ইন্দো-চীনা দাঁড়াশ সাপ এশিয়ার আবাসিক ও বাংলাদেশের দুর্লভ সাপ

সাপের প্রজাতি

ইন্দো-চীনা দাঁড়াশ সাপ

দ্বিপদ নাম: Ptyas korros, (Schlegel, 1837) সমনাম: Coluber korros Schlegel, 1837; Ptyas korros Cope, 1861; Zamensis korros Boulenger, 1890; Ptyas korros Stejneger, 1907.; বাংলা নাম: ইন্দো-চিনা দাঁড়াশ সাপ, দাঁড়াশ সাপ, দারাজ সাপ, ডাঁড়াশ সাপ, ধারাজ সাপ, ইংরেজি নাম: Indo-Chinese Rat Snake.
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ রাজ্য: প্রাণী বিভাগ: Chordata উপপর্ব: Vertebrata শ্রেণী: Reptilia বর্গ: Squamata উপবর্গ: Serpentes পরিবার: Colubridae গণ: Ptyas, Fitzinger, 1843, প্রজাতি: Ptyas korros, (Schlegel, 1837);

ভূমিকা: ইন্দো-চীনা দাঁড়াশ সাপ বা চীনা দাঁড়াশ সাপ হচ্ছে কলুব্রিডি পরিবারের টিয়াস গণের একটি সরীসৃপ প্রজাতি। বাংলাদেশের সাপের তালিকায় এই গণে বাংলাদেশে রয়েছে ৩টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতেও রয়েছে এই ১৩টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত এবং আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটি হচ্ছে ইন্দো-চিনা দাঁড়াশ সাপ।

ইন্দো-চীনা দাঁড়াশ সাপের বিবরণ

ইন্দো-চিনা দাঁড়াশ সাপ-এর গ্রীবা দেহ থেকে পৃথক; দেহের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬৮ সেমি, সদ্য পরিস্ফুটিত সাপের দৈর্ঘ্য ৩৬-৩৮ সেমি। লেজের দৈর্ঘ্য দেহের দেহের মােট দৈর্ঘ্যের এক তৃতীয়াংশ বা কিছুটা বেশি। পিউপিল গােলাকার, বাইরের বলয় কালাে রঙের। দেহের সামনের অংশ জলপাই-সবুজ বা হলদে বাদামী রঙের। দেহের পিছনের অংশ কালাে বাদামী রঙের; আঁইশের কিনারা কালাে রঙের। উদর হলদে সাদা, প্রান্তভাগ কখনাে কালাে রঙের। অপ্রাপ্ত বয়স্ক সাপ জলপাই সবুজ রঙের এবং হলুদ বা সাদা রঙের আড়াআড়ি ব্যান্ড থাকে। Hemipenis ১০-১২ তম পুচ্ছ প্লেট পর্যন্ত প্রসারিত (Smith, 1943)।

আঁইশের বিন্যাস: আঁইশ মসৃণ, দেহের পিছনের আঁইশ স্পষ্ট শিরযুক্ত এবং ১৫:১৫ (কখনাে ১৭ বা ১৭): ১১ সারিতে সাজানাে থাকে। অঙ্কীয় আঁইশের সংখ্যা ১৬০-১৮৮টি, পায়ুর আঁইশ বিভক্ত, নিম্ন পুচ্ছের আঁইশের সংখ্যা ৭ বা ৮টি; ৩য় এবং ৪র্থ টি এবং ৫ম টি চোখের কাছাকাছি অবস্থিত। প্রি-অকুলার ২টি, পােষ্টঅকুলার ২টি, নিম্ন ল্যাবিয়াল ১০টি, লােরিয়াল ২বা ৩টি (Gunther, 1864; Parvin, 1999; Whitaker and Captain, 2004)

আরো পড়ুন:  তামাটে মাথা দুধরাজ সাপ হচ্ছে এশিয়ার আবাসিক এবং বাংলাদেশের সুলভ সাপ

স্বভাব ও আবাসস্থল: এই প্রজাতির সাপ বন-জঙ্গল ও বনজঙ্গলের সন্নিকটে মানুষের আবাসস্থলের চারপাশে বাস করে। এরা দিবাচর এবং বেশ সক্রিয়ভাবে স্থলভাগে বিচরণ করে। এরা ডিম পাড়ে এবং স্ত্রী সাপ জুন-জুলাই মাসে ২-৪টি ডিম পাড়ে (Whitaker and Captain, 2004)।

বিস্তার: এই প্রজাতির সাপ কৃষিজ আবাদী জমি এবং গুদামজাত ঘরের ইঁদুর দমনে সাহায্য করে। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার, কম্বোডিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

বাস্তুতান্ত্রিক ভূমিকা: এই প্রজাতির সাপ প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রিডেটর হিসেবে কাজ করে।

অবস্থান: বাংলাদেশে সচরাচর দেখা যায় না (Parvin, 1999; Khan, 2004)।

মন্তব্য: এই প্রজাতির সাপ কিছুটা দেশি দাঁড়াশ সাপের (বৈজ্ঞানিক নাম: Ptyas mucosus) -এর মতাে।

তথ্যসূত্র:

১. সুপ্রিয় চাকমা, জিয়া উদ্দিন আহমেদ (প্র. সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: উভচর প্রাণী ও সরীসৃপ, খণ্ড: ২৫ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ১৫৮।

Leave a Comment

error: Content is protected !!