সোরা আলু দক্ষিণ পাহাড়ি অঞ্চলে জন্মানো বিরুৎ

বিরুৎ

সোরা আলু

বৈজ্ঞানিক নাম: Dioscorea glabra Roxb., Fl. Ind. 3: 803 (1832). সমনাম: Dioscorea nummularia Roxb. (1832). ইংরেজি নাম: Spear-Leaved Yam। স্থানীয় নাম: সোরা জৈন্তা আলু, সোরা আলু। কুখুরআলু,কাকুরআলু।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Monocots. বর্গ: Dioscoreales. পরিবার: Dioscoreaceae. গণ: Dioscorea প্রজাতির নাম: Dioscorea glabra

_ভূমিকা: সোয়া আলু (বৈজ্ঞানিক নাম: Dioscorea glabra) এক প্রকারের ভেষজ উদ্ভিদ। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে পাহাড়ি অঞ্চলে জন্মে।

সোরা আলু-এর বর্ণনা:

প্যাচানো সরু বীরুৎ, স্ফীতকন্দ রসালো, সাদা, বেলনাকার, কান্ড দক্ষিণ দিকে পাকানো, রোমশবিহীন, মূলীয় অংশ কন্টকিত, পত্রকন্দ অনুপস্থিত। পত্র প্রতিমুখ, নিচের পত্র একান্তর, উপরের পত্র দীর্ঘায়ত থেকে উপবৃত্তাকার এবং সরু ডিম্বাকার, তীক্ষ্মগ্র বা দীর্ঘা, মূলীয় অংশ কর্তিতাগ্র বা তাম্বুলকার, ৬-১৪ x ৪-৭ সেমি, পাতলা বুনট, গৌণ শিরা অস্পষ্ট।

পুং পুষ্পবিন্যাস সরু অক্ষের ওপর ৪ থেকে ৭ টি স্পাইকের গুচ্ছ, অক্ষ এক বা জোড়াবাদ্ধ, ৯-৩১ সেমি লম্বা, স্পাইক সরু, প্রায় ২.৫ সেমি। পুষ্প ব্যবধান যুক্ত, অবৃন্তক, অর্ধ-গোলাকার, নিম্নাংশ স্ফীত, মঞ্জরীপত্র ক্ষুদ্র, বৃত্যংশ ও পাপড়ি ঋজু, বৃত্যংশ ত্রিকোণাকৃতি-ডিম্বাকার, ১.২-১.৬ X ১.০-১.২ মিমি। প্রান্ত বাদামী, পাপড়ি বল্লমাকার, ১.৩-১.৫ x ০.৭-০.৯ মিমি, ঘন বুনট, পরাগধানী প্রায় ০.৩ মিমি, পুংদন্ডের মতো দীর্ঘ। স্ত্রী পুষ্পবিন্যাস স্পাইক, ৯-৩১ সেমি লম্বা, একল বা জোড়া। পুংপুষ্প স্ত্রীপুষ্পের ন্যায়, গর্ভদন্ড অত্যন্ত খাটো (প্রায় ০.২ মিমি)।

ক্রোমোসোম সংখ্যা : 2n = ৪০ (Kumar and | Subramaniam, 1986)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

লম্বা তরু, পাহাড়ী ঝোপ, সাধারণত শুষ্ক পরিবেশেই ভাল জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ সেপ্টেম্বর ডিসেম্বর মাস। স্ফীতকন্দ দ্বারা বংশ বিস্তার হয়।

সোরা আলু-এর বিস্তৃতি:

ভারত (হিমালয়-সিমলা থেকে সিকিম), মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় ভাল জন্মে।

ব্যবহার: স্ফীতকন্দ আহার্য (Rahman et al., 2001) । জাতিতাত্বিক ব্যবহার: স্ফীতকন্দ আদিবাসীরা খাদ্যরূপে গ্রহণ করে।

আরো পড়ুন:  বন শুলফা গুল্ম-এর সাতটি ভেষজ গুণাগুণ

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) সোরা আলু প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, উদ্ভিদের আবাসস্থান ধবংসের কারণ বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে সোরা আলু সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি রক্ষার জন্য আবাসস্থল সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. এম আতিকুর রহমান ও এস সি দাস (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩১১-৩১২। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!