ভূমিকা: ক্যান্টরের কালোমাথা সাপ কলুব্রিডি পরিবারের সিবিনোফিস গণের একটি সাপের প্রজাতি। বাংলাদেশের সাপের তালিকায় এই গণে বাংলাদেশে রয়েছে ২টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে রয়েছে এই ৯টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত এই গণের দুটি প্রজাতি হচ্ছে ক. ক্যান্টরের কালোমাথা সাপ এবং খ. ডুমেরিলের কালোমাথা সাপ। আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটি হচ্ছে ক্যান্টরের কালোমাথা সাপ।
বর্ণনা: ক্যান্টরের কালোমাথা সাপ-এর দেহ ছােট, ৯ মিটার লেজ সহ দেহের দৈর্ঘ্য ৩০ সেমি। দেহের পৃষ্ঠীয়ভাগ হলদে রঙের ঈষৎ বাদামী রঙের; শিরদাঁড় বরাবর সিরিজে ছােট কালাে ফোঁটা থাকে; দেহের পার্শ্বভাগ বাদামী বা ধূসর রঙের, পৃষ্ঠীয়ভাগ থেকে কালাে রেখার মাধ্যমে পৃথক থাকে; মাথা ও nape গাঢ় বাদামী বা কালাে রঙের, মাথার সামনের অংশ মার্বেলের মতাে হলুদ ফেঁটা থাকে এবং মাথার পিছনের পার্শ্বদেশে বড়, লম্বাটে, হলদে ডিম্বাকৃতি প্যাচ থাকে; নুকালএ সুস্পষ্ট কালাে দাগ থাকে এবং পিছনের দিকে হলদে bordered (সীমানা) থাকে। ঠোঁট হলুদ রঙের, কালাে ফোঁটা থাকে। উদরের আঁইশ, বাহিরের কিনারার দিকে কালাে ফোঁটা থাকে।
ক্যান্টরের কালোমাথা সাপ-এর আঁইশের বিন্যাস: আঁইশ ১৭ সারি; অঙ্কীয় আঁইশের সংখ্যা ১৯৭২৩৮ টি; পায়ুর আঁইশ বিভক্ত; নিম্ন-পুচ্ছের আঁইশের সংখ্যা ৫৬-৭০টি। রােস্টাল গভীরতার তুলনায় দ্বিগুণ প্রশ্বস্ত নয়; আন্তঃনাসিকার সঁচার প্রিন্টালের চেয়ে ছােট; ফন্টাল তুন্ডের তুলনায় লম্বা এবং প্যারাইটালের তুলনায় ছােট; লােরিয়াল ছােট এবং গভীরতার তুলনায় লম্বা বা অনুপস্থিত; প্রিঅকুলার ১টি, পােষ্টঅকুলার ২টি, উভয়টি প্যারাইটালের সন্নিকটে অবস্থিত: টেম্পােরাল ১+১ বা ১+২+১; সুপ্রাল্যাবিয়াল ৭বা ৮টি, ৩য় এবং ৪র্থ টি বা ৪র্থ বা ৫ম টি চোখের কাছাকাছি অবস্থিত; ৪র্থ নি-ল্যাবিয়াল থুতনির শিল্ডের সন্নিকটে অবস্থিত যা পিছনেরটির চেয়ে বড় (Boulenger, 1890; Smith, 1943)।
স্বভাব ও আবাসস্থল: ক্যান্টরের কালোমাথা সাপ দিবাচর। এরা খাদ্য হিসেবে অঞ্জন, ব্যাঙ, কীটপতঙ্গ, এবং সাপ গ্রহণ করে। এদের প্রাকৃতিক স্বভাব সম্পর্কে তেমন কিছু জানা নেই তবে স্ত্রী সাপ একটি গুচ্ছে ৬টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে (Das, 2002)।
বিস্তার: ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভুটান (Das, 2002) এবং হিমালয়ের পশ্চিম অংশ। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে পাওয়া যায় (IUCN-Bangladesh, 2003)।
অবস্থান: এই প্রজাতির সাপ সম্পর্কে বাংলাদেশে তথ্য উপাত্ত যথেষ্ট নয় (IUCN-Bangladesh, 2003)।
আলোকচিত্রের ইতিহাস: এই লেখায় ব্যবহৃত ক্যান্টরের কালোমাথা সাপের ছবিটি Ashahar alias Krishna Khan-এর তোলা।
তথ্যসূত্র:
১. এম কামরুজ্জামান, জিয়া উদ্দিন আহমেদ (প্র. সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: উভচর প্রাণী ও সরীসৃপ, খণ্ড: ২৫ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ১৬১-১৬২।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।