[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]বৈজ্ঞানিক নাম/Scientific Name: Mycteria leucocephala (Penant, 1769) সমনাম: Tantalus Leucocephalus (Penant, 1769) বাংলা নাম: রাঙা মানিকজোড়, সোনাজঙ্ঘা, ইংরেজি নাম/Common Name: Painted Stork. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য: Animalia বিভাগ: Chordata শ্রেণী: Aves পরিবার/Family: Ciconiidae বা মানিকজোড় গণ/Genus: Mycteria Linnaeus, 1758, প্রজাতি/Species: Mycteria leucocephala (Penant, 1769).[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Mycteria গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে রয়েছে মোট ৪টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত ও আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে রাঙা মানিকজোড় বা সোনাজংগা।
বর্ণনা: রাঙা মানিকজোড় লাল ঠোঁট সাদা দেহের বিশাল জলচর পাখি। এর দৈর্ঘ্য ৯৩ সে.মি., ওজন ৩ কেজি, ডানা ৫০ সে.মি., ঠোঁট ২৬.৫ সে.মি., পা ২৪.৫ সে.মি., লেজ ১৬ সে.মি.। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মুখের পালকহীন কমলা-হলুদ চামড়া প্রজনন ঋতুতে লাল হয়; ঘাড় ও দেহের পিছনের অংশ সাদা; দেহের নিচের দিক সাদা, বুকে আড়াআড়ি কালো ডোরা; ডানার প্রান্ত ও মধ্য-পালক কালো এবং ডানার কালো পালক-ঢাকনিতে সাদা ডোরা; লেজের কালচে পালকে পাটকিলে দাগ; চোখ খড়-হলুদ; লম্বা ঠোঁটের গোড়া কমলা-হলুদ, নিচুমুখে বাঁকানো আগা হালকা খয়েরি; পা ও পায়ের পাতা মেটে-বাদামি থেকে প্রায় লাল। ছেলে ও মেয়ে পাখির চেহারা অভিন্ন। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখি মলিন সাদা, মাথা, ঘাড়, ও ডানার ভেতরের পালক-ঢাকনি বাদামি।
স্বভাব: রাঙা মানিকজোড় নদীর পাড়, জলমগ্ন মাঠ, হ্রদ, জোয়ারভাটার কাদাচর, ও লবণচাষের জমিতে বিচরণ করে, সচরাচর জোড়ায় কিংবা ছোট দলে থাকে। অগভির পানিতে হেঁটে ও ঠোঁট খুলে কাদায় ঢুকিয়ে এরা খাবার খায়; খাদ্য তালিকায় রয়েছে মাছ, ব্যাঙ, চিংড়ি জাতীয় প্রাণি ও পোকা। পানির ধারেই প্রায় এক পায়ে দাঁড়িয়ে এরাবিশ্রাম করে; প্রজনন ঋতু ছাড়া সম্পূর্ণ নীরব থাকে; কিন্তুপুর্ব রাগে এরা নিচুস্বরেগোঙানোরশব্দ করে ডাকে। জুলাই-অক্টোবর মাসে প্রজননকালে ভারতে পানিতেদাঁড়ানো গাছে ডালপালা, পাতা, খড়ও নল দিয়ে বড় মাচার মতো বাসা বানিয়ে ডিমপাড়ে। ডিমগুলো বাদামি লম্বা দাগসহ অনুজ্জ্বল সাদা, সংখ্যায় ২-৫টি, মাপ৭.০x৪.৯ সে.মি.। ২৮ দিনে ছানারা বাসা ছাড়ে।
অবস্থা: বাংলাদেশের উদ্ভিদ ও প্রাণি জ্ঞানকোষে একে বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। রাঙা মানিকজোড় বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্ত এবং বাংলাদেশে মহাবিপন্ন বলে বিবেচিত। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ-প্রজাতি সংরক্ষিত।
বিস্তৃতি: বরিশাল, চট্টগ্রাম, ওঢাকা বিভাগের জলাভুমিতে দেখা গেছে বলে তথ্য রয়েছে, উনিশ শতকে সিলেটবিভাগে ছিল এমন তথ্য আছে। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা, চিন, মায়ানমার, থাইল্যাণ্ড, ওইন্দোচিনসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্বএশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
বিবিধ:রাঙা মানিকজোড়ের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ ধলামাথা-পেটরা পাখি।
দেখার ইতিহাস: ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪তে এক জোড়া রাঙা মানিকজোড় দেখা গেছে বাংলাদেশের হাকালুকি হাওরে। সেই ছবি ফেসবুকে দিয়েছিলেন প্রকৃতিবিদ তানিয়া খান, সেই ছবির ও রেকর্ডের লিংক। এছাড়াও আ ন ম আমিনুর রহমানের লেখা থেকে জানা যায় ২৩ অক্টোবর, ২০১৭ পদ্মায় প্রায় ১৪০টি রাঙা মানিকজোড়ের একটি ঝাঁক দেখা গেছিল। উক্ত লেখায় আরো জানান হয় যে ২০১৪ সাল থেকে পাখিটি বাংলাদেশে প্রতি বছর নিয়মিত দেখা যাচ্ছে।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।