উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাগ (ইংরেজি: Classification of Plants) হচ্ছে বিশাল উদ্ভিদ জগতকে সহজ উপায়ে জানার জন্য বিজ্ঞানীদের বিন্যাস যাতে উদ্ভিদ জগতকে ভিন্ন ভিন্ন দলে বা শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। মূলত, বাস্তুতন্ত্রের সমস্ত জীবকে তাদের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে রাজ্য এবং উপ-রাজ্যে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। একইভাবে, উদ্ভিদগুলিকেও কিছু বৈশিষ্ট্যযুক্ত অবয়বের ভিত্তিতে বিভিন্ন উপ-রাজ্যে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
আমাদের চিরচেনা এই বিশাল পৃথিবীকে বৈচিত্রময় করে তুলেছে নানা আকার, আকৃতি ও বর্ণের গাছ-পালা। আবহমানকাল ধরে পৃথিবীতে জীবনের যে বিচিত্র প্রবাহ চলে আসছে, তার মূলে রয়েছে সবুজ উদ্ভিদের বিরাট অবদান। আমাদের জীবনের মৌলিক চাহিদার সবগুলি পূরণ করে থাকে উদ্ভিদ। কাজেই উদ্ভিদ জগৎ সম্বন্ধে আমাদের সঠিক ধারণা থাকা আবশ্যক। কিন্তু প্রকৃতি জগতের এই অসংখ্য উদ্ভিদের প্রত্যেকটিকে আলাদা আলাদাভাবে জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এই বিশাল উদ্ভিদ জগতকে সহজ উপায়ে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা ভিন্ন ভিন্ন দলে বা শ্রেণিতে ভাগ করেছেন।
উদ্ভিদের সাধারণ শ্রেণিবিন্যাস নির্দিষ্ট মানদণ্ডে করা হয় যেমন: উদ্ভিদসংক্রান্ত ধরন (Botanical type) এবং ভৌগলিক বা পরিবেশগত সম্প্রদায় (Geographical or ecological communities) অনুসারে।
উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাগের ভিত্তি
নানাভাবে উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস বা শ্রেণিবিভাগ করা যেতে পারে। ধান, মটর, ছোলা, কলা এসব আপনাদের অতি পরিচিতি উদ্ভিদ। এদের জীবনকাল এক বছর। এ জন্য এদেরকে একবর্ষজীবী উদ্ভিদ বলা হয়। মূলা, গাজর, ফুলকপি ইত্যাদি দ্বি-বর্ষজীবী উদ্ভিদ। আম, কাঁঠাল, বট, তাল ইত্যাদি অনেক উদ্ভিদ রয়েছে যারা বহু বছর বেঁচে থাকে। এসব উদ্ভিদকে বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ বলে। উদ্ভিদের এ শ্রেণি বিভাগ করা হয়েছে কোন উদ্ভিদ কত বছর বাঁচে তার ভিত্তিতে।
আকার-আকৃতির উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদ জগতকে বিরুৎ (ছোট, নরম উদ্ভিদ যেমন- ধান, সরিষা, মরিচ), গুল্ম (ছোট গাছ যেমন ডালিম, হাছনা হেনা, কামিনী) এবং বৃক্ষ (কাষ্ঠল বড় গাছ, শাল, সেগুন, তাল) এ তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। দেহের পুষ্টি সাধনের উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদকে স্বভোজী ও পরভোজী এই দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। আমাদের চেনা সব সবুজ উদ্ভিদের কোষে ক্লোরোফিল রয়েছে। এ জন্য এরা নিজের খাদ্য নিজে প্রস্তুত করতে পারে। এগুলো হলো স্বভোজী। আবার ব্যাঙের ছাতা, ইষ্ট, রুটির ছত্রাক এসব উদ্ভিদের দেহে ক্লোরোফিল নেই বলে তারা খাদ্যের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল। এদেরকে বলে পরভোজী উদ্ভিদ। এ ছাড়া ফুলের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদকে সপুষ্পক ও অপুষ্পক এই দুই দলে বিভক্ত করা হয়েছে। শৈবাল, ব্যাঙের ছাতা, মস এবং ফার্ণ এগুলো অপুষ্পক উদ্ভিদ। আম, জাম, ধান, নারকেল এগুলো সপুষ্পক উদ্ভিদের অন্তর্ভুক্ত।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।
What a good article, Thanks a lot.