ধুন্দল বিশ্বের উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে আবাদকৃত সবজি

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]বৈজ্ঞানিক নাম: Luffa cylindrica (L.) Roem., Fam. Syn. 2: 63 (1846). সমনাম: Momordica cylindrica L. (1753), Luffa aegyptiaca Mill. (1785). ইংরেজি নাম: Smooth Loofah, Sponge Gourd, Egyptian cucumber, বা Vietnamese luffa স্থানীয় নাম: ধুন্দল, ধুনদুল, ধুঁধুঁল, পোরোল, তিত পোলা। জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants শ্রেণী: Eudicots উপশ্রেণি: Rosids বর্গ: Cucurbitales পরিবার: Cucurbitaceae উপপরিবার: Cucurbitoideae গণ: Luffa প্রজাতি: Luffa cylindrica (L.) [/otw_shortcode_info_box]

বর্ণনা: ধুন্দল বা পোরোল বা তিত পোলা বা ধুঁধুঁল হচ্ছে কিউকারবিটাসি (শসা লাউ) পরিবারের লাফা গণের বর্ষজীবী বিশাল আরোহী বীরুৎ। এদের কান্ড মসৃণ, খাঁজযুক্ত কোণাকৃতি, রোমশ। আকর্ষী দৃঢ়, সাধারণত ২-৪ খন্ডিত। পত্র করতলাকারে ৫-৭ খন্ডিত, ৯৫-২৫ সেমি লম্বা, প্রস্থ অনুরূপ পরিমাপ বিশিষ্ট, খন্ড ত্রিকোণাকার, মধ্যম খন্ড ৮-১২ সেমি লম্বা, শীর্ষ সূক্ষাগ্র বা দীর্ঘাগ্র মূলীয় অংশ গভীর তাম্বুলাকার, মঞ্জরীপত্র ৩-৭ X ২-৪ সেমি, রসালো, ডিম্বাকার, উপরের পৃষ্ঠে ৩-৭টি চকচকে গ্রন্থি উপস্থিত, বৃন্ত ১০-১২ সেমি লম্বা, শক্ত, অমৃসণ। উদ্ভিদ সহবাসী।

পুংপুষ্প: ১৫-২০ টি পুষ্প বিশিষ্ট রেসিম, মঞ্জরীদন্ড দৃঢ়, ১২-১৪ সেমি লম্বা, রোমশ বৃতিনল খাটো, প্রশস্ত ঘন্টাকার, খন্ড দীর্ঘায়ত-কীলকাকার, শীর্ষ গোলাকার, দলমন্ডল হলুদ, চক্রাকার, খন্ড দীর্ঘায়ত, ২৪ x ২.০-২.৮ সেমি, হলদে-সাদা, শীর্ষ গোলাকৃতি-স্থূলা, মূলীয় অংশ সরু, পুংকেশর ৫টি, পুংদন্ড ৬ -৮ মিমি লম্বা, মূলীয় অংশ ঘন রোমশ। স্ত্রীপুষ্প : একল, মঞ্জরীদন্ড ২-১০ সেমি লম্বা, গর্ভাশয় বেলনাকার, রোমশ, গর্ভমুন্ড ৩টি প্রসারিত। ফল বেলনাকার, মসৃণ সোজা বা সামান্য বাঁকা, ১৫-৪৫ x ৩-৬ সেমি, শিরাবিহীন, পরিপক্ক অবস্থায় অভ্যন্তর দৃঢ় আঁশালো। বীজ ডিম্বাকার, মসৃণ বা গুটিকাকার, ১২ x ৮ মিমি, ২ মিমি পুরু, সাধারণত কালো, প্রান্ত সামান্য পক্ষযুক্ত। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে জুন থেকে ডিসেম্বর মাসে।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৬ (Whitaker, 1933).

চাষ পদ্ধতি ও আবাসস্থল: জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিষ্কাশিত উর্বর মাটি যার pH ৬-৫-৭.৫। বীজে বংশ বিস্তার করা যায়। বাংলাদেশের সর্বত্র চাষাবাদ করা হয়।

আরো পড়ুন:  ঝিঙ্গা বা ঝিঙা-এর হচ্ছে সারা বিশ্বে আবাদকৃত একটি সবজি

বিস্তৃতি: উষ্ণমন্ডলীয় দেশ সমূহে বন্য উদ্ভিদরূপে জন্মে এবং সেসব দেশে চাষাবাদও করা হয়। এর আদিনিবাস পৃথিবীর উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চল।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: অপরিপক্ক ফল, কচিপাতা এবং পুষ্প মুকুল সবজিরূপে খাওয়া হয়। পরিপক্ক ফলের আঁশালো সংবহন কলা স্নানের সময়ে দেহ পরিষ্কারের স্পঞ্জরূপে ব্যবহার করা হয়। বীজ বমনেদ্রেককারী ও রেচক। এছাড়া এই উদ্ভিদের ফল টেবিলের মাদুর, দরজার ও স্নানের মাদুর, জুতার সুকতলা, স্যান্ডাল ও গ্লোবস তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: ইন্দোচীনে এই উদ্ভিদের ফল দুগ্ধবৃদ্ধির জন্য এবং কম্বোডিয়ায় মূত্র বৃদ্ধিকারক রূপে ব্যাবহার করা হয়।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ধুন্দল প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে শীঘ্র সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্রঃ

১. এম অলিউর রহমান, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩১৯-৩২০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!