জন হেনরি, নাম তাঁর ছিল জন হেনরি ছিল যেন জীবন্ত ইন্জিন, হাতুড়ির তালে তালে

জন হেনরি বা নাম তাঁর ছিল জন হেনরি ছিল যেন জীবন্ত ইন্জিন হচ্ছে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের অনূদিত একটি আধুনিক বাংলা গণসংগীত। গানটি বৃহৎ আকারের ৭৩ লাইনের একটি বাংলা গণসংগীত। গানটি সুর করেছিলেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস নিজেই এবং তিনিই গেয়েছিলেন। গানটি হেমাঙ্গ বিশ্বাস ১৯৭৩ সালে অনুবাদ করেন। গানটি মাস সিঙ্গার্সের পক্ষে চন্দন সেন প্রকাশিত প্রথম প্রকাশ সেপ্টেম্বর ১৯৮০ হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গান নির্বাচিত গানের সংকলন গ্রন্থের ২৯ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত রয়েছে।

উনিশ শতকের সত্তর দশকের সত্য ঘটনাকে অবলম্বন করে এই কাহিনীকাব্য বা গীতিকাটির জন্ম। সব দেশেই গীতিকাগুলোতে কাহিনীর সাথে কিংবদন্তী মিশে থাকে, এবং বিভিন্ন সময় অজ্ঞাত রচয়িতা দ্বারা সংযোজনও ঘটে থাকে। এখানেও হয়েছে তাই। আমেরিকার বিভিন্ন লোকসংগীতের সংগ্রহপুস্তকে পাঠের বিভিন্নতা আছে। বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন গায়ক পিট সিগারের মতে এটি আমেরিকার মহত্তম গীতিকা (ইংরেজি: Noblest Ballad)।

গানটি হেমাঙ্গ বিশ্বাসের একটি বহুল পরিচিত গণসংগীত এবং এই গানটিতে জীবনসংগ্রামের পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরবার আহ্বান করা হয়েছে। গানটিতে শ্রমিক শ্রেণির একজন মহান শ্রমিকের নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও অপরাজেয় মনোভাবকে তুলে ধরা হয়েছে। গানটি দ্রুত লয়ে গণসংগীতের সুরে গাওয়া হয়েছে। গানটির কথা ও গানটিকে রোদ্দুরে ডট কম আপনাদের কাছে উপস্থাপন করতে পেরে আনন্দিত।

‘নাম তাঁর ছিল জন হেনরি’ গানের কথা

জন হেনরি, জন হেনরি
নাম তাঁর ছিল জন হেনরি
ছিল যেন জীবন্ত ইন্জিন
হাতুড়ির তালে তালে শিল্পী
খুশিমনে কাজ করে রাত দিন
হো হো হো হো
খুশিমনে কাজ করে রাত দিন।

কালো পাথরে খোদাই জন হেনরি
জানাইছে গড়া পেশী ঝলমল
হাতুড়ীর ঘায়ে ঘায়ে পাথরে আগুন ধরে
হাতুড়ী চালানো তাঁর সম্বল
হো হো হো হো
হাতুড়ী চালানো তাঁর সম্বল।

পশ্চিম ভার্জিনিয়ার রেলের সুরঙ্গে
পাথুরে পাহার কেটে কেটে
রেল লাইন পাতা হবে হেনরির হাতুড়ীর
ঘায়ে ঘায়ে, রাত যায় কেটে
হো হো হো হো
ঘায়ে ঘায়ে, রাত যায় কেটে।

আরো পড়ুন:  আমরা তো ভুলি নাই শহীদ একথা ভুলবো না তোমার কলিজার খুনে রাঙাইলো কে

জন হেমরির চির প্রিয়-সঙ্গিনী
নাম তাঁর মেরি মেগডেলিন
সুরঙ্গের কাছে যেত কান পেতে শুনতে
হেনরির হাতুড়ীর ধিন
হো হো হো হো
হেনরির হাতুড়ীর ধিন।

সাদা সর্দার কাজ চায় আরও
স্টীম-ড্রিল করে আমদানি
আশংকা হেনরির মেশিনের কাছে বুঝি
পেশী নেবে পরাজয় মানি
হো হো হো হো
পেশী নেবে পরাজয় মানি।

আমি মেশিনের হব প্রতিদ্বন্দ্বী
জন হেনরি বলে বুক ঠুকে
স্টীম-ড্রিলের সাথে চলে হাতুড়ীর পাল্লা
কে আর বল তাকে রোখে
হো হো হো হো
কে আর বল তাকে রোখে।

সাদা সর্দার বলে হেসে হেসে
কালো নিগারের দেখ দুঃসাহস
তোর যদি জয় হয় হবে না সূর্যোদয়
দুনিয়াটা হবে তোর বশ
হো হো হো হো
দুনিয়াটা হবে তোর বশ।

জন হেনরির হাতুড়ীর ঝলকে
চমকায় বিজুলীর গতি
মানুষের সৃষ্টি দুরন্ত স্টীম-ড্রিল
মানুষের কাছে মানে নতি
হো হো হো হো
মানুষের কাছে মানে নতি।

অগ্নিগিরির হলো উত্থান
থেমে গেল হাতুড়ীর শব্দ
হেনরির জয়গান চারিদিকে ওঠে জাঁকে
হৃৎপিণ্ড তার স্তব্ধ
হায় হায় হায় হায়
হৃৎপিণ্ড তার স্তব্ধ।

জন হেনরির কচি ফুল মেয়েটি
পাথরের বুকে যেন ঝর্না
মার কোল থেকে সে পথ চেয়ে আছে তার
বাবা তার আসবে না, আর না
হায় হায় হায় হায়
বাবা তার আসবে না, আর না।

পাখীর কাকলি ভরা ভোরে
পূবালী আকাশ যবে রঙীন
হেনরির বীরগাথা বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে
চিঠি দিয়ে চলে যায় ইঞ্জিন
হো হো হো হো
চিঠি দিয়ে চলে যায় ইঞ্জিন।

প্রতি মে দিবসে গানে গানে
নীল আকাশের তলে দূর
শ্রমিকের জনগণ কান পেতে শোনো ওই
হেনরির হাতুড়ীর সুর
হো হো হো হো
হেনরির হাতুড়ীর সুর।

গানটি ইউটিউবে শুনুন এবং অনুগ্রহ করে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

নাম তার ছিল জন হেনরি, শুনুন ফকির আলমগিরের কণ্ঠে

1 thought on “জন হেনরি, নাম তাঁর ছিল জন হেনরি ছিল যেন জীবন্ত ইন্জিন, হাতুড়ির তালে তালে”

  1. বাংলা লিরিকে অনেক জায়গায় ভুল রয়েছে। দয়া করে শুধরে নেবেন

    Reply

Leave a Comment

error: Content is protected !!