হাড়জোড়া লতা উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের ভেষজ প্রজাতি

লতা

হাড়জোড়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Cissus quadrangularis L., Syst. Nat. ed. 12 (2): 124 (1767). সমনাম: Vitis quadrangularis Wall. ex Wight & Arn. (1834), Cissus edulis Dalz. (1857). ইংরেজি নাম: Veldt Grape, Devil’s Backbone, adamant creeper, bone setter, edible stemmed vine, square-stalked vine, winged treebine. স্থানীয় নাম: হাড়জোড়া লতা, হাড়ভাঙ্গা-লতা, হারেঙ্গা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Vitales. পরিবার: Vitaceae. গণ: Cissus প্রজাতির নাম: Cissus quadrangularis

ভূমিকা: হাড়জোড়া লতা (বৈজ্ঞানিক নাম: Cissus quadrangularis) এক প্রকারের ভেষজ লতা। বাংলাদেশসহ উষ্ণাঞ্চল ও এশিয়ার দেশে জন্মে।

হাড়জোড়া লতা-এর বর্ণনা:

বৃহৎ শাখান্বিত, বীরুৎ সদৃশ আরোহী, সরল, সরু, পত্র-প্রতিমুখ আকর্ষীযুক্ত। কান্ড রসালো, চারকোণাকার, ৪ পর্বযুক্ত, পর্বে সংকুচিত, দ্ব্যগ্র শাখান্বিত।

পত্র সরল, ৩-৬ X ২-৭ সেমি, রসালো বা নরম, বৃক্কাকার, ৩-৫ খন্ডিত, অনুদর, স্থূলা, উভয় গাত্র রোমহীন, পত্রবৃন্ত ১.৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা, উপপত্র জোড়াবদ্ধ, প্রশস্ত ডিম্বাকার, রসালো, সবুজ, ক্ষণস্থায়ী।

সাইম আম্বেল সদৃশ, কাক্ষিক, রোমহীন, মঞ্জরীদন্ড ২.৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা। পুষ্প ৪-অংশক, আড়াআড়ি ৫ মিমি, লালাভ। বৃতি পেয়ালাকার, কর্তিতাগ্র। দল খন্ডক ৪টি, ডিম্বাকার, প্রায় ২ মিমি লম্বা।

পুংকেশর ৪টি, পুংদন্ড সরু। গর্ভাশয় ২-কোষী, গর্ভদন্ড সরল, সরু, চাকতি খাড়া, ৪-খন্ডিত, গর্ভাশয়ের গোড়ালগ্ন। ফল বেরী, গোলাকার, পাকলে লাল, ১-বীজী।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৪, ৪৪-৫৩ (Kumar and Subramaniam, 1986).

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

প্রাথমিক বনাঞ্চল এবং গ্রাম্য ঝোপ জঙ্গলে ও বৃষ্টিপাতযুক্ত এলাকায় জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ ও এপ্রিল-অক্টোবর। বংশ বিস্তার হয় বীজ এবং মৌল কান্ড দ্বারা।

হাড়জোড়া লতা-এর বিস্তৃতি:

উষ্ণমন্ডলীয় আফ্রিকা এবং আরব, মাদাগাসকার, ভারত, শ্রীলংকা এবং জাভা। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা এবং সুন্দরবনে বিস্তৃত।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:

স্কার্ভি এবং অনিয়মিত রজ:স্রাবে নির্যাস ব্যবহৃত, এবং কান ও নাকের সমস্যায় ব্যবহৃত। হাড়-ভাঙ্গা চিকিৎসায় এর সুখ্যাতি C162 (Hassan and Khan, 1986; Yusuf et al., 1994).

আরো পড়ুন:  লজ্জাবতী গাছের ভেষজ উপকারিতা

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: সবুজ কচি কান্ড সবজি হিসেবে খাওয়া হয় (Rahman et al., 2003).

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) হাড়জোড়া লতা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, উদ্ভিদের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণ বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে হাড়জোড়া লতা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. এম আতিকুর রহমান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৫০৮-৫০৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!