দাগি নাটাবটের বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Turnix suscitator সমনাম: Tetrao suscitator Gmelin, 1789 বাংলা নাম: দাগি নাটাবটের ইংরেজি নাম: Barred Buttonquail (Common Bustard-Quail, Barred Bustard-Quail) জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Turnicidae গণ/Genus: Turnix, Bonnaterre, 1791; প্রজাতি/Species: Turnix suscitator (Gmelin, 1789)[/otw_shortcode_info_box]

ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Turnix বা নাটাবটের গণে রয়েছে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৩টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ১৫টি প্রজাতি। বাংলাদেশের প্রজাতি তিনটি হচ্ছে; ১. দাগি নাটাবটের, ২. ছোট নাটাবটের ও ৩. হলদেপা নাটাবটের। আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে দাগি নাটাবটের।

বর্ণনা: দাগি নাটাবটের ছোট ভূচর পাখি (দৈর্ঘ্য ১৫ সেমি, ওজন ৫৫ গ্রাম, ডানা ৪ সেমি, ঠোঁট ১.৫ সেমি, পা ২.৩ সেমি, লেজ ৩.৫ সেমি)। মেয়েপাখি ছেলেপাখির চেয়ে বেশি রঙ্গীন। ছেলেপাখির পিঠ লালচে-বাদামি ও কালো; ডানার পালক-ঢাকনিতে খাড়া, কালো ও ঈষৎ পীত বর্ণের ডোরা রয়েছে; থুতনি ও গলা সাদাটে; বুক ও ঘাড়ের পাশে পীতাভ ও কালো ডোরা; বগলে কালো ডোরাসহ দেহতল উষ্ণ কমলা-লাল। মেয়েপাখির থুতনি, গলা ও বুকের ঠিক মাঝখানটা কালচে; বুকের পাশ ও তলদেশে কালো ও পীতাভ ডোরা থাকে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের চোখ সাদা বা হলদে; ঠোঁট নীলচে-স্লেট রঙ, গোড়া ঘন বাদামি; পা ও পায়ের পাতা সীসার মত ধূসর। ১৮টি উপ-প্রজাতির মধ্যে T. s. plumbipesT. s. bengalensis বাংলাদেশে পাওয়া যায়।

স্বভাব: দাগি নাটাবটের ক্ষুদ্র ঝোপ ও জঙ্গলসহ তৃণভূমি, বনপ্রান্তও খামারেবিচরণ করে; একা অথবা জোড়ায় থাকতে দেখা যায়। এরা মাটিতে হেঁটে ঝরাপাতাউল্টে খাবার খুঁজে বেড়ায়; খাদ্যতালিকায় রয়েছে বীজ, শস্যদানা, কচিকাণ্ড, উইপোকা ও পিঁপড়া। এরা সাধারণত একই জায়গায় দিনের পর দিন খাবার খেতে আসে; উড়লে পাখায় বোঁ বোঁ শব্দ হয়; হঠাৎ উঁচু স্বরে ডেকে ওঠে: ঢুরর-র-র-র-র …। জুন-অক্টোবর মাসে প্রজনন ঋতুতে ঘাসবন, ঝোপ-জঙ্গল বা শস্যক্ষেতেরমাটিতে ঘাস দিয়ে বাসা বানিয়ে এরা পাড়ে। ডিমগুলো ধূসর-সাদা ছোট দাগ ওফুসকুড়িসহ লালচে-বাদামি বা কালচে-বেগুনি; সংখ্যায় ৪টি। ১৫দিনে ডিম ফোটে।পুরুষপাখি ডিমে তা দেওয়া থেকে শুরু করে গৃহস্থালির যাবতীয় কাজ একা করে।

আরো পড়ুন:  রাজ বটেরা বিশ্বে বিপদমুক্ত ও বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি

বিস্তৃতি: দাগি নাটাবটের বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের বনের ধারে এবং গ্রামে পাওয়া যায়। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনসহ কেবল এশিয়া মহাদেশে এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

অবস্থা: দাগি নাটাবটের বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশে অপ্রতুল-তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]

বিবিধ: দাগি নাটাবটের পাখির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ সতর্ক তিতির (ল্যাটিন: coturnix = তিতির, suscitator = সতর্ক )।

তথ্যসূত্র:

১. ইনাম আল হক ও সুপ্রিয় চাকমা, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৩৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।

২. “Turnix suscitator“, http://www.iucnredlist.org/details/22680549/0,  The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮।

৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫১।

Leave a Comment

error: Content is protected !!