আমি হাত দেখতে জানি, আমি দেরি করে আসার পার্থিব কারণ জানি না
শুধু জানি, তুমি ঘন চুলের মতো গাঢ় আকাশের খুব পাশে আঁকো এক লোহিত সূর্য,
ওখানে মেয়েরা মেঘ হয়ে পাখিদের খুব কাছে ভালোবাসার স্রোতে বেঁচে আছে।
মাঝে মাঝে ভালো লাগে তোমার অনাদরের ডাক,
সত্যজিতের সিনেমা খুঁজতে গিয়ে দেখেছি তোমার সজীব চোখে
ঘুঙুর পরা বাঙলার ছোট ছোট নদীরা ভাসছে সবুজ কুয়াশায়;
মুঠোফোনে জানাতে পারিনি তুমি অবিভাজ্য, এবং
আমার কাম্য রক্তমাখা শীর্তাত আগুন তুমি,
অন্ধকারে তুমি সুপ্ত শাড়ির চন্দন গোলাপ,
কেউ তোমাকে নিয়ে লাল-নীল কবিতা লেখেনি,
অথচ তুমি কাব্যকালের গনগনে আলোয় অমূল্য বিপন্ন রেখা,
তোমার পথের যাদুময়ি সুর পৃথিবীকে জানালো
আমাদের আকাশে অজস্র ঘটনায় বেঁচে আছে হুইটম্যানের ঘাস,
সুন্দর মানুষেরাই শুধু জীবনের বেদিতে শিল্প বানায়;
আলো জ্বালে শ্রমিকের রক্তমাখা সাম্যের আঙিনায়;
যারা শিল্পী ছিল সদ্য ফোঁটা ফুলের পাপড়ির;
তারা হারিয়ে যায় দাহকালের গানের পরে।
আমার দেখতে ইচ্ছে করে জাগরণের গানের পুরোনো ভিডিও
উড়ন্ত পাখির ডানায় আলো ঝিকমিক উড়ন্ত রোদ্দুর,
বাসস্টপে দাঁড়িয়ে শুনতে ইচ্ছে করে তোমার বাজানো গিটারের সুর,
আমি দেখি কবিতার মতো সুরেরও প্রেমে পড়ে আধুনিক তরুণীরা,
অথচ দু-একজন উপযাচক তরুণ কবি হাহাকার করে,
সিনেমার ধারাবাহিক দৃশ্যাবলি আমাকে দেখায় উদাসী জীবন,
পুরোনো দাবার চাল, খেলায় পরাজয়, রাজ্য জয়,
রাজকন্যার হাতবদল, তার এক বুক মরোমরো দুঃখ
আর সত্যটুকু সেই শিল্প যা আমাদের কর্মে বেঁচে থাকে।
১০ জুলাই, ২০০৪, টি. এস. সি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।