হাড়ভাঙ্গা খাড়ি বা হাড়ভাঙ্গা নদী বা হাড়িয়া নদী বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের আন্তঃসীমান্ত নদী।[১] নদীটির সর্বমোট দৈর্ঘ্য ৭০-৮০ কিলোমিটার।[২] নদীটি নওগাঁ জেলার পোরসা উপজেলার নীথপুর অঞ্চলে বাংলাদেশ ভারতের সীমানা নির্দেশক এবং এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সীমানা হিসেবে আছে প্রায় ৩ কিলোমিটার।[৩]
প্রবাহ: নদীটি পোরশা উপজেলার উত্তরস্থ শোলডাঙ্গা ও খলসিডাঙ্গার মাঝ দিয়ে বেরিয়ে কাকনা, আকিলার পশ্চিম হয়ে আঁকাবাঁকা পথে সুন্দারেল, গোপালপুর এসে মোড় নিয়ে গৌরীপুরকে পশ্চিমে রেখে মতিপুর ও কালকুটির মাঝ দিয়ে উত্তর কোচ কুড়ালিয়াতে মোড় নিয়ে পাপীপুকুর হয়ে বাঁক নিয়ে দক্ষিণ কোচ, কুড়ালিয়া, বড় মির্জাপুর বিল হয়ে গোয়ালার পশ্চিমে পুনর্ভবার একটি শাখার সাথে মিলিত হয়। পরবর্তীতে এখান থেকে হুজরাপুর ও কামারপুরের মাঝ দিয়ে রামানন্দবতি, রামকৃষ্ণবতি হয়ে বাঁক নিয়ে দ্বিধাবিভক্তির পর একটি শাখা দক্ষিণ দিকের মিনাপাড়া, কোচপুর পাইকপাড়া ও পশ্চিম হরিপুরের মাঝ দিয়ে সুরানন্দ, পশ্চিম দেউলিয়া হয়ে শ্রীকৃষ্ণপুর হয়ে আন্দায় গিয়ে দ্বিধাবিভক্তি ঘটে এবং এর একটি পূর্বদিক দিয়ে গণ্ডারডাঙ্গা পর্যন্ত গিয়েছে এবং অপরটি ছত্রাইল, পোরশা, সোবহানপুরকে পশ্চিমে রেখে পোরশা ও সুহাটির মাঝ দিয়ে চক সাহাপুর, ফতাসডাঙ্গায় দ্বিধাবিভাজন ঘটে। এর একটি শাখা পূর্বদিক দিয়ে বেরিয়ে কাচিতানা পর্যন্ত গিয়েছে এবং অপরটি আঁকাবাঁকা পথে গামাইর, মহিষাদাই হয়ে চন্দন বিলের পূর্ব দিয়ে সীমানা পর্যন্ত গিয়েছে। অপরদিকে রামকৃষ্ণবতির পূর্ব সীমানা দিয়ে ছোট ছোট দুটো বাঁক নিয়ে চক নিশ্চিন্তপুরে দ্বিধাবিভক্তির পরে একটি উত্তর দিকস্থ আলোকদহ, বাদ নিশ্চিন্তপুর, মাইপুর হয়ে বাঁক নিয়ে দিলামাপুর যোদ্রামবতিতে দুই ভাগে বিভক্তির পর একটি সোজা উত্তরস্থ ভাতকাপা, ইসলামপুর ও খেরুন্দা হয়ে কিছুদূর পর্যন্ত গিয়েছে এবং অপরটি পূর্বস্থ তেঘরি পর্যন্ত গিয়েছে।[৪]
নদীটির কয়েকটি শাখা বাংলাদেশে পুনর্ভবা নদীর ডানতীরে পতিত হয়েছে। সেই হিসেবে নদীটি পুনর্ভবার উপনদী এবং একই সঙ্গে পুনর্ভবার শাখানদী।
ছবির ইতিহাস: ব্যবহৃত ছবিটি গুগল আর্থ থেকে ২৫ জুন ২০১৮ নেয়া এবং ডানদিকে পুনর্ভবাতে হাড়িয়া নদীর মোহনা।
তথ্যসূত্র:
১. হক, ম. ইনামুল, বাংলাদেশের নদনদী, অনুশীলন ঢাকা, জুলাই ২০১৭, পৃষ্ঠা ৪২, ১৭৬।
২. শেখ, হানিফ, ড. মো. আবু (ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। “উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় নদ-নদী”। বাংলাদেশের নদ-নদী ও নদী তীরবর্তী জনপদ (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: অবসর প্রকাশনা সংস্থা। পৃষ্ঠা ৪৩-৪৪।
৩. হক, পূর্বোক্ত।
৪. শেখ, পূর্বোক্ত।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।