[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Anthracoceros albirostris সমনাম: Buceros albirostris Shaw and nodder, 1790 বাংলা নাম: উদয়ী পাকরাধনেশ, কাউ ধনেশ (আই) ইংরেজি নাম: Oriental Pied hornbill. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Bucerotidae গণ/Genus: Anthracoceros, Reichenbach, 1849; প্রজাতি/Species: Anthracoceros albirostris (Shaw and nodder, 1790)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Anthracoceros গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ৫টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত এবং আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে উদয়ী পাকরাধনেশ।
বর্ণনা: উদয়ী পাকরাধনেশ বা উদয়ী পাকড়া ধনেশ হচ্ছে বড় সাদাকালো দেহ আর হলদে ঠোঁটের পাখি (দৈর্ঘ্য ৯০ সেমি, ডানা ২৯.৫ সেমি, ঠোঁট ১২.৫ সেমি, পা ৬.২ সেমি, লেজ ৩০ সেমি)। ছেলেপাখির চেহারা ও আকার মেয়ে থেকে অনেকটা আলাদা। ছেলেপাখির পিঠ মসৃণ ও চকচকে কালো, গলার পট্টি ফ্যাকাসে নীল এবং লেজ কালো; ডানার প্রান্ত-পালক ও লেজের আগা সাদা; দেহতল সাদা; কালো আগাসহ ঠোঁট ও ‘শিঙ’ হলুদ; চোখ লালচে ও চোখের গোলকের চামড়া নীলচে-সাদা; এবং পা ও পায়ের পাতা সবুজাভ-শ্লেট রঙা। মেয়েপাখি আকারে ছোট; চোখ বাদামি এবং ঠোঁট ও ‘শিঙ’-এর বেশির ভাগ জায়গা কালো। অপ্রাপ্তবয়স্ক ও তরুণ পাখির লেজ বেশ সরু, ঠোঁট ছোট এবং পালকে চাকচিক্য নেই। ২টি উপ-প্রজাতির মধ্যে A. a. albirostris বাংলাদেশে আছে।
স্বভাব: উদয়ী পাকরাধনেশ প্রশস্ত পাতাওয়ালা চিরসবুজ ও পাতাঝরা বনে বিচরণ করে; সাধারণত ছোট ছোট দলে থাকে। এরা ফলদ গাছ ও মাঝে মাঝে ভূমি থেকে খাবার তুলে নেয়; খাদ্যতালিকায় রয়েছে প্রধানত ফল, তবে উই, টিকটিকি, সাপ, পাখির ছানাসহ অন্য ছোট প্রাণীও খেয়ে থাকে। মাঝে মাঝে এরা খাবার শূন্যে ছুড়ে দিয়ে ঠোঁটে পুরে নেয়; এবং কর্কশ কণ্ঠে চেচিয়ে ডাকে: ক্ল্যাঙ-ক্যাঙ,কিয়েক কেক-কেক; কক-কক,কক-কক..; অথবা কিচমিচ করে ডাকে: কুয়ি-কুয়ি- কুয়িকুয়িকুয়িকুয়ি…। এপ্রিল-মে মাসের প্রজনন ঋতুতে ভূমি থেকে ৩-৮মিটার উঁচুতে গাছের কোটরে বাসা বেঁধে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ২-৩টি; মাপ ৪.৯×৩.৪ সেমি।
বিস্তৃতি: উদয়ী পাকরাধনেশ বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে বিচরণ করে। ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার থেকে চিন, ইন্দোচীন ও মালয়েশিয়ায়সহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: উদয়ী পাকরাধনেশ বিশ্বে বিপদমুক্ত ও বাংলাদেশে বিপন্ন বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: উদয়ী পাকরাধনেশ পাখির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ ধলাঠোঁটে কালাশিঙ (গ্রিক: anthrakos = কয়লা, keros = শিঙ; ল্যাটিন : albus = সাদা, rostris = ঠোঁটের)।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Anthracoceros albirostris“, http://www.iucnredlist.org/details/22682437/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫৩।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।