রোহিণা বা রোহণ (Soymida febrifuga) ভেষজটিকে নিয়ে যেসব যোগ ভারতের পশ্চিম বাংলা ও উড়িষ্যায় চলে আসছে, সেগুলির কয়েকটি সংগ্রহ করে এই প্রবন্ধে উল্লেখ করা হলও।
রোহিণা বা রোহণ-এর ভেষজ গুণ
১. অপুষ্টিতে: খায়-দায়, কখনো কখনো পাতলা দাস্ত হয়, দাস্তে আমও নেই, ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া করলেও স্বাস্থ্য হয় না, প্রায় দুর্বলতা অনুভব হয়, এমনটা সাধারণতঃ কৈশোরেই আসে; পড়াশুনা-খেলাধূলার এক অনাবিল আনন্দের জীবন, তারপরেও বাপ-মায়ের আপসোস যে ছেলেটা রোগা হয়ে যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে ৫ গ্রাম মাংস রোহিণী গাছের ছাল বা ত্বক নিয়ে ৩ কাপ জলে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে, ছেকে, সেটাকে দু’ভাগে ভাগ করে অর্ধেকটা সকালে ও অর্ধেকটা বিকালে খেতে হবে। একমাস ব্যবহার করলেই দুর্বলতা চলে গিয়ে শরীরে একটা ঔজ্জ্বল্য আসবে। ক্ষুধা ও দাস্ত স্বাভাবিক হবে।
২. স্বরভঙ্গে: যাঁদের গান বাজনা, যাত্রা-থিয়েটার করার অভ্যাস আছে, তাঁদের প্রায় একটা সমস্যায় পড়তে হয় মাঝে মাঝে, তা হলো হঠাৎ ঠাণ্ডা লেগে এবং ঋতু পরিবর্তনের সময় গলা বসে যাওয়া। এক্ষেত্রে ১০ গ্রাম রোহণ ছাল ৪ কাপ জলে সিদ্ধ করে এক কাপ খানিক থাকতে নামিয়ে সেটিকে সারাদিনে ২/৩ বারে খেতে হবে। ঐ দিনই গলার স্বরটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ২/৩ দিন ব্যবহার করা দরকার।
৩. খুসখুসে কাসিতে: গাছের ছাল চূর্ণ ১ গ্রাম মাত্রায় দিনে দুই থেকে তিন বার গরম জল সহ অথবা চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ২/৪ দিনেই কমে যায়।
৪ ক্রিমিতে: গোল ক্রিমির উপদ্রবে রোহণের ছালের ক্বাথ বা চূর্ণ সকালে ও বৈকালে উপরিউক্ত পদ্ধতিতে সপ্তাহখানিক খেতে হবে। ক্রিমির উপদ্রব কমে যাবে।
৫. রক্তপিত্তে: ১০ গ্রাম রোহণের ছাল এক সের জলে সিদ্ধ করে আধ সের থাকতে নামিয়ে, ঠাণ্ডা হলে, সেটাকে সারা দিনে ৪ বারে খেতে হবে। ৩/৪ দিনেই উপদ্রবটা চলে যায়।
৬ ক্ষতে: রোহণের ত্বকের কাথ দিয়ে ঘা ধুয়ে এরই মিহিচুর্ণ ঘায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।
CHEMICAL COMPOSITION
Soymida febrifuga A. Juss. Bark contains:- tannin 17.4%; red fibre and bitter substance.
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্র:
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১০, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, চতুর্থ মুদ্রণ ১৪০৭, পৃষ্ঠা, ৭০-৭১।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।