পাতা খোঁই বা হরিনহারা বাংলাদেশে জন্মানো ভেষজ উদ্ভিদ

বৃক্ষ

পাতা খোঁই

বৈজ্ঞানিক নাম: Bridelia stipularis (L.) Blume, Bijdr.: 597 (1826). সমনাম: Clutia stipularis L. (1767). ইংরেজি নাম: Climbing Bridelia. স্থানীয় নাম: পাত খোঁই, হরিনহারা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Malpighiales. পরিবার: Phyllanthaceae. গণ: Bridelia  প্রজাতির নাম: Bridelia stipularis

ভূমিকা: পাতা খোঁই বা হরিনহারা (বৈজ্ঞানিক নাম: Bridelia stipularis) Phyllanthaceae পরিবারের এক প্রকারের উদ্ভিদ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশে জন্মে। এই প্রজাতিটি ভেষজ গুণসম্পন্ন।

পাতা খোঁই বা হরিনহারা-এর বর্ণনা:

বৃহৎ কাষ্ঠল আরোহী, বাকল সাদা, ক্ষুদ্র শাখা ঘন ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত, বায়ুর উপবৃত্তাকার। পত্র বৃহৎ, ৫-১২ x ২-৭ সেমি, উপবৃত্তাকার দীর্ঘায়ত বা বিডিম্বাকার, স্থূলগ্র বা গোলাকার, উপরের পৃষ্ঠ রোমশ বিহীন, নিচের পৃষ্ঠ ঘন কোমল রোমাবৃত, প্রতি অর্ধাংশে শিরা ৮-১৫টি, বাদামী রোমযুক্ত, নিচের পৃষ্ঠের গৌণ শিরা স্পষ্ট, উপপত্র ত্রিকোণাকার, দীর্ঘাগ্র, ৬-১২ মিমি লম্বা, কখনও স্থায়ী।

পুষ্পবিন্যাস স্পাইক, পত্রবিহীন বা ৩-৮ সেমি লম্বা পত্রযুক্ত। পুষ্প আড়াআড়ি ০.৫০.৬ সেমি, পুংপুষ্প অবৃন্তক, স্ত্রীপুষ্প সবৃন্তক, বৃন্ত-১-২ মিমি লম্বা, বৃতি খন্ড দীর্ঘা, ৩-৪ মিমি, সামান্য রোমশ। ফল ডুপ, ১-৩ সেমি লম্বা, লাল, পরিপক্ক অবস্থায় নীলাভ-কালো, প্রশস্ত উপবৃত্তাকার, বৃহৎ বৃতির ওপর সন্নিবিষ্ট, ২ বীজী।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৬ (Kumar and Subramaniam, 1986).

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার: পতিত জমি, সূর্যকরোজ্জ্বল ভূখন্ড। ফুল ও ফল ধারণ সময় নভেম্বর-মার্চ।

বিস্তৃতি: ভারত ও মায়ানমার। বাংলাদেশের প্রায় সব অংশেই জন্মে।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:

ফল ভক্ষনীয়, আমলকির (Phyllanthus enbelica) ন্যায় স্বাদযুক্ত। কাষ্ঠ ঝুড়ির হাতল তৈরিতে ব্যবহৃত (Kanjilal et | al., 1940)।[১]

পাতা খোঁই বা হরিনহারা-এর ভেষজ গুণাগুণ:

উদ্দীপনা ব্যবহার করা হয়। বাচ্চাদের কাশি, জ্বর এবং হাঁপানির জন্য ফোড়া এবং মুখের ঘা সারাতে গারগল দেওয়া হয়। জন্ডিসের চিকিৎষার জন্য তাজা কোমল পাতা ব্যবহার করা হয়; গর্ভাবস্থার কারণে রক্তশূন্যতা কমাতে।

আরো পড়ুন:  কুরিলা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় জন্মানো ভেষজ ছোট বৃক্ষ

পাতার গুঁড়া ত্বকের সাদা দাগ দূর করতে প্রয়োগ করা হয়। শিকড়গুলি প্রদাহ হ্রাস করার জন্য ওষুধ হিসাবে এবং অ্যাসিরিঞ্জেন্ট এন্টিডিয়ারিয়াল হিসাবে ব্যবহৃত হয়; ফল বমি বমি ভাব দূর করতে অ্যান্টিটক্সিক হিসাবে ব্যবহৃত হয়।[২]

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পাত খোঁই বা হরিনহারা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে পাত খোঁই বা হরিনহারা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪১০-৪১১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

২. Ajit Ampalakkad, “Bridelia stipularis – Climbing Bridelia”, flowersofindia.net, URL: https://www.flowersofindia.net /catalog/slides/Climbing%20Bridelia.html

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!