জীবনে যারে তুমি দাওনি মালা, মরণে কেন তারে দিতে এলে ফুল হচ্ছে প্রণব রায়ের লেখা একটি আধুনিক বাংলা গান। গানটি ১৬ লাইনের মাঝারি আকারের আধুনিক বাংলা প্রেমের গান। গানটির প্রথম রেকর্ডিং-এ সুরকার ছিলেন শৈলেশ দাশগুপ্ত এবং শিল্পী ছিলেন সন্তোষ সেনগুপ্ত। পরবর্তীতে গানটি অনেকেই রিমেক করেন। গানটি প্রেমের ব্যর্থতা ও হতাশার একটি গান। গানটি হয়ে উঠেছে এক অনবদ্য গান।
গানটি শিশির চক্রবর্তী সংকলিত পত্রভারতী কলকাতা প্রকাশিত দ্বিতীয় মুদ্রণ ডিসেম্বর ২০১৮পাঁচদশকের আধুনিক বাংলা গানের গীতবিতান এ শুধু গানের দিন গ্রন্থের ৩৫৩ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত রয়েছে।
গানের কথা
তুমি জীবনে যারে দাওনি মালা,
মরণে কেন তারে দিতে এলে ফুল?
মুখপানে যার কভু চাওনি ফিরে,
কেন তারি লাগি আঁখি অশ্রু আকুল।।
চিরদিন যারে তুমি করেছ হেলা
হৃদয় লয়ে শুধু খেলেছো খেলা;
বিরহে তারি আজি বলো গো কেন
শূন্য লাগে এই ধরণী বিপুল।।
আমি তো ছিলাম প্রিয় তোমারই কাছে,
সেই বকুল তলে সেই চাঁদিনী রাতে,
সেদিন কেন দিলে নাকো হায়
যে মালাখানি ছিল তোমারই হাতে।
মোর যত প্রেম, মোর যত গান,
চাইনি তো কভু কোনো প্রতিদান
চিরতরে হায় যবে নিলাম বিদায়,
তুমি বুঝিলে কি গো তব হৃদয়ের ভুল।।
কবি প্রণব রায়ের জন্ম বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারে। পিতার নাম দেবকুমার রায়চৌধুরী। ছোটবেলা থেকেই প্রণবের কবিতার প্রতি ভালবাসা জন্মেছিল। “বিশ্ববন্ধু” পত্রিকায় “কমরেড” নামে একটি কবিতা লিখে কারাবরণ করেন। জেল থেকে বেরিয়ে শুরু করেন রহস্য-পত্রিকা “রোমাঞ্চ”। ছোট গল্প, কবিতা লিখেছেন “বসুমতী”, “গল্পলহরী”, “পুষ্পপাত্র”, “শিশির” প্রভৃতি পত্রিকায়। ১৯৩৪ সালে কাজী নজরুল ইসলামের সংস্পর্শে এসে তাঁর গীতিকার জীবনের শুরু। তিনি বহু “প্রথম”-এর অধিকারী! কমলা ঝরিয়ার প্রথম রেকর্ডের জন্য প্রথম গান “ও বিদেশী বন্ধু” তাঁর লেখা। ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়-এর রেকর্ডের প্রথম গান, জগন্ময় মিত্রর গাওয়া প্রথম বাংলা ব্যালাড “চিঠি” প্রণব রায়েরই লেখা।