[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Mulleripicus pulverulentus সমনাম: Picus pulverulentus Temminck, 1826 বাংলা নাম: বড় মেটেকুড়ালি ইংরেজি নাম: Great Slaty Woodpecker. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Picidae গণ/Genus: Mulleripicus, Bonaparte, 1854; প্রজাতি/Species: Mulleripicus pulverulentus (Temminck, 1826)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Mulleripicus গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ৩টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত ও আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে বড় মেটেকুড়ালি।
বর্ণনা: বড় মেটেকুড়ালি বিশালদেহী কাঠঠোকরা (দৈর্ঘ্য ৫১ সেমি, ডানা ২৩.৫ সেমি, ঠোঁট ৬.৫ সেমি, পা ৪ সেমি, লেজ ১৫ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির ফ্যাকাসে-হলুদ থুতনি ও গলা এবং গলার নিচে পালকের পাটল বর্ণের আগা ছাড়া পূরো দেহ স্লেট-ধূসর; ঠোঁট ফ্যাকাসে; চোখ ঘন পিঙ্গল-বাদামি থেকে লালচে বাদামি ও চোখের গোলকের চামড়া স্লেট-রঙা; কালচে স্লেট-রঙা পা ও পায়ের পাতায় নীল বা সবুজ আভা রয়েছে। ছেলেপাখির চোখ ও ঘাড়ের মাঝামাঝি গাঢ় লাল পট্টি আছে যা মেয়েপাখিতে অনুপস্থিত। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির অনুজ্জ্বল পিঠ ও অসংখ্য ফ্যাকাসে ফুটকি ছাড়া দেখতে মেয়েপাখির মত। ২টি উপ-প্রজাতির মধ্যে M. p. harterti বাংলাদেশে আছে।
স্বভাব: বড় মেটেকুড়ালি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশস্ত পাতার চিরসবুজ ও আর্দ্র পাতাঝরা বন, শালবন ও পাহাড়ের পাদদেশের বনে বিচরণ করে; একা, জোড়ায় বা ৩-৬টি পাখির পারিবারিক দলে দেখা যায়। বনের উঁচু গাছের কাণ্ডে বা লম্বা ডালে ঠুকরে খাবার খায়; খাদ্যতালিকায় প্রধানত রয়েছে কাঠ ছিদ্রকারী পোকার পিউপা ও লার্ভা। অন্য কাঠঠোকরার মত তরঙ্গাকারে না গিয়ে অবিরাম ডানা ঝাপটিয়ে সোজা ওড়ে চলে; উচ্চ স্বরে ডাকে: ওয়িকওয়িকওয়িক ওয়িক..। মার্চ-মে মাসের প্রজনন ঋতুতে বিশালাকার গাছের কাণ্ডে গর্ত খুঁড়ে এরা বাসা বাঁধে।
বিস্তৃতি: বড় মেটেকুড়ালি বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে বিচরণ করে। হিমালয় এবং ভারত, ভুটান ও ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: বড় মেটেকুড়ালি বিশ্বে বিপদগ্রস্ত (Vulnerable) এবং বাংলাদেশে অপ্রতুল-তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। গত ২০ বছরে বা তিন প্রজন্মে এই প্রজাতির পাখির সংখ্যা দ্রুততার সাথে সর্বাধিক হ্রাস পেয়েছে। এদের আবাসস্থল ধ্বংসের কারণেও এদের চলাচলের পরিসীমা কমে গেছে এবং সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: বড় মেটেকুড়ালির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ ম্যুলারের ধুলোমাখা পাখি (mulleripicus = সলোমন ম্যুলার, ১৮৪১; ল্যাটিন : pulverulentus = ধূলিময়)।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Mulleripicus pulverulentus“, http://www.iucnredlist.org/details/22681585/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫২।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।