হেঁচকি বা হিক্কা সারানোর জন্য কয়েকটি ভেষজ উপায়ের বর্ণনা

হেঁচকি বা হিক্কা (Hiccup) একটি অনৈচ্ছিক ক্রিয়া। এটি সারানোর জন্য ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি মানলেই ঠিক হয়ে যায়।

১. আমলকীর: আমলকীর রস আন্দাজ ১ চামচ অথবা শুকনো আমলকী ভিজানো জলে ১০ থেকে ২০ ফোঁটা মধু ও ২ থেকে ১ গ্রেণ পিপুলের গুড়া মিশিয়ে খাওয়ার কথা বলা আছে চরকীয় চিকিৎসা পদ্ধতিতে।

২. গাব: গাবের শুষ্ক ফুলচূর্ণ ১ গ্লেণ মাত্রায় একটু মধু মিশিয়ে শিশুকে চাটালে হিক্কা প্রশমিত হয়। এটা সপ্তদশ শতকের বঙ্গসেনের পরীক্ষিত যোগ।

৩. পেঁয়াজ: হাতের কাছে কিছু নেই সেক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ ফোঁটা পেঁয়াজের রস একটু, জলে মিশিয়ে ২ থেকে ৩ বারে একটু একটু করে খাওয়ালে ওটা বন্ধ হয়।

৪. আদা: ছাগলের দুধে অল্প আদার রস মিশিয়ে খেলে ওটা থেমে যায়। আজ হয়তো অনেকেই মনে করবেন এ তো সেই পুরোনো কাসুন্দি। হ্যাঁ, এর জৌলস নেই সত্যি, কিন্তু বিজ্ঞান আছে তাই তো কাসুন্দি ঘাঁটা।

৫. শ্বেত চন্দন:  চালধোয়া জলের সঙ্গে শ্বেত চন্দন ঘষা মিশিয়ে ঐ জল দু’ ঘণ্টা অন্তর একটু একটু করে খাওয়ালে হেঁচকি বা হিক্কা বন্ধ হয়। এমন কি দুধে ঘষে নস্য নিলেও হিক্কা বন্ধ হয়; এক্ষেত্রে অবশ্য ছাগদগ্ধ হলে ভালো হয়।  

৬. ছাতিম: পিত্তানুগত হিক্কাশ্বাসের এক্ষেত্রে কফের আধিক্য থাকবেই, কিন্তু পিত্তের লক্ষণও থাকবে, সেক্ষেত্রে ছাতিম ছালের রস আধ চা-চামচ অর্থাৎ ৩o থেকে ৪o ফোঁটা সিকি কাপ দুধে মিশিয়ে খেতে হবে এক্ষেত্রে  লক্ষ্য রাখতে হবে ৭ থেকে ৮ চা-চামচের কম না হবে। ছাল কাঁচা সংগ্রহ না হলে ছালচূর্ণ দেড় থেকে দুই গ্রাম দুধ ও পিপুল চূর্ণ মধ্যে মিলিয়ে খেতে হয়। পিপুল চূর্ণে ২ থেকে ৩  রতি  বা ১৫০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম নিলেই হবে।

৭. মূলা: খাদ্যনালীতে কোনো উত্তেজক দ্রব্যের সংস্পর্শ হলেই হিক্কার উদ্রেক হয়, যাঁদের হৃদ দৌর্বল্য থাকে, তাঁদের এই হিক্কার সঙ্গে শ্বাসেরও টান দেখা দেয়, যদিও সেটা সাময়িক। এই সময় একটু শুকনো মূলার ক্বাথ করে চুমুক দিলে ওটা কমে যাবে; শুকনো মূল পরিমাণ ৫ থেকে ৭ গ্রাম, জল ২ কাপ, সিদ্ধ হওয়ার পর থাকবে এক কাপ। সেটা ছেঁকে নিয়ে ৫ থেকে ৬ বারে একটু একটু করে খেতে হবে।

আরো পড়ুন:  পায়ের সমস্যা সমাধানে পাঁচটি ঘরোয়া চিকিৎসা

তথ্যসূত্র

১. আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য: ‘চিরঞ্জীব বনৌষধি‘ খন্ড ১ ও ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৪।

Leave a Comment

error: Content is protected !!