জালুইযমুনা নদী বা জালুই-যমুনা নদী (ইংরেজি: Jalui Jamuna River) বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১২-১৩ কিলোমিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। নদীটিতে জোয়ার ভাঁটার প্রভাব থাকে না। জালুইযমুনা নদী মূলত নাগরী বা নাগর নদীর উপনদী যা নাগরী নদীর বাম তীরে এসে মিলিত হয়েছে।
জালুইযমুনা নদীর প্রবাহ
জালুইযমুনা নদী নদীটি ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার ১ নং গেদুরা ইউনিয়নের মেদনীসাগর ও বনগাঁ অঞ্চলের জলাভূমি থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। তারপর নদীটি যামুন অঞ্চলের বিল এলাকা থেকে পানি সংগ্রহ করে ২ নং আমগাও ইউনিয়নের আমগাঁও ও নন্দগাঁও এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহপথ বের করে নিয়েছে।
আমগাঁও পেরিয়ে নদীটি ৩ নং বকুয়া ইউনিয়নে প্রবেশ করেছে। বকুয়া গ্রাম পেরিয়ে নদীটি তাঁতিহাট, নয়াটুলি পেরিয়ে ৪ নং ডাঙ্গিপাড়া ইউনিয়নের বুজরুক অঞ্চলে প্রবেশ করে রহমতপুর গ্রামে প্রবহমান সীমান্ত নদী নাগরীতে পতিত হয়েছে।
নাগরী নদীর পতিতমুখে বেড়িবাধ এলাকায় নদীটির মুখে একটি স্লুইসগেট নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়াও ২০২৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১০ কিলোমিটার এলাকা খননের মাধ্যমে এর প্রবাহপথ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে।
জালুইযমুনায় মানুষ যেন সারা বছর মাছ ধরতে পারে ও এর পানিতে কৃষি ফসল আবাদ করতে পারে সেই লক্ষে সরকার ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পূনঃখনন কাজ করেছেন। এতে করে জালুইযমুনার পার্শবর্তী এলাকার জনগণ প্লাবন থেকে রক্ষা পাবে এবং মৎস্য জীবিরা সারা বছর মাছ ধরে সংসার চালাতে পারবে ও কৃষিতে চাষ আবাদ করতে সুবিধা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রের বরাত দিয়ে সেই সময়ের একটি অনলাইন পত্রিকা জানায়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হরিপুর উপজেলায় জালুইযমুনা নদীর ১০ কিলোমিটার পূনঃখননের কাজ চলেছিল। তারা জানায়, যমুনার পূনঃখননের পরে উভয় পাড় সুরক্ষিত এবং লোক চলাচলের ব্যবস্থা এবং দুই পাশে ৩০ হাজার বর্গমিটার ঘাস ও ২ হাজার গাছ লাগানো হবে।
জালুইযমুনা নদী খননের জন্য প্রাক্কলিত মূল্য ছিল ২ কোটি ১২ হাজার ৭৭৭ দশমিক ২৪১ টাকা এবং চুক্তি মূল্য ১ কোটি ৮০ লক্ষ ১১ হাজার ৪৯৯ দশমিক ৫১৭ টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালিবাড়ী রোড, সিরাজগঞ্জ সদর মোঃ সামিমুর রহমানের সহযোগিতায় জালুইযমুনা পূনঃখনন কাজের বাস্তবায়ন করেছে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ড।[১]
আলোকচিত্রের ইতিহাস: রহমতপুর অঞ্চল থেকে জালুইযমুনা নদীর উপর নির্মিত এই স্লুইসগেটটির আলোকচিত্রটি তুলেছেন অনুপ সাদি ১৮ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে।
তথ্যসূত্র
১. স্থানীয় প্রতিনিধি, ২১ মে ২০১৯, “হরিপুরে পূনঃখননে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে যমুনার মরা খাল”, প্রতিদিনের-বিডি.কম, ইউআরএল: https://pratidiner-bd.com/news/13359/
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।