[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Mergus merganser সমনাম: নেই বাংলা নাম: পাতি মার্গেঞ্জার ইংরেজি নাম: Common Merganser. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Anatidae গণ/Genus: Mergus, Linnaeus, 1758; প্রজাতি/Species: Mergus merganser Linnaeus, 1758[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Mergus গণে পৃথিবীতে ৫টি প্রজাতি রয়েছে এবং বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতিটির নাম হচ্ছে পাতি মার্গেঞ্জার।
বর্ণনা: পাতি মার্গেঞ্জার লম্বা দেহ ও লম্বা লেজওয়ালা ছিপছিপে হাঁস (দৈর্ঘ্য ৬৬ সেমি, ওজন ১.২ কেজি, ডানা ২৭ সেমি, ঠোঁট ৫.৩ সেমি, পা ৪.৮ সেমি, লেজ ১১ সেমি)। প্রজননকালে ছেলেহাঁসের পিঠ পাকরা ও দেহতল সাদা; মাথা ঝলমলে সবুজাভ-কালো; ঘাড় সাদা; পিঠের নিচে সাদা অংশ, কোমর, লেজউপরি-ঢাকনি ধূসর; রূপালি-বাদামি লেজ; পাটল বর্ণের আভাসহ সাদা বগল; ডানার প্রান্ত-পালক কালচে ও ডানার ভেতরের অংশ সাদা। মেয়েহাঁসের বগলে সাদা ডোরা এবং সাদাটে পেট ও ডানার মধ্য-পালক নীলচে, মধ্যে ধূসর-বাদামি ছিটা-দাগ থাকে; মাথা, ঝুঁটি ও ঘাড় ঘন তামাটে; থুতনি সাদা ও লেজ ধূসর-বাদামি। ছেলে ও মেয়েহাঁসের উভয়ের চোখ এবং পা ও পায়ের পাতা লাল; উজ্জ্বল লাল-কমলা রঙের সরু ঠোঁট; মাছ ধরার জন্য ঠোঁটের ধারে খাঁজ ও প্রান্ত বড়শির মত বাঁকানো থাকে। ৩টি উপ-প্রজাতির মধ্যে M. M. merganser বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
স্বভাব: পাতি মার্গেঞ্জার দ্রুত প্রবহমান নদী ও নালায় বিচরণ করে; ছোট দলে বা বড় ঝাঁকে দেখা যায়। স্রোতের বিপরীতে পানির নিচে ডুব দিয়ে এরা শিকার ধরে খায়; খাদ্যতালিকায় রয়েছে মাছ, জলজ পোকামাকড়, চিংড়ি; শামুক-জাতীয় প্রাণী, কেঁচো, ব্যাঙ, পাখি, খুদে স্তন্যপায়ী ও লতাপাতা। শীতের আবাসে এরা কদাচিৎ ডাকে। জুন মাসের প্রজনন ঋতুতে সাইবেরিয়া ও তিব্বতে ছেলেহাঁস ভাঙা, কর্কশ কণ্ঠে ব্যাঙের মত ডাকে: ক্রেহ-ক্রেহ …; এবং মেয়েহাঁস একটি মাত্র শব্দে ডাকে: গ্রুক..। গাছের প্রাকৃতিক গর্তে এরা আবর্জনা ও কোমল পালকের বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো পীতাভ; সংখ্যায় ৬-১৭টি; মাপ ৬.৪ × ৪.৪ সেমি। ২৮-৩২ দিনে ডিম ফোটে।
বিস্তৃতি: পাতি মার্গেঞ্জার বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখি; শীতকালে ঢাকা বিভাগের যমুনা নদীতে দেখা গেছে; সিলেট বিভাগেও থাকার একটি পুরোনো তথ্য রয়েছে। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে; এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তান, ভারত, নেপাল ও ভূটানে পাওয়া যায়।
অবস্থা: পাতি মার্গেঞ্জার বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: পাতি মার্গেঞ্জারের বৈজ্ঞানিক নাম Mergus merganser -এর অর্থ রাজহংসী (ল্যাটিন: mergus = জলার পাখি, প্লিনির উল্লেখানুসারে, merganser = রাজহংসী)।
ফটোর ইতিহাস: ১৭ জানুয়ারি, ২০১৪ তারিখে ঠাকুরগাঁয়ের পাশে টাঙ্গন নদীর তীর থেকে ফটোটি তুলেছেন রেজাউল হাফিজ রাহী। এর আগে এই পাখি দেখা গেছিল ২২ বছর আগে ৭ মার্চ ১৯৯২ সালে, এবং দেখেছিলেন P. M. Thompson বাহাদুরাবাদের নিকটে ব্রহ্মপুত্র নদীতে।
তথ্যসূত্র:
১. এম আনোয়ারুল ইসলাম ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ২৮-২৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Mergus merganser“, http://www.iucnredlist.org/details/22680492/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৩০ আগস্ট ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫১।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।