আশঁফল বা কাঠলিচু এটি বেশ বড় ধরণের গাছ। গাছটি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ফুট উঁচু হয়। এদের পাতা ২ ইঞ্চি থেকে ১ ফুট পর্যন্ত হয়। আর পাতা চওড়া হয় আধ ইঞ্চি থেকে আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত। বোটা পাতার তুলনায় বেশ ছোট হয়। ফুলের মুকুল খুবই নরম। ফুলের রং সাদা হলেও হলুদের আভা থাকে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা, তুষার ইত্যাদি অঞ্চল এই গাছের জন্য উপযুক্ত না।
নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের এর ফলন ভালো হয়। বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে; তবে বেলে মাটিতে এই প্রজাতির বৃদ্ধি ও ফলন উভয়ই ভালো। পূর্ব এশিয়া যেমন চীন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন দেশে এই প্রজাতি জন্মে। এই গাছের ফল, পাতা ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়।
রোগ নিরাময়ে আঁশফল বা কাঠলিচু-এর ব্যবহার:
১. জ্বর সারাতে: অবিরাম জ্বর হলে কাঠলিচু বা আশঁফলের খোসা ভালভাবে বেটে চার গ্রাম আধ গ্লাস ঠাণ্ডা পানির সাথে সকালে একবার খেলে নিশ্চিত উপকার হয়।
২. ক্রিমি সমস্যায়: পেটে ক্রিমি হলে কাটা আঁশফল বেটে তিন থেকে চার গ্রাম পরিমাণ এক কাপ সামান্য গরম পানির সাথে সকালে খালিপেটে খেলে ক্রিমি মৃত অথবা জীবন্ত অবস্থায় পায়খানার সাথে বেরিয়ে যায়।
৩. দুর্বলভাব সারাতে: শরীর দুর্বল অনুভব করলে আঁশফলের শুকনা খোসা ভালভাবে গুঁড়া করে পাঁচ গ্রাম করে সকালে একগ্লাস গরুর দুধের সাথে খেলে দুর্বল শরীরে শক্তি ফিরে আসে।
৪. পাতলা পায়খানা সারাতে: উদরাময় বা পাতলা পায়খানা হলে যে কোন কারণে পানির মতো বারবার পায়খানা হলে কাঁচা আঁশফলের রস ১০ থেকে ১৫ মিলিলিটার খেলে উদরাময় রোগ ভাল হয়।
৫. বিষক্রিয়া নষ্ট করতে: এর ফল বেশ সুস্বাদু, রসালো, মিষ্টি। টকজাতীয় স্যুপ রান্নার জন্য এই ফল ব্যবহার করা হয়। সাপ বা কোন কীটের বিষ নষ্ট করতে এর ফল বেশ উপকারী।
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্রঃ
১. মাওলানা জাকির হোসাইন আজাদী: ‘গাছ-গাছড়ায় হাজার গুণ ও লতাপাতায় রোগ মুক্তি, সত্যকথা প্রকাশ, বাংলাবাজার, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ২০০৯, পৃষ্ঠা, ১৬৭-১৭০।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinkum
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।