প্রকল্প কাকে বলে?

প্রকল্প হচ্ছে কোনো সমস্যার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সমাধানের মধ্যে কোনো একটিকে নির্বাচন করে প্রমাণ ও পরীক্ষার দিকে অগ্রসর হওয়ার পদ্ধতিকে প্রকল্প বা আন্দাজের ভিত্তিতে অগ্রসর হওয়া (ইংরেজি: Hypothesis) বলে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রকল্পের একটি প্রয়োজনীয় স্তর আছে। মঙ্গল গ্রহে জীবন আছে কিনা এ প্রশ্নের একাধিক উত্তর সম্ভব। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ ও তথ্যের ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট জবাব বাছাই করে এক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিককে অগ্রসর হতে হয়।

একটি প্রকল্পে সাধারণত সরাসরিভাবে প্রমাণিত বা অপ্রমাণিত হয় কোন কিছু থাকে না। প্রকল্প প্রমাণের পদ্ধতিটি এইরূপ যদি গৃহীত আন্দাজ বা প্রকল্পটি সঠিক হয় তা হলে বাস্তব ক্ষেত্রে একটি বিশেষ পরিফল দৃষ্ট বা সংঘটিত হবে। অনুমিত পরিফল বাস্তবে সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং গৃহীত প্রকল্পটি সত্য বলে প্রমাণিত হলো।

একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রধান স্তরগুলিকে নিম্নোক্তভাবে নির্দিষ্ট করা যায়। কোনো সমস্যার বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রথমে পর্যবেক্ষণ দিয়ে শুরু হয়। এ-টি প্রথম স্তর। পর্যবেক্ষণে সংগৃহীত তথ্যাদির বিশ্লেষণে যদি একাধিক সমাধানের সম্ভাবনা দেখা যায়, তবে একটি সমাধান বাছাই করা হয়। এটি গবেষণার দ্বিতীয় বা প্রকল্পের স্তর। একাধিক সম্ভাব্য সমাধানের মধ্যে একটি সমাধানের নির্বাচনের প্রধান শর্ত হচ্ছে নির্বাচিত প্রকল্পটিকে সর্বোত্তম বিবেচনা করতে হবে। প্রচলিত বৈজ্ঞানিক বিধানসমূহের বিরোধী কোনো প্রকল্পকে গ্রহণ করা যাবে না। প্রকল্পটি প্রমাণযোগ্য হতে হবে।

নির্বাচিত প্রকল্পের ভিত্তিতে গবেষণার প্রমাণ ও প্রয়োগ অর্থাৎ তৃতীয় স্তর শুরু হয়। প্রমাণ ও প্রয়োগে নির্বাচিত প্রকল্পটি সঠিক দেখা গেলে প্রকল্পটি প্রকল্প বা আন্দাজ হিসেবে না থেকে সঠিক সমাধান বলে বিবেচিত হয়। অপরদিকে প্রমাণ ও প্রয়োগে নির্বাচিত প্রকল্প নাকচ হলে গবেষণাকে নতুন আর একটি প্রকল্প গ্রহণ করে প্রয়োগ ও প্রমাণের অধ্যায় পুণরায় শুরু করতে হয়। নির্বাচিত প্রকল্পকে কার্য প্রকল্প বলেও অভিহিত করা হয়।

তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ২০৩।

আরো পড়ুন:  ইতিহাসের দর্শন হচ্ছে মানুষের আর্থনীতিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিকাশের অন্তর্নিহিত আলোচনা

Leave a Comment

error: Content is protected !!