গাঁজা বা ভাং এশিয়া অঞ্চলে জন্মানো গন্ধযুক্ত বর্ষবীজি গুল্ম

ভাং

বৈজ্ঞানিক নাম: Cannabis sativa. সমনাম: Cannabis indica Lamk. ইংরেজি নাম: Hemp, Indian Hemp, Marijuana. স্থানীয় নাম: ভাং, কিফ, গাঁজা, চরস, সিদ্ধি, সুধি।

বর্ণনা: ঋজু, গন্ধযুক্ত, বর্ষবীজি বীরুৎ, ১ মিটার বা তদোর্ধ লম্বা, শাখা প্রশাখা শক্ত ও ঋজু। পত্র করতলাকার খন্ডিত, নিম্নাংশে প্রতিমুখ, উর্ধ্বাংশ একান্তর, উপপত্র ৩-৫ মিমি লম্বা, বৃন্ত ০.৫-৩.৫ সেমি, পত্র ফলক ১.০-৭.৫ x ০.২-১.০ সেমি। পুংপুষ্প অক্ষীয় প্যানিকল বিশিষ্ট নিয়ত মঞ্জরীতে বিন্যস্ত, স্ত্রীপুষ্প অক্ষীয় অনিয়ত মঞ্জরীতে সন্নিবিষ্ট। পুংপুষ্প: বৃত্যংশ ৫ খন্ডিত, ৩-৪ মিমি লম্বা, বহির্ভাগ রোমশ, পুংকেশর ৪ মিমি লম্বা, পরাগধানী অনুদৈর্ঘ্য বিদারী। স্ত্রীপুষ্প: প্রায় ৫ মিমি লম্বা, মঞ্জরীপত্র ২.৫ মিমি লম্বা, পরিপক্ক মঞ্জরীপত্র ৭-৮ x ৩-৪ সেমি, নাট ২.৫-৩.০ x ১.৫-২.০ মিমি। ক্রোমোসোমের সংখ্যা: 2n = ২০ (Fedorov, 1969).

চাষাবাদ ও বংশ বিস্তার: ভাং পথিপার্শ্ব ও পতিত জমি। চাষাবাদ না করা এবং চাষাবাদের ওপর সরকারী বিধিনিষেধ আরোপ। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার। ফুল ও ফল ধারণ প্রায় সারাবর্ষ ব্যাপী।

বিস্তৃতি: উত্তর পশ্চিম হিমালয় ও মধ্য এশিয়া । বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জন্মে। একদা সরকারী তত্ত্বাবধানে নওগা জেলায় চাষাবাদ হত কিন্তু বর্তমানে যমুনার পশ্চিমপারের প্রায় সব জেলাতেই অনাবাদীরূপে জন্মে।

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: শীতের মাঝামাঝি সময়ে বিটপের শীর্ষ থেকে রজন ক্ষরিত হতে থাকে। ওই সময় স্ফীত শীর্ষাংশ অপসারণ করে মোড়ানো হয়। এই চ্যাপ্টা রজন যুক্ত বিটপীয় অংশ গাঁজা রূপে বাজারে বিক্রি করা হয়। রজন যুক্ত পরিপক্ক পাতা হলো ভাং যা ধুমপানে ব্যবহার করা হয়।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৭ম খণ্ডে  (আগস্ট ২০১০)  ভাং প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে ভাং সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে নিয়ন্ত্রিত চাষাবাদ করা যেতে পারে।  

আরো পড়ুন:  গাঁজা বা ক্যানাবিস দক্ষিণ এশিয়ার ভেষজ গুল্মের প্রজাতি

তথ্যসূত্র:

১. খানম, মাহবুবা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৬৬-১৬৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!