ভূমিকা: কাশছড়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Hydrolea zeylanica) এক প্রকারের ভেষজ বিরুত। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়।
কাশছড়া-এর বর্ণনা:
কাশছড়া বর্ষজীবী, শায়িত থেকে অর্ধখাঁজ বীরুৎ। এটি ৪০ সেমি বা অধিক লম্বা, সচরাচর শাখান্বিত, পর্ব থেকে মূল গজায়। পাতা সরল, খাটো বৃন্তবিশিষ্ট, ৮ সেমি পর্যন্ত বা অধিক লম্বা, পাদদেশের দিক সরু, বল্লমাকার, অখণ্ড।
পুষ্প ১ সেমি পর্যন্ত বা অধিক লম্বা, প্রান্তীয় এবং কাক্ষিক গুচ্ছে, প্রায়শ সাইমে, নিয়ত, পঞ্চমাংশক, বৃত্তক বা প্রায় অবৃন্তক। বৃত্যংশ ৫টি, ৮ মিমি পর্যন্ত লম্বা, খণ্ডক বল্লমাকার, মোটামুটি স্থায়ী, রোমশ, গ্রন্থিল। দলমন্ডল চক্রাকার থেকে ঘন্টাকার, পাপড়ি ৫টি, প্রান্ত আচ্ছাদী, ঝিল্লিময়, নীল।
পুংকেশর ৫টি, পুংদণ্ড সূত্রবৎ, ৪ মিমি পর্যন্ত লম্বা, পাদদেশ প্রশস্ত, পরাগধানী বর্শাকার। গর্ভপত্র ২টি, গর্ভাশয় অধিগর্ভ, ক্ষীণ একটি ঝিল্লি দ্বারা আবৃত। রোমশ, কেন্দ্রে একটি উদগত প্রাচীর গাত্রীয় অমরা থাকায় ২-কোষী, প্রতি কোষে ডিম্বক অসংখ্য, গর্ভদণ্ড ২টি, সুস্পষ্ট, গর্ভমুণ্ড মুণ্ডাকার বা প্রায়শ খাতাগ্র। ফল পটী বিদারী ক্যাপসিউল, ৪.৫ মিমি পর্যন্ত লম্বা, পাতলা, স্বচ্ছ, গোলকাকার। বীজ ক্ষুদ্র, ০.৪ মিমি (প্রায়) লম্বা, বাদামি এবং পৃষ্ঠ সরু সরেখিত।
ক্রোমোসোম সংখ্যা : ২০ = ১৮, ২৪ (Kumar and Subramaniam, 1986)।
আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার :
নর্দমার কাছাকাছি বা আর্দ্র কাদাযুক্ত স্থানের অগভীর পানি। ফুল ও ফল ধারণ সময় অক্টোবর থেকে মার্চ। বীজ থেকে বংশ বিস্তার হয়।
বিস্তৃতি :
আফ্রিকা, ভারত এবং মালয়েশিয়ায় ব্যাপক বিস্তৃত। বাংলাদেশে সর্বত্র পাওয়া যায়।
ব্যবহার :
গবাদিপশু প্রায়শ ইহা ভক্ষণ করে থাকে। ইহার পাতা পিষে মণ্ডে পরিণত করে অবহেলিত এবং কড়া পড়া ক্ষত পরিস্কার এবং নিরাময়ের জন্য পট্টি হিসেবে ব্যবহৃত হয় (Kirtikar et al., 1935) ।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ০৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) কাশছড়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে এটি আশংকা মুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে কাশছড়া সংরক্ষণের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি আপাতত সংরক্ষণের জন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বনের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ০৮ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৫৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Anne Thingnam
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।