বর্ণনা: গিলি পুঁটি পুঁটির দেহ লম্বা ও মাঝারি চ্যাপ্টা। মুখের আকার ছোট, কিছুটা তির্যক। উপরের চোয়াল তুলনামূকভাবে কিছুটা দীর্ঘ থাকে। স্পর্শী অনুপস্থিত। বুকের পাখনা তুন্ড ছাড়া প্রায় মাথার দৈর্ঘ্যের সমান। শ্রোণীপাখনাগুলো পৃষ্ঠপাখনার বিপরীত দিক থেকে ঠিক নিচে থেকে শুরু হয়। এদের দেহ লালচে বাদামী বর্ণের হয়। লেজের উপরে একটা কালো ডোরা থাকে যা পুচ্ছপাখনার গোড়ায় সামান্য সামনে অবস্থিত, অন্যটি কম সুস্পষ্ট এবং পুচ্ছপাখনা পিছনের দিকে অবস্থিত। পৃষ্ঠপাখনার সামনের দিকে গোঁড়ায় একটা বড় গাঢ় কালো দাগ থাকে।)।
বসবাস: গিলি পুঁটি প্রজাতির মাছ খুব শান্তিপ্রিয় এবং লাজুক প্রকৃতির। যে সমস্ত পুকুর মানুষ ব্যবহার করে সেখানে চাষ করা সুবিধাজনক। এরা কাদার জীব , পোকামাকড় প্রভৃতি খায় । পুরুষ ও স্ত্রী মাছ দেখতে প্রায় একই রকম তবে পুরুষ মাছের দেহে যে কালো দাগ থাকে সেটা কিছুটা উজ্জ্বল। এই মাছ নদী এবং স্থির পানির জলাশয়ে কাদা বা বালির উপর বসবাস করে।
বিস্তৃতি: ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ পর্যন্ত এই মাছের বিস্তৃতি।
চাষাবাদ: এই মাছটি অ্যাকুরিয়াম মাছ হিসেবে চাষ করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই মাছ রপ্তানি করা হয় এবং অ্যাকুরিয়াম চাষীদের নিকটও বেশ জনপ্রিয়। এই মাছের উল্লেখয্যোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এরা ক্ষুদ্রাকৃতির ,সরু এবং দেহের উপরে কালো দাগগুলো অদ্ভুতভাবে ছড়ানো থাকে।
বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ: এই মাছ সহজেই পাওয়া যায় তবে মে থেকে অক্টোবর মাসেই সর্বাধিক দেখা যায় (Rahman, 2005)। IUCN Bangladesh (2000) এর তালিকায় এই প্রজাতির তথ্যের অভাবের কথা উল্লেখ থাকে। আইইউসিএনের তথ্য অনুসারে এটি বৈশ্বিকভাবে বিপদমুক্ত মাছ।
মন্তব্য: এই মাছ দক্ষিন এশিয়ায় ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। একই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যের মধ্যে বর্ণ বিন্যাসে যে ভিন্নতা থাকে তা প্রায়ই বিষম প্রজতির অঙ্গসংস্থানিক ও পরিমাণগত বৈশিষ্ট্যের অনুরুপ হওয়ায় এদের পৃথকীকরণে খুব অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এই প্রজাতির মাছ তেমন বড় হয়না কিন্তু এদের প্রাচুর্য্যতা বেশি হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ । এই মাছ দৈর্ঘ্যে প্রায় ৪ সেমি পর্যন্ত হয়ে থাকে (Talwar and Jhingran, 1991)।
তথ্যসূত্র:
১. এ কে আতাউর রহমান, ফারহানা রুমা (অক্টোবর ২০০৯)। “স্বাদুপানির মাছ”। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ এবং অন্যান্য। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃ: ৯৬–৯৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।