বুড়িগুয়াপান বনৌষধিটি উদ্ভিদ। এটি অ্যাকানথেসি (Acanthaceae) ফ্যামিলীভুক্ত, বোটানিকাল নাম হেমিগ্রাফিস হিরটা (Hemigraphis hirta T. And.) বাংলা দেশের যত্রতত্র এই গাছ অযত্নে প্রচুর পরিমাণে হয়ে থাকে। এর বিশেষ কোনো স্বাদ নেই। প্রামাণ্য উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের অধিকাংশ গ্রন্থে এই গাছটির নাম পর্যন্ত পাওয়া যায় না; এমন কি ‘ওয়েলথ অফ ইন্ডিয়া’ (Wealth of India) বলে দিল্লী থেকে যে গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, তার মধ্যেও এই গাছটির কোনো উল্লেখ নেই।
বিস্তৃতি: ভারত, বাংলাদেশের সকল অংশেই পাওয়া যায়। সমভূমি ও পাহাড় উভয় অঞ্চলে পাওয়া যায়।
ঔষধ হিসাবে ব্যবহার:
আমাশয় ও রক্তামাশয়: এই গাছটি সম্পর্কে বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে সংবাদ নিয়ে জানা যায় যে, আমাশয় ও রক্তামাশয় (প্রবাহিকা) হলে এই গাছের রস বয়সানুপাতে এক বা দুই চা-চামচ করে খাওয়ানো হয়।
মুখ ও জিহ্বে ক্ষত: এই গাছ সম্পর্কে ‘বনৌষধি দর্পণ’ (কবিরাজ বিরজাচরণ গুপ্ত কৃত) ব্যতীত অন্য কোনো গ্রন্থে এই গাছটির রস-গুণ সম্পর্কে কোনো কথার উল্লেখ নেই, তবে মুখের ও জিহর ক্ষতে পানের সঙ্গে এই গাছের পাতা চর্বণ করলে উপকার হয় এবং পুরাতন কদর্য ক্ষতেও এই পাতা বেটে লাগালে ক্ষত শুদ্ধি হয়, এই কথা বলা আছে।
আমাতিসারে: এই গাছটির পুষ্পিতকালেই একে সংগ্রহ করে শুকিয়ে সমগ্র অংশ চূর্ণ করে ৫ থেকে ৬ গ্রেণ মাত্রায় ব্যবহার করলে সাদা ও রক্ত আমাশায় ভালই উপকার হয়। তবে কয়েকটি ক্ষেত্রে তেমন উপকার পাওয়া যায়নি, অবশ্য এসব ক্ষেত্রের অন্য কোনো হেতুও থাকতে পারে। পূর্বোক্ত ঔষধ প্রয়োগে যে সব ক্ষেত্রে তেমন উপকার হয়নি, সে সব ক্ষেত্রের কারণগুলির অনুসন্ধান যেমন প্রয়োজন, তেমনি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কতটা ফলপ্রসু তাও নির্ধারণ করা প্রয়োজন; তা না হলে রোগ-নিরাময়ের কোনো পূর্ণাঙ্গ ঔষধরূপে ব্যবহার করা সম্ভব নয়; এবং বৈজ্ঞানিক জগতে এর কোনো দিনই স্থান হবে না।
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্রঃ
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা,১৬৯।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Mokkie
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।