মারলিজা এশিয়ার দেশসমূহে জন্মানো বিরল প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ

ভেষজ উদ্ভিদ

মারলিয়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Alangium chinense (Lour.) Harms in Ber. Deuts. Bot. Ges. 15: 24 (1897). সমনাম: Stylidium chinense Lour. (1790), Marlea begonifolia Roxb. (1814). ইংরেজি নাম: Marlia. স্থানীয় নাম: মারলিজা গাছ।

মারলিজা-এর বর্ণনা:

ধূসর বাকলযুক্ত ক্ষুদ্র পর্ণমোচী বৃক্ষ। পত্র সরল, একান্তর, সবৃন্তক, ডিম্বাকার বা ডিম্বাকৃতি-তাম্বুলাকার, উভয় পৃষ্ঠ রোমশ। পুষ্পবিন্যাস কাক্ষিক সাইম। পুষ্প সাদা, গর্ভশীর্ষপুষ্পী। বৃত্যংশ ৭-৮টি, মুক্ত বা নিম্নাংশে কিছুটা যমক। দল ৭-৮টি, রৈখিক, মুক্ত বা নিম্নাংশে যমক, সংকীর্ণ, প্রান্তস্পর্শী। পুংকেশর ৭-৮টি দলের নিম্নাংশে কিছুটা লগ্ন, পরাগধানী রৈখিক। গর্ভপত্র ১-৩টি, ১-৩ প্রকোষ্ঠী গর্ভাশয়ে সংযুক্ত, ডিম্বক প্রতি প্রকোষ্ঠে ১টি, গর্ভদণ্ড দীর্ঘ, গর্ভমুণ্ড কিছুটা খন্ডিত। ফল ১-২ বীজযুক্ত বেরী। বীজ আয়তাকার, চাপা।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২n = ৬৬ (Kumar and Subramaniam, 1986)

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার: সমতল ভূমি এবং পাহাড়ী অরণ্য। ফুল ও ফল ধারণ এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা।

বিস্তৃতি: গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আফ্রিকা, ভারত, নেপাল, ভুটান, পূর্ব চীন, মায়ানমার এবং মালয়েশিয়া। বাংলাদেশে ইহা চট্টগ্রাম ও গাজীপুর জেলা থেকে নথিভূক্ত করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক ব্যবহা ও গুরুত্ব:

গাছের পাতা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়, মাঝে মাঝে কাঠও ব্যবহৃত হয়। ঔষধি গাছ হিসেবে চীনে বহুকাল যাবত ব্যবহৃত হয়ে আসছে।ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধে ব্যবহৃত ৫০ টি মৌলিক ঔষধগুলির মধ্যে একটি। ভেষজ ওষুধে এটি সাপের বা পতঙ্গের কামড় , রক্তসঞ্চালন, গর্ভনিরোধ, হেমোস্টেসিস, অসাড়তা, বিষ, বাত ও ক্ষতের জন্য ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৬ষ্ঠ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) মারলিজা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের প্রজাতিটির আবাসস্থল নিধন হওয়ায় সচরাচর দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি বিরল হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে মারলিজা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এক্স-সিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা উচিত।

আরো পড়ুন:  ঝাউয়া বাংলাদেশের পার্বত্যঞ্চলে জন্মানো উপকারী বৃক্ষ

তথ্যসূত্র:

১. এম এ হাসান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৬ষ্ঠ, পৃষ্ঠা ৮৬-৮৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Denis.prévôt

Leave a Comment

error: Content is protected !!