ছায়া-এর বর্ণনা:
ছায়া ঋজু বা অর্ধঋজু, একবর্ষজীবী বা বহুবর্ষজীবী বীরুৎ, কখনও নিম্নাংশ কাষ্ঠল, ১৫-৩০ সেমি উঁচু, কাণ্ড ও শাখা প্রশাখার প্রস্তুদে গোলাকার, সরেখ, শক্ত, কম বা বেশী সাদাটে বা হলুদাভ, ঘন লোমাবৃত, কম বা বেশি খসখসে রোমশ, খুব বিরলভাবে ঘন ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত বা শুভ্রবৎ, মধ্যসন্ধি সাধারণত ২ সেমি অপেক্ষা খর্বতর।
পত্র একান্তর, ০.৬-৫.০ X ০.৩-৩.০ সেমি, উপবৃত্তাকার বা বিডিম্বাকার বা কীলকাকার বা সংকুচিত পীঠ হতে উপগোলাকার, অতিখর্ব শিখর দ্বারা সূক্ষ্মাগ্র বা কিছুটা সুলগ্ন, সাধারণভাবে ঘন লোমাবৃত বা নিমপৃষ্ঠ ধুসর এবং উপরিভাগ আরও হাক্কা, কখনও উপর পৃষ্ঠ অধমসৃণ, বিরলভাবে পুরোটাই মসৃণ। পুষ্পবিন্যাস অবৃন্তক কাক্ষিক শীর্ষ বা স্পাইক, ০.৪-১.৬ X ০.২-০.৪ সেমি, অপসারী, বেলনাকার, রেশমী, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ২-৪টি, একসাথে, ছড়ানো বা সাধারণত গোলাকার শীর্ষের সাথে তির্যকভাবে ঋজু। মঞ্জরীপত্র এবং মঞ্জরীপত্রিকা অবতল, বদ্বীপসদৃশ ডিম্বাকার থেকে আয়তাকার-ডিম্বাকার, তীক্ষ্ণ, ঝিল্লিময়, সাদা, বহিঃস্থভাবে রোমশ, স্থায়ী।
পুষ্পপুটে ৫টি পুষ্পপুটাংশ, পুষ্পপুটাংশ ডিম্বাকার-আয়তাকার, বাইরের ২টি স্বচ্ছ, বহিঃধাবন্ত শিরা দ্বারা আকস্মিকভাবে সংকুচিত শীর্ষ হতে স্পষ্ট সূক্ষ খর্বাগ্র, অপর ৩টি কিছুটা খর্বাকৃতি ও সরু, সবুজ মধ্যশিরা বিশিষ্ট, সূক্ষ্মাগ্র। পুংকেশর ৫টি, পুষ্পপুটের প্রায় অর্ধেক লম্বা, পাতলা। গর্ভদণ্ড এবং দুটি অপসারী খর্ব গর্ভমুণ্ড পুষ্পেদগমের সময় দৈর্ঘ্যে গর্ভাশয়ের অর্ধসমান হয়। ফল অ্যাকিন জাতীয়, প্রশস্তভাবে ডিম্বাকার, সূক্ষ্মাগ্র, প্রায় ১ মিমি ব্যাসবিশিষ্ট। বীজ বৃক্কাকার, কালো, উজ্জ্বল, কেন্দ্রে মসৃণ, প্রান্ত জুড়ে অস্পষ্টভাবে জালিকাকার। ফুল ও ফল ধারণ এপ্রিল-জুলাই। ক্রোমোসোম সংখ্যা: n = ১৬ (Fedorov, 1969)।
আরো পড়ুন: ছায়া বিরুৎ-এর ভেষজ গুণাগুণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি
ছায়া-এর বিস্তৃতি:
ভারতের উচ্চতর অংশ, মধ্যপ্রাচ্য, গ্রীষ্মমণ্ডলী আফ্রিকা থেকে এশিয়া, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন এবং পাপুয়া নিউগিনি। বাংলাদেশের ইহা ঢাকা জেলা থেকে নথিভূক্ত করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:
মূত্রবর্ধক, কোমলকারক, কৃমিনাশক হিসেবে এ উদ্ভিদ ব্যবহৃত হয়। এবং আবার পাথরি গঠন, মুত্রকৃচ্ছতা, মাথা ধরা, কাশি এবং আকস্মিক ফোলায় ব্যবহৃত হয় (Kirtikaar et al., 1935)।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৬ষ্ঠ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ছায়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে ছায়া সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১. এ বি এম রবিউল ইসলাম (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৮৯-৯০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Ranjithsiji
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।