পরিচিতি: অযত্নে বেড়ে ওঠা এই ক্ষুপ বা গুল্ম জাতীয় গাছটি খুব ছোট নয়। এটি এক ধরণের ঝাড়দার গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Senna occidentalis Linn, পরিবার Leguminosae -এর অন্তর্গত।
এই গাছের পাতার শির, গাছের উপরের অংশটা একটু বেগুনি রঙের হয় বলেই একে বলে কালোকাসুন্দে।
কলকাসুন্দা-গুল্মের বিবরণ:
একটি প্রাপ্ত বয়স্ক কলকাসুন্দা গাছ ৭ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। তবে এদের উচ্চতা গড়ে ভাঁট ফুলের থেকে সামান্য বেশি হতে পারে। সাধারণত উচ্চতা ৫ ফুটের মতো হয়।
কলকাসুন্দার কাণ্ডের রং গাঢ় সবুজ ও এদের কাণ্ড বেশ শক্ত। বড় কলকাসুন্দার কাণ্ডের বেড় ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। কাণ্ডের নিচের দিক থেকেই অজস্র ডালপালা বের হতে দেখা যায়।
এদের পাতার রং গাঢ় সবুজ। কঁচি পাতা সাদটে সবুজ। পাতাগুলো যৌগিক, বহপত্রক। একটা বোঁটায় ৫-১০ জোড়া পাতা থাকে। বোঁটার দৈর্ঘ্য ১০-১২ ইঞ্চি। এদের পাতার দৈর্ঘ্য ১.৫-২ ইঞ্চি।
কলকাসুন্দার ফুল সোনালি-হলুদ রঙের, মঞ্জরী ও বোঁটা হলদেটে সবুজ। মঞ্জরী বহুপুষ্কক। একটা মঞ্জরীতে ৫-১০ টা ফুল থাকতে পারে। ফুলের ব্যাস ১ ইঞ্চি। একটা ফুলে ৫ টা পাঁপড়ি থাকে। সাধারণত ফাগুনের শুরতেই ফুল ফুটতে শুরু করে।
বর্ষার শুরুতে এই গাছের বীজ থেকে চারা বের হয়। যদিও এই গাছ বর্ষজীবী, তা হলেও পুরনো গাছ ২ থেকে ৪টি তো দেখা যায়। এর পাতা ১ থেকে দেড় ইঞ্চি লম্বা হয়।
পাতা চটকালে তীব্র কটুগন্ধ বের হয়। এর লম্বা বোঁটায় ২ থেকে ৬ জোড়া পাতা থাকে। ফল হয় ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে। ফলের রং লালি হলুদ হয়, তারপরে হয় চ্যাপ্টা শুঁটি,
বীজ একসঙ্গে থাকে ৪ থেকে ৫টি, প্রতি শুঁটিতে ২০ থেকে ২৫টি বীজ থাকে, ফাল্গুন ও চৈত্রে বীজ পেকে আবার মাটিতে পড়ে যায়। আরো পড়ুন
কলকাসুন্দা উদ্ভিদকে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে আরম্ভ করে সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল পর্যন্ত ভারতের সব প্রদেশেই পাওয়া যায়।
এর আর একটি প্রজাতি যত্রতত্র আমরা দেখতে পাই সেটির পাতাগুলি একটু ছোট এবং পাতার ডাঁটা বেগুনি রং নয়, আর তার ফল বা শুঁটিগুলি হয় গোল। সেটির বৈজ্ঞানিক নাম Cassia sophera Linn.
কলকাসুন্দা-এর বিস্তৃতি:
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে জন্মে এই গাছ।
চাষ পদ্ধতি:
এই গাছ অযত্নে হয়। আগাছা হিসাবে অনেকে গাছটি চেনে। জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে এর বীজ পেকে মাটিতে পড়ে যায়। তারপরে নতুন চারা গজে ওঠে।
ব্যবহৃত অংশ: ঔষধার্থে ব্যবহার করা হয় পাতা, ফুল অথবা মূল সমেত সমগ্র গাছ।[১]
তথ্যসূত্রঃ
১. আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৪, পৃষ্ঠা, ১৫৬।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: J.M.Garg
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।