ওজন কমানো-এর আটটি ঘরোয়া উপায়

শরীরের ওজন বৃদ্ধি বা মেদ বৃদ্ধি এটা খুব সাধারণ বিষয়। অসুস্থতা না থেকেও ওজন বেড়ে যাচ্ছে এমনটা হলে বুঝতে হবে আপনি ভাজা, তেল, মসলা, চর্বিযুক্ত খাবার বেশী খাচ্ছেন। এছাড়াও লাইফস্টাইল বা জীবনশৈলি বদলাতে হবে। তবে ঔষধ ব্যবহার ছাড়াই ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওজন কমানো বেশী উপকারী।

ওজন কমানো বা মেদ কমানোর উপায়

১. নিশিন্দা: স্থুল দেহ অর্থাৎ পেটমোটা লোক কিছুদিন নিসিন্দা পাতায় গুড়ো খেলে (জল সহ) ভুড়ি কমে। মাত্র আধ গ্রাম পর্যন্ত।

২. রক্ত চিতা ও সাদা চিতা: মেদস্বী হয়ে শরীরটা ভার হয়ে যাচ্ছে; সেক্ষেত্রে ৭৫ মিলিগ্রাম মূলচূর্ণ তার সঙ্গে শোধিত গুগগুলু, ৩০০ মিলিগ্রাম মিশিয়ে গরম জলসহ অথবা সিকি কাপ দুধসহ প্রত্যহ একবার করে খেতে হবে। মাসখানেক খেলে মেদের হ্রাস হবে অথচ দুবলতা আসবে না, বরং কর্মশক্তি বেড়ে যাবে।

৩. তেঁতুল: মেদ বা চর্বি কমানোয় বেশ বড় ভূমিকা রাখে। তবে তা দেহের কোষে নয়, রক্তে। এতে কোলস্টেরল ও ট্রাইগ্রাইসেরাইডের মাত্রা এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তেঁতুলের সঙ্গে রসুনবাটা মেশানো যায়, তাহলে রক্তের চর্বি কমানোর কাজে ভালো ফল দেয়। তেঁতুল রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুব উপকারী।

৪. ডেউয়া: খাওয়া-দাওয়ায় খুবই হিসেব করে চলেও শরীরে মেদ বেড়ে যাচ্ছে, এদিকে ক্ষিধের কমতি নেই, সে আবার যখন-তখন; এক্ষেত্রে কাঁচা ডেউয়া ফলের রস এক/দেড় চা-চামচ এক কাপ ঠাণ্ডা জলে মিশিয়ে কয়েকটা দিন খেতে হবে, এর দ্বারা ওই অস্বাভাবিক মেদ কমে যাবে। মেদ কমাতে গেলে, আলু, চিনি বা যেকোন মিষ্টদ্রব্য খাওয়া বন্ধ করতে হবে, অবশ্য মধু, একটু-আধটু, খাওয়া যেতে পারে।

বারোমাস তো কাঁচা ফল পাওয়া যাবে না, সেক্ষেত্রে কাঁচা ফল থেতো করে শুকিয়ে সেটাকে গুড়া করে তিন গ্রাম মাত্রায় প্রত্যহ ঠাণ্ডা জলসহ খেতে হবে।

আরো পড়ুন:  অনিদ্রা কমাতে ঘরোয়া উপায়ে নানাবিধ ভেষজ চিকিৎসা

৫. মধু: মেদ রোগে অর্থাৎ যাঁরা খুব মোটা হয়ে যাচ্ছেন তাঁদের রোগা করবার জন্যে বা মেদ কমিয়ে দেওয়ার জন্যে মধুর সঙ্গে অল্প জল মিশিয়ে খেলে সুফল পাওয়া যায়।

৬. পাতি লেবু বা কাগজি লেবু: পাকা পাতিলেবুর রসে সমপরিমাণ মধু দিয়ে অল্প অল্প গরম জল মিশিয়ে আহারের পর সঙ্গে সঙ্গেই পান করে নিলে এক দু মাসের মধ্যে মেদ-বৃদ্ধি কমে যায় এবং শরীরের বেড়ে যাওয়া মেদও ঝরে যায়।

৭. কুল বা বরই: যাঁদের পেট ও পাছাটা বা নিতম্ব ভরে যাচ্ছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কুলের কাঁচা পাতা ৫ গ্রাম করে নিয়ে বেটে সরবত করে খেতে হবে, তবে চিনি বা মিছরি না মিশিয়ে। এ রোগের ক্ষেত্রে নিষেধ দুবেলা ভাত খাওয়া ও একবেলা রুটি খেতে হবে তাও কড়া সেকা রুটি আর চিনি বা যে কোনো মিষ্টি ও আলুও। এই পাতাবাটা দুবেলা খেলেই ভালো হয়। এর দ্বারা ঐ দুটাই ঝরে যাবে।

এখানে একটা কথা বলে রাখি, যেখানে দেখা যাচ্ছে সর্বাঙ্গই স্থূল সেখানে মেদ রোগ বলে যেন ভ্রম না হয়, মাংসগত বাত হলেও এ অবস্থা আসে, এক্ষেত্রে কুলের পাতা কিন্তু ব্যবহার্য নয়।

৮. ঘোড়া গুলঞ্চ ও পদ্ম গুলঞ্চ: যারা না খেয়েই মোটা আর খেলে তো কথায় নেই, তাঁরা ৮ থেকে ১০ গ্রাম গুলঞ্চের ক্বাথ করে বা ১ কাপ আন্দাজ; তাতে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে হবে, তবে ২ থেকে ৪ দিন খেয়েই হতাশ হলে চলবে না।

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

তথ্যসূত্রঃ

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Buclin

Leave a Comment

error: Content is protected !!