ভূমিকা: কুকুরমুতা বা তাম্রচূড়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Blumea lacera) ব্লুমিয়া গণের এ্যাস্টেরেসিয়া পরিবারের গুল্ম। এই প্রজাতিটি বাংলাদেশের সর্বত্রে জন্মে। এটি অনেক ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
কুকুরমুতা বা তাম্রচূড়া-এর বিবরণ:
কুকুরমুত্রা বা কুকুরশোঁকা হল একটি তীব্র গন্ধযুক্ত একটি বর্ষজীবী ভেষজ গুল্ম। এটি ১-২ ফুট লম্বা হতে পারে। এদের কাণ্ড রোমশ, খাড়া, সরল বা শাখাযুক্ত। এটি সরল, তবে পাতা ও কাণ্ডের সংযোগস্থল থেকে ছোট ছোট শাখাও বের হয়। পাতা পাতা অগোছালো, ডিম্বাকার; ৫ থেকে ১২ সেমি লম্বা, ২-৬ সেমি চওড়া, উপরের দিকে ছোট, ডাঁটাযুক্ত, এবং দাঁতযুক্ত। কিন্তু বোঁটার দিকটা ক্রমশঃ সরু, কিনারা ঢেউ খেলানো, সক্ষম রোমশ, মনে হয় যেন পশম দিয়ে তৈরী। উজ্জ্বল হলুদ ফুলের মাথাগুলি প্রায় ৮ মিমি হয়। কিন্তু এতে একটা গন্ধ আছে এবং সেটি কুকুরের খুব প্রিয়, তাই এই গাছ শুকলেই মূত্রত্যাগ করে, এইজন্যই এর প্রচলিত নাম “কুকুরশোঁকা বা কুকুরমুত্রা”। গুচ্ছবদ্ধ ফুল হয়, ভেতরটা একটু, হলদে, পরে সেটা বীজকোষে পরিণত হয়, এই বীজগুলি দেখতে অনেকটা সোমরাজী (Centratherum anthelminticum.) বীজের মত এবং এর ছোট পুচ্ছ হয়, যার জন্য সে প্যারাসুটের মত উড়ে যেতে পারে, এইভাবেই সে তার বংশবিস্তার করে।
বিস্তৃতি: যা উত্তর-পশ্চিম ভারতের সমভূমিতে ২০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত জন্মাতে পারে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় এশিয়া থেকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে পাওয়া যায়।
গুণাগুণ:
কুকুরমুত্রা উষ্ণ, তীক্ষ্ণ এবং তেতো; ব্রঙ্কাইটিস, রক্তের সমস্যা, জ্বর, তৃষ্ণা এবং শরীর জ্বালাপোড়া করা সারানোর জন্য ভাল। মূল মুখের রোগ সারাতে বলা হয়। ভারতের কোঙ্কণ অঞ্চলে গাছটি মাছি এবং অন্যান্য পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতিতে, এটি নিউরাস্থেনিয়া, মাথাব্যথা এবং ঠান্ডা জনিত কাশিতে দেওয়া হয়।
তথ্যসূত্র:
১. J.M. Garg, “Blumea lacera”, flowersofindia.net, ভারত, ইউআরএলঃ https://www.flowersofindia.net/catalog/slides/Lettuce-Leaf%20Blumea.html
২. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ৪, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ১৯৪-১৯৬।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Vinayaraj
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।