[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Harpactes erythrocephalus সমনাম: Trogon erythrocephalus Gould, 1834 বাংলা নাম: লালমাথা কুচকুচি, কুচকুচিয়া (আলী) ইংরেজি নাম: Red-headed Trogon. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য Kingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Trogonidae গণ/Genus: Harpactes, Swainson, 1833; প্রজাতি/Species: Harpactes erythrocephalus (Gould, 1834)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Harpactes গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ১১টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতিটি হচ্ছে আমাদের আলোচ্য লালমাথা কুচকুচি।
বর্ণনা: লালমাথা কুচকুচি বা লালমাথা কুচকুচিয়া হচ্ছে আগুনরঙ পাখি (দৈর্ঘ্য ৩৫ সেমি, ওজন ৭৫ গ্রাম, ডানা ১৪.৫ সেমি, ঠোঁট ২.২ সেমি, পা ১.৯ সেমি, লেজ ১৯.২ সেমি)। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারায় পার্থক্য রয়েছে। ছেলেপাখির মাথা,ঘাড় ও বুক গাঢ় লাল; পিঠ মরচে বাদামি ও দেহতল পাটল বর্ণের; বুকের বড় সাদা ফেটা; ডানার পালক-ঢাকনি ধূসর ও সূক্ষ্ম কালো দাগে ভরা; লেজ লম্বা, ক্রমান্বয়ে ছোট থেকে বড় পালকে গড়া। মেয়েপাখির মাথা, ঘাড় ও বুক দারুচিনি রঙের। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের চোখ গাঢ় লাল, চোখের গোলকের ত্বক বেগুনি-নীল এবং ঠোঁটের সঙ্গমস্থল প্রায় বেগুনি; পা ও পায়ের পাতা বেগুনি; দুই রঙের ঠোঁট: উপরের পাটি বেগুনি-নীল ও নিচের পাটি কালো। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির বুক, বগল ও তলপেট পীতাভ সাদা। ১০টি উপ-প্রজাতির মধ্যে H. e. erthrocephalus বাংলাদেশে রয়েছে।
স্বভাব: লালমাথা কুচকুচি ঘন প্রশস্ত পাতার চিরসবুজ বন ও মিশ্র বাঁশ বনে বিচরণ করে; একা বা জোড়ায় থাকতে দেখা যায়। বনের ৪-৬ মি উঁচু ডালে নীরবে বসে থাকে এবং ওড়ে এসে শিকার ধরে অথবা মাটিতে নেমে খাবার খায়; খাদ্যতালিকায় রয়েছে উড়ন্তÍ পোকামাকড়, লার্ভা ও রসালো ফল। এরা শান্ত ও লাজুক পাখি; আবডালে থেকে নম্র মধুর সুরে বার বার ডাকে: কিউ.. কিউ ..; মাঝে মাঝে ‘গান’ গায়: টিয়াউপ… টিয়াউপ..। এপ্রিল-জুলাই মাসে প্রজনন ঋতুতে ঘন বনে বৃক্ষের প্রাকৃতিক কোটরে বা কাঠঠোকরার শূন্য গর্তে বাসা করে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো পীতাভ, সংর্খায় ৩-৪টি, মাপ ২.৮×২.৪ সেমি।
বিস্তৃতি: লালমাথা কুচকুচি বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে পাওয়া যায়। ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন, ইন্দোচীন ও ইন্দোনেশিয়াসহ হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: লালমাথা কুচকুচি বিশ্বে বিপদমুক্ত ও বাংলাদেশে বিপন্ন বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই লালমাথা কুচকুচিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।[৩]
বিবিধ: লালমাথা কুচকুচির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ রাঙ্গামাথা ফলচোর (গ্রীক: harpaktes = ফলচোর, eruthro = লাল, kephalos = মাথা)।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Harpactes erythrocephalus“, http://www.iucnredlist.org/details/22682854/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫৩।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।