ভূমিকা: পাহাড়ি ঝুনঝুনা (বৈজ্ঞানিক নাম: Crotalaria tetragona) বাংলাদেশের পার্বত্যঞ্চলের জেলাগুলোতে জন্মে। এছাড়াও ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।
পাহাড়ি ঝুনঝুনা-এর বর্ণনা:
দৃঢ়, বৃহৎ বীরুৎ, ২ মিটার পর্যন্ত লম্বা, অপরিণত শাখা প্রশাখা ৪-কোণাকার, চাপা রোমশ। পত্র সরল, বল্লমাকার থেকে রেখাকার, দীর্ঘা, ৮-২৫ X ১-৩ সেমি,
উভয় গাত্র রোমশ, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র থেকে দীর্ঘাগ্র, গোড়া গোলাকার বা স্থূলাগ্র, পত্রবৃন্ত ৪-৬ মিমি লম্বা, উপপত্র সূত্রাকার, ৪-৬ মিমি লম্বা।
পুষ্পবিন্যাস রেসিম, শীর্ষক এবং কখনো পত্র-প্রতিমুখ, দীর্ঘায়িত, হালকা, ১৫-২৫ সেমি লম্বা, ঝুলন্ত, মঞ্জরীপত্র রেখাকার-বল্লমাকার, প্রায় ৫ মিমি লম্বা, মঞ্জরীপত্রিকা সূত্রাকার, প্রায় ৪ মিমি লম্বা, পুষ্পবৃন্তে প্রবেশিত, প্রবেশ বিবিধ, পুষ্পবৃন্ত প্রায় ১৫ মিমি লম্বা।
বৃতি প্রায় ২ সেমি লম্বা, গভীর ওষ্ঠাধরাকৃতি, গোড়ার নিকট খন্ডিত, মখমলীয়, ছড়ানো শক্ত রোমযুক্ত, উপরের ২টি দন্তক আয়তাকার, সূক্ষ্মাগ্র।
দলমন্ডল হলুদ, ধ্বজকের ফলক প্রায় বর্তুলাকার, প্রায় ২.০ সেমি চওড়া, বাহিরে হালকা এবং সূক্ষ্ম রোমযুক্ত, দণ্ড প্রায় ৩ মিমি লম্বা, পক্ষ ডিম্বাকার-আয়তাকার, প্রায় ১৯ x ৮ মিমি;
তরীদল প্রায় ২.২ X ১.৩ সেমি, নিম্নের তৃতীয়াংশ বাহিরে বক্র, লম্বা, সামান্য অভ্যন্তরে বক্র, পাকানো চঞ্চযুক্ত, শীর্ষ ভোঁতা। গর্ভাশয় প্রায় বৃন্তহীন, আয়তাকার, প্রায় ৮ X ৩ মিমি, রোমশ, ডিম্বক ২২ টি।
ফল পড, বৃন্তহীন, মূলকাকার-আয়তাকার, ৪.০-৪.৫ X ১.২-১.৬ সেমি, মখমলীয়, শক্ত রোমযুক্ত। বীজ অসম-পার্শ্বীয়, হৃৎপিন্ডাকার, ৪.৫-৫.০ X ৩.৫-৪.০ মিমি, সরু প্রান্ত গভীরভাবে অভ্যন্তরে বক্র, সুক্ষ্ম। প্যাপিলাযুক্ত, বাদামি বা গাঢ় বাদামি থেকে কালো।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২n = ১৬ (Kumar and Subramaniam, 1986).
আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:
মিশ্র পত্রঝরা ও পাহাড়ী চিরহরিৎ বনাঞ্চলের উন্মুক্ত এলাকায় জন্মে। ফল ও ফল ধারণ নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাস। বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে।
পাহাড়ি ঝুনঝুনা-এর বিস্তৃতি:
ভারত থেকে সমগ্র দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, চীনের উত্তরাংশ। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি জেলায় সহজলভ্য। ব্যবহার: অ্যালকালয়েড ইন্টিজেরিমিন এবং ট্রাইকোডেসমিন বহন করে ।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পাহাড়ি ঝুনঝুনা প্রজাতিটির সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। অরণ্য উচ্ছেদের জন্য বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে পাহাড়ি ঝুনঝুনা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির আবাসস্থল সংরক্ষণ প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র:
১. মোহাম্মদ ইউসূফ (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৮ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪৪-৪৫ আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Krishan Lal
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।