সপুষ্পক উদ্ভিদ (ইংরেজি: flowering plants বা Angiospermae বা Magnoliophyta) হচ্ছে ভূমিজ উদ্ভিদের সবচেয়ে বিচিত্র গ্রুপ যেগুলোর ফুল হয়। সপুষ্পক উদ্ভিদে ৬৪টি বর্গ, ৪১৬টি পরিবার, প্রায় ১৩,০০০ পরিচিত গণের অধীনে প্রায় আনুমানিক ৩০০,০০০ প্রজাতি রয়েছে। নগ্নবীজী উদ্ভিদের মতোই সপুষ্পক উদ্ভিদেরাও বীজ উৎপাদন করে।
আম, জাম, কাঁঠাল, তাল, নারকেল প্রভৃতি বহু উদ্ভিদ আমাদের চারপাশে রয়েছে। এসব উদ্ভিদের ফুল হয় এবং এদের দেহকে মূল কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায়। সপুষ্পক উদ্ভিদ দুই প্রকার, যথা- নগ্নবীজী উদ্ভিদ ও গুপ্তবীজী উদ্ভিদ।
নগ্নবীজী উদ্ভিদ: যে সকল সপুষ্পক উদ্ভিদের পুষ্পে গর্ভাশয় নেই বিধায় ফল হয় না এবং বীজ নগ্ন বা উন্মুক্ত থাকে, সে সব উদ্ভিদকে নগ্নবীজী উদ্ভিদ বলে। সপুষ্পক উদ্ভিদের মধ্যে নগ্নবীজী উদ্ভিদ অপেক্ষাকৃত নিম্ন শ্রেণির। এসব উদ্ভিদে ফুল হয় বটে কিন্তু কোনো ফল হয় না। এসব উদ্ভিদের বীজ বাইরে থেকে দেখা যায়। যেমন- সাইকাস, পাইনাস।
গুপ্তবীজী উদ্ভিদ: যেসব উদ্ভিদে ফুল হয়, ফল হয় এবং বীজ ফলের মধ্যে আবৃত অবস্থায় থাকে তাকে গুপ্তবীজী উদ্ভিদ বলে। সপুষ্পক উদ্ভিদের মধ্যে এরা সর্বাপেক্ষা উন্নত শ্রেণির। আম, জাম এসব গুপ্তবীজী উদ্ভিদ। গুপ্তবীজী উদ্ভিদ আবার দুই প্রকার যথা- একবীজপত্রী উদ্ভিদ ও দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ।
একবীজপত্রী উদ্ভিদ: যেসব উদ্ভিদের বীজে একটি মাত্র বীজপত্র থাকে তাকে একবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে। সতর্কতার সাথে একটি ধানের খোসা ছাড়িয়ে চাল বের করুন। লক্ষ করুন চালের এক কোণে একটি আলাদা অংশ রয়েছে, একে ভ্রূণ বলে। এই ভ্রূণ থেকেই চালের চারা গজায়। এতে রয়েছে পাতলা পর্দার মত একটি বীজপত্র। ধানের চাল কিন্তু বীজপত্র নয়। খাদ্য সঞ্চয়ের জন্য একটি আলাদা অংশ, একে শস্য বলে। গম, ভূট্টা, তাল, নারকেল এসবই একবীজপত্রী উদ্ভিদ।
দি বীজপত্রী উদ্ভিদ: যে সব উদ্ভিদের বীজে দুইটি বীজপত্র থাকে, তাদের দ্বি-বীজপত্রী উদ্ভিদ বলে। কয়েক ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা একটি ছোলাবীজ নিয়ে এর উপরের খোসা ছাড়িয়ে ফেলুন। দুইটি বীজপত্র দেখতে পাবেন। আম, জাম, সীম, চিনাবাদাম এসব উদ্ভিদের বীজেই এরূপ দুইটি বীজপত্র রয়েছে।
সপুষ্পক উদ্ভিদ আমাদের প্রভূত উপকার সাধন করে থাকে। এক কথায় বলতে গেলে খাদ্য, বস্তু, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সব কিছুর জন্যই আমরা সাধারণত সপুষ্পক উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।