছিলেন সুবোধ ঘোষ। ১৯৫৯-৬০ সালে একটি বাড়ি নির্মাণ করে নাম দেন ‘মাঙ্গলিক’, এই নামে সুবোধ ঘোষের একটি বিখ্যাত গল্পও আছে। পাতিপুকুর-লেকটাউনের বাড়িটি এখনো বর্তমান। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এই বাড়িতেই কাটিয়েছেন সুবোধ ঘোষ। মুকুলরাণীর কোলজুড়ে এসেছিল পুত্র উত্তম, গৌতম, সপ্তম এবং কন্যা পরমাপ্রীতি।

আরো পড়ুন:  সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী শ্রেণিসংগ্রামের লড়াইয়ের পথের পথিকদের আলোকবর্তিকা

মানবপ্রীতি:

সুবোধ ঘোষের বিচিত্র সব কাহিনী সংগ্রহ করেছিলেন আনন্দ পাবলিশার্সের অন্যতম কর্ণধার বাদল বসু; যেসবের মাধ্যমে সংবেদনশীল ও মানবতাবাদী সুবোধ ঘোযে পরিচয় মেলে। একদিন এক ঠগবাজকে সুবোধ ঘোষ পয়সা দিয়ে সাহায্য করলে কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেছিলেন, “জানেন সুবোধদা, এই লোকটির কতজন পিতা আছে জানি না, তবে প্রায় এক বছর ধরে দেখছি, এর পিতৃবিয়োগঘটিত অশৌচ আয় শ্রাদ্ধপালন শেষ হচ্ছে না।’ তখন সুবোধ ঘোষ হেসে বলেছিলেন, কিন্তু ও যে সত্যিকারের অভাবী, দীন-দরিদ্র সেটা কিন্তু প্রতারণা নয়, বিলক্ষণ সত্য। একবার কলেজ পড়ুয়া একটি অসুস্থ মেয়ে পরীক্ষার ফি-এর জন্য সাহায্য চেয়ে সুবোদ ঘোষকে পত্র লিখেছিলেন। পঞ্চাশ টাকা মানি অর্ডার করে পাঠিয়েছিলেন হৃদয়বান এই গল্পকার। বাদল বসু লিখেছেন—মনে পড়ে একসময় কুণ্ঠিত কোনো অপরিচিত ব্যক্তি হয়তো ভাঁজ করা একটি চিঠি খাম থেকে বার করে আমার হাতে তুলে দিলেন। চিঠিটি আমাদের কাউকে লেখা নয়, লেখা সুবোধ ঘোষকেই, পত্রলেখক তার কন্যার বিয়েতে কিছু সাহায্য চান। কিংবা পুত্রের লেখাপড়া বা বই কেনা বাবদ কিছু চিঠি এক কোণে আমাকে সম্বোধন করে সুবোধ ঘোষ জানাচ্ছেন, পত্রবাহককে যেন নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ দেওয়া হয়। আমরা তৎক্ষণাৎ সেই আদেশ শিরোধার্য করে নিতাম। একবার নয়, অনেকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’ সুবোধ ঘোষ নিজে সর্বদা অর্থকষ্টে থাকলেও অসহায়-সম্বলহীনদের পাশে দাঁড়াতে দ্বিধা করতেন না। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী লিখেছেন- ‘ব্যক্তিগতভাবে কত মানুষের যে কত উপকার তিনি করেছে, অনেকেই তার খবর রাখেন না।…যাদের উপকার করেছেন, তাঁদের অনেকেই তা অনাত্মীয় । অথচ তারাও ছিলেন তাঁর ঘরের মানুষ, একান্ত আপনজন।

রচনাপঞ্জি ছােটগল্প সংকলন ফসিল (১৯৪০) পরশুরামের কুঠার (১৯৪০) শুল্কাভিসার (১৯৪৪) গ্রাম-যমুনা (১৯৪৪) মণিকর্ণিকা (১৯৪৭) ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র:

১. ভাষাপ্রকাশ নির্বাচিত শ্রেষ্ট গল্পমালা , সুবোধ ঘোষ, শ্রেষ্ট গল্প; ভাষাপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ  ফেব্রুয়ারি, ২০১৬; পৃ: ২৪৯-২৫২।

Leave a Comment

error: Content is protected !!