বহুবর্ষজীবী একুইলেজিয়া ফুলের বাণিজ্যিকভাবে চাষ ও পরিচর্যা পদ্ধতি

শীতকালের মৌসুমী ফুলের মধ্যে বিচিত্র বর্ণের সুন্দর ফুল ও আকর্ষণীয় পাতার জন্য ইহার কদর অনেক বেশি। বহুবর্ষজীবী হলেও মৌসুমী ফুল হিসেবে বাগানে রোপন করা হয় । গাছের উচ্চতা ৬০-১০০ সেঃ মিঃ হয়ে থাকে, বেশ কষ্টসহিষ্ণু এবং বর্ডারে লাগানোর উপযোগী। হালকা উর্বর দো-আঁশ মাটি একুইলেজিয়া ফুল চাষের বিশেষ উপযোগী।

একুইলেজিয়া জাত

বহুবর্ষজীবী এ গাছটির একটি জাতই সচরাচর আমাদের দেশে দেখা যায়। তবে গাছটির গুরুত্ব বিবেচনায় অনুসন্ধান করলে হয়তো একাধিক জাতও পাওয়া যেতে পারে। তিনটি পত্রক ও গভীর খাঁজকাটা গেটপত্র সম্বলিত গাছটি বেশ সুন্দর।

একুইলেজিয়া জমি প্রস্তুত:

চন্দ্রমল্লিকার অনুরূপ পদ্ধতিতে একুইলেজিয়া চাষের বীজতলা ও চারা লাগানোর জমি প্রস্তুত করে নিতে হবে। জমির আকার প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট বড় হতে পারে। জমি প্রস্তুতের কাজটি ফেব্রুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহে করতে হবে।

চারা তৈরী ও লাগানো:

একইলেজিয়া গাছের বীজ সহজে অঙ্কুরোদমের জন্যে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। বীজ বপনের আগে বীজগুলিকে পানি ছিটিয়ে একটি ভিজা কাপড়ের দ্বারা পুটলি করে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখার পর বীজ তলায় বপন করতে হবে।

ক. ভালোভাবে প্রস্তুত করা বীজতলায় মার্চ মাসের প্রথম দিকে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা ভিজানো বীজ বপন করতে হবে।

খ. বীজ বপন করার পর মাটি সমান করে দিতে হবে এবং হালকা ভাবে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।

গ. পশু-পাখি যাতে মাটি নাড়িয়ে চারার ক্ষতি না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

ঘ. প্রতিটি চারায় ৩ বা ৪টি পাতা গজালে চারাগুলি ৩০-৪৫ সেঃ মিঃ দূরে দূরে রোপন করতে হবে। চারা লাগানোর সময় বর্ডারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে লাগাতে হবে।

পরিচর্যা ও যত্ন:

একুইলেজিয়া ফুল চাষে কতিপয় পরিচর্যা ও যত্ন নিতে হবে ।

ক. গাছের চারা ২০-২৫ সেঃ মিঃ উচু হলে গাছ যাতে হেলে না পড়ে সে জন্যে ছোট খুটি দিয়ে তার সাথে গাছকে বেঁধে দিতে হবে।

খ. গাছের গোড়া বেশি শুকিয়ে গেলে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে, তবে পানি যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

গ. চারা লাগানোর পর থেকে মাঝে মাঝে পরিমাণ মতো পচা গোবর সার ও সামান্য রাসায়নিক সার প্রয়োগ করলে গাছের বৃদ্ধি ভালো হবে।

ঘ. গাছের গোড়ার আগাছা সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে এবং রোগ বালাই যাতে ক্ষতি করতে না পারে তার জন্যে তা দেখার সাথে সাথেই চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

ফুল সংগ্রহ:

সুদৃশ্য খাজকাটা সামান্য পাতাসহ ফুল সংগ্রহ করতে হবে। নিজস্ব ব্যবহারের জন্যে হলে সরাসরি গৃহশয্যায় ব্যবহার করা যাবে। আর বাজারে বিক্রির জন্যে হলে চাহিদানুযায়ী ফুল সংগ্রহ পূর্বক বাজারে পাঠাতে হবে।

তথ্যসূত্র:

১. সিরাজুল করিম আধুনিক পদ্ধতিতে ফুলের চাষ প্রথম প্রকাশ ২০০১ ঢাকা, গতিধারা, পৃষ্ঠা ১০০-১০১। আইএসবিএন 984-461-128-7

আরো পড়ুন:  পদ্ম ফুল চাষ করবার ঘরোয়া পদ্ধতি এবং যত্ন করবার সহজ উপায়

Leave a Comment

error: Content is protected !!