বর্ণনা: থুইতা পুঁটির তুন্ড গোলাকার ও মুখ প্রায় অবনত । এদের উর্ধ্বচোয়াল কিছুটা দীর্ঘ হয়। ঠোট পুরু ও ভেতর ঝালরযুক্ত। তুন্ডের প্রান্ত বরাবর খাঁজ কাটা থাকে । পুরো দেহে আঁইশে ঢাকা। পায়ুপাখনা প্রসারিত থাকে পুচ্ছ পাখনার গোড়া পর্যন্ত বিস্তৃত। পুচ্ছপাখনা দুই ভাগে বিভক্ত, উপরের লোবটি নিচের লোবের তুলনায় দীর্ঘ হয়। দেহের রং রুপালি বর্ণের হলুদাভ। অল্প সংখ্যক কালো আঁইশ থাকে বুকের উপরে যা পাখনার উপরে পার্শ্বরেখা বরাবর অবস্থান করে থাকে। দেহের পার্শ্ব বরাবর আঁইশগুলো কালো কালো বিন্দু নিয়ে গঠিত। পৃষ্ঠপাখনার শীর্ষর কিনারা কালচে বর্ণের হয়।
বসবাস: থুইতা পুঁটি পানির উপর ও তলদেশ উভয় স্তরেই বাস করে এবং স্বাদুপানির মধ্যে এদের অবাধ চলাচল। সাধারণত নরম উদ্ভিদের মূল, এককোষী শৈবাল, বিভিন্ন কীটপতঙ্গ বা পোকামাকড় খায়। এরা সব ধরনের স্বাদুপানিতেই বাস করে, তবে সাধারণত মৃদু স্রোতযুক্ত বড় জলাশয়, এবং কাদা বা বালুময় তলদেশ এদের পছন্দ বেশি। আগষ্ট মাসে প্রথমে পোনা মাছ দেখা যায়, তবে প্লাবনভূমি শুকানোর সঙ্গে সঙ্গেই তারা স্থায়ী আবাসস্থল নদীতে ফিরে যায়।
বিস্তৃতি: থুইতা পুঁটি মাছ এশিয়ার মেকং এবং চাও ফ্রায়া অববাহিকা, মালয় পেনিসুলা, সুমাত্রা, জাভা এবং বর্নিয়োতে পাওয়া যায় । তবে ছালউইন এবং মেকলং অববাহিকায়ও এই মাছ পাওয়া গিয়েছে। বাংলাদেশ, ভারতে এই মাছ পাওয়া যায়।
চাষাবাদ: বাজারে এই মাছের চাহিদা অনেক এবং অ্যাকুরিয়াম মাছ হিসেবে বেশ চাহিদা থাকে। এই মাছ টাটকা খেতে সুস্বাদু। বাংলাদেশে এই মাছ চাষ করা হয় না।
বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ: IUCN Bangladesh (2000) এর লাল তালিকায় এই প্রজাতির উপাত্তের অভাবের কথা উল্লেখ থাকে । যেহেতু শুধু ১৯৭০ সালে সিলেটে একটিমাত্র মাছই পাওয়া গিয়েছিল তাই মায়ানমার থেকে উৎপন্ন ঝর্নাযুক্ত জলাধার সহ বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চর এবং সিলেটের নদীসমূহে এই প্রজাতির উপর জরিপ করা প্রযোজন ।
তথ্যসূত্র:
এ কে আতাউর রহমান, ফারহানা রুমা (অক্টোবর ২০০৯)। “স্বাদুপানির মাছ”। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ এবং অন্যান্য। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃ: ৯২–৯৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।