ঢোলপাতা বা বাংলা ঢোলপাতা বা দেশি কানশিরে বা কানছিঁড়ে বা কানাইবাঁশি (বৈজ্ঞানিক নাম: Commelina benghalensis) হচ্ছে উষ্ণমণ্ডলীয় এশিয়া ও আফ্রিকার উদ্ভিদ। এরা বহুবর্ষজীবী এবং ব্যাপক ভাবে তার আদি বাস ছেড়ে হাওয়াই, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নর্থ আমেরিকাতে বিস্তার লাভ করেছে। এই উদ্ভিদে নীল বর্ণের তিন পাপড়ির ফুল ফোটে। এদের পাতা লম্বাটে এবং পাতায় হুল থাকে। বসন্তের শুরুতে ফুল আসে যা শেষ অব্দি থাকে।
এটির আদি নিবাস এবং পরবর্তীকালে বিস্তৃত এলাকা-উভয় স্থানীয় পরিসীমায় এটিকে সাধারণত একটি আগাছা, কখনও কখনও গুরুতর আগাছা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি ফেডারেল ক্ষতিকর আগাছা তালিকায় উপরে স্থান পেয়েছে। এটি এশিয়াতে ধান চাষের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থী আগাছা বলে মনে করা হয়। সাব-সাহারান আফ্রিকা, ভারত, শ্রীলংকা এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অধিকাংশ দেশেই এটি চা এবং কফি, কাসাভা এবং চিনাবাদামসহ অন্যান্য শস্যের একটি গুরুতর আগাছা হিসেবে বিবেচিত।
ব্যবহার: এই গুল্ম লতাটির বিশেষ ঔষধি গুণ আছে। চায়নাতে একে ভেষজ ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এটি Diuretic, febrifuge and anti-inflamatory হিসাবে কাজ করে। এর এলকালয়েড মানুষের জন্য উপকারি। ইহা ল্যাক্সেটিভ, স্কিনের ইনফ্লামেশান সারাতে ও কুষ্ঠ রোগে ব্যবহার হয়। কারও হাত-পা কেটে গেলে সাথে সাথে এই লতার ডগা ভেঙে পানির মত যে রস বা আঠা পাওয়া যাবে তা কাটা স্থানে লাগিয়ে দিলে এক মিনিটের মধ্যে কাটা স্থান জোড়া লেগে যায়। গ্লু এবং এন্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। এর পাতা পিষে আগুনে পোড়া অংশে প্রলেপ দিলে চমৎকার ফলাফল পাওয়া যায়। এর মূলের রস বদহজমের জন্য খুবই উপকারী। কানের ইনফেকশনে এবং ব্যথায় এর দুফোটা রস কানে দিলেই উপকার বোঝা যায়। শৈশবে চোখে অঞ্জন হলে এই গাছের লতা টিপে রস লাগিয়ে দিলে দুদিনেই সেরে যায়।
পাকিস্তানিরা একে পশু খাদ্য ও সবজি হিসেবে ভক্ষণ করে থাকে। নেপালীয় জনগণ এর কচি পাতা সবজি হিসেবে ভক্ষণ করে। ইন্ডিয়াতে আকালের খাবার হিসাবে এর কদর অনেক।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।