খুবানি শোভাবর্ধক ও উপকারী বৃক্ষ

খুবানি ফলে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বহাইড্রেটস, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন-এ, বি, সি প্রভৃতি বিদ্যমান। বীজের শাঁসে/শাঁসের তেলে প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোসায়ানিক এসিড পাওয়া যায়। এই তেল সাধারণতঃ রান্না ও জ্বালানীর কাজে ব্যবহৃত হয়।

খুবানি-এর পরিচিতি

মাঝারি ধরনের ঝোপঝাড় বিশিষ্ট গাছ। সাধারণতঃ ২০। ২৫ ফুট উঁচু হয়। পাতা গোল কিংবা ডিম্বাকৃতি, ২ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা। ফুল গোলাপী সাদা। ফল কচি অবস্থায় রোমশ, পাকলে হলদে রঙের উপর লালের আভা, মসৃণ। শুকনো ফল তাজা অপেক্ষা উত্তম। এই ফল মধুর, অম্ল, অম্ল-মধুর ভেদে তিন প্রকার। ফলের মধ্যে বীজ থাকে এবং বীজের মধ্যে থাকে শাঁস। বীজের শাঁস অত্যধিক স্বাদযুক্ত। ঔষধার্থে ব্যবহার্য অংশ— ফল ও শাঁস।

প্রজাতিসমূহ:

এই গাছটির বোটানিক্যাল নাম Prunus armeniaca Linn., এটি Rosaceae পরিবারভুক্ত। এই প্রজাতিটির আবার কয়েকটি উপ-প্রজাতি আছে, সেগুলি হলো— (১) কালো বা বেগুনী খুবানি Prunus dasycarpa Ehrh., (২) রাশিয়ান বা সাইবেরীয়ান খুবানী  Prunus sibirica Linn., (৩) জাপানী খুবানী Prunus mume Sicb & Zucc., (৪) মানচুরীয় খুবানী Prunus mandschurica Kochne প্রভৃতি। এইসব উপ-প্রজাতিগুলির মধ্যে প্রথমটি ভারতের কাশ্মীর অঞ্চলে জন্মে।

খুবানি-এর বিস্তৃতি

খুবানীর গাছের আদি বাসস্থান চীন দেশ এবং সেখান থেকেই বিশ্বের নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে ভারতের কাশ্মীর অঞ্চলে, উত্তর-পশ্চিম হিমালয়-সংলগ্ন স্থানসমূহে খুবানীর চাষ হয়। অবশ্য জন্মেও প্রচুর। ভারত ও চীন ছাড়া আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ইটালী, আফগানিস্তান, তুর্কী, মরক্কো, ফ্রান্স, ইরান, মিশর, গ্রীস প্রভৃতি দেশেও এটির চাষ হয়। এর মহামূল্যবান ফল পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায়।

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, সপ্তম মুদ্রণ ১৪২৬, পৃষ্ঠা, ১১৯-১২০।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম:  Seema Bin Zeenat

Leave a Comment

error: Content is protected !!