নদীবিধৌত নেত্রকোনা জেলায় নদনদী রয়েছে প্রায় ৮৫টি। এই নদীগুলো নিয়েই জেলার নদনদীর নামের তালিকা। সবগুলো নদীর ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রায় ৫টি নদী। প্রধান নদীগুলো হচ্ছে আত্রাখালি নদী, উপদাখালী নদী, কর্ণ-বালজা নদী, কালাপানিঝরা নদী, ধনু নদী এবং সোমেশ্বরী নদী।
নেত্রকোনা জেলার অনেকগুলো নদনদী ইতিমধ্যে শক্তি হারিয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া এই নদ-নদীগুলো হচ্ছে:
- আত্রাখালি নদী,
- উপদাখালী নদী,
- কাওনাল নদী,
- কাকুরিয়াকন্দা নদী,
- কানসা নদী,
- কানাই নদী,
- কালিয়ারা নদী,
- কালীহর নদী,
- কর্ণ-বালজা নদী,
- কালাপানিঝরা নদী,
- কৃষ্ণাখালী নদী,
- গুনাই নদী,
- ঘাগরালী নদী,
- জলকান্দি নদী,
- জল শিমুলকান্দি নদী,
- জারিয়া নদী,
- জিডাই নদী,
- তেওড়াখালি নদী,
- ধলাই বা ধুলিয়া নদী,
- ধনু নদী,
- ধোপকলা নদী,
- ধুপিখালি নদী,
- নিতাই নদী,
- বাউরী নদী,
- ছিলা নদী,
- তুষাই নদী,
- বল নদী,
- বলী নদী,
- বালই নদী,
- বেদুরি নদী,
- বানোয়ারী নদী,
- বারুনী নদী,
- বালিয়া নদী,
- বাঁকহারা নদী,
- বিষনাই বা বিসনাই নদী,
- বেতাই নদী,
- মগড়া নদী,
- মরা সুরমা নদী,
- ছেলা নদী,
- নয়া নদী,
- পাতকুড়া নদী,
- পিয়াইন নদী,
- রাজেশ্বরী নদী,
- পাটেশ্বরী নদী,
- ফুলেশ্বরী নদী,
- পিয়াইন নদী (সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনা),
- লাউয়াড়ি নদী,
- সতি নদী,
- সুরিয়া নদী,
- সাইডুলি নদী,
- সোনাই নদী,
- সাইদুলি নদী,
- সিনাই নদী,
- সোমেশ্বরী নদী,
- সোমেশ্বরী নদী (ধর্মপাশা) প্রভৃতি।
মগড়া নদী
নেত্রকোনা শহরের বুক চিরে প্রবাহিত একটি নদীর নাম ‘মগড়া’। মূলত এ নদীকে কেন্দ্র করেই ব্রিটিশরা এক সময়ের ‘কালীগঞ্জ’ বাজারে প্রতিষ্ঠা করেছিল নেত্রকোনা শহর। অতীতে মগড়া ছিল বেসামাল ও উন্মাতাল। কোন বাধাই মানত না। আঞ্চলিক ভাষায় এরকম বদমেজাজি বা বিধ্বংসী চরিত্রটিকেই বলা হয় ‘মগড়া’। কিন্তু আজ আর মগড়ার সে স্বভাব নেই। উৎসমুখ ভরাট এবং পূর্বধলার ত্রিমোহনীতে স্লুইস গেট নির্মাণের কারণে বহু কিংবদন্তির মগড়া আজ প্রায় মরা, স্রোতহারা। কোথায়ও কোথায়ও ফসলের মাঠ। দখলদাররা দিন দিন দখল করে নিচ্ছে এর বিস্তীর্ণ এলাকা।
ধুলিয়া নদী
নেত্রকোনা শহরের উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ‘ধুলিয়া’ বা ‘ধলাই’ নদী। স্থানীয় ভাষায় ‘ধলা’ শব্দটি ‘স্বচ্ছ’ বা ‘সাদা’ শব্দের প্রতিশব্দ। প্রচলিত আছে, ধলাইয়ের পানি এতই স্বচ্ছ ও টলটলে ছিল — যা রোদের আলোতে ‘সাদা’ মনে হতো। ঝিকমিক করত। আর এ কারণেই নদীটির নাম হয়েছিল ‘ধলাই’। এককালের বেগবতী ধলাইয়ের কোনো কোনো অংশে এখন পায়ের পাতাও ভেজানো যায় না।
ধনু নদী
জেলার সবচেয়ে প্রশস্ত ও খরস্রোতা নদীর নাম ‘ধনু’ (ধেনু)। বিশ্বখ্যাত ‘মৈমনসিংহ গীতিকার’ মহুয়া পালায় এ নদীর বর্ণনা আছে। এটি সুরমার একটি ধারা। হাওড় উপজেলা মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরির ওপর দিয়ে প্রবাহিত এ নৌপথকে কেন্দ্র করেই ভাটি অঞ্চলের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন এলাকার নৌপথ গড়ে ওঠেছিল। কিন্তু কালের আবর্তে ধনুও আজ নাব্য সঙ্কটে ভুগছে। নদীর বুকে জেগে ওঠেছে অসংখ্য চর। শুষ্ক মৌসুমে এসব চরে কার্গো, লঞ্চ, ট্রলার আটকে যায়। ফলে ব্যাহত হয় নৌ-পরিবহন।
সোমেশ্বরী নদী
সোমেশ্বরী নদী (ইংরেজি: Someshwary River) বাংলাদেশ ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলা এবং মেঘালয়ের একটি নদী। নদীটির বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য ৫০ কিলোমিটার, গড় প্রশস্ততা ১১৪ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক সোমেশ্বরী নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ৮৫।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।