চীনা বিষকচু দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ভেষজ বিরুৎ

বিরুৎ

চীনা বিষকচু

বৈজ্ঞানিক নাম: Alocasia cucullata (Lour.) G. Don in _Sweet, Hort. Brit. ed. 3: 631 (1839) (‘cucullatum’). সমনাম: Arun cuCallatum Lour. (1790), Colocasia cucullata (Lour.) Schott ex Kunth (1841). ইংরেজি নাম: চাইনিজ টারো। স্থানীয় নাম: চীনা বিষকচু।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Monocots. বর্গ: Alismatales. পরিবার: Araceae. গণ: Alocasia, প্রজাতি: Alocasia cucullata.

ভূমিকা: চীনা বিষকচু (বৈজ্ঞানিক নাম: Alocasia cucullata) অরণ্যে জন্মানো ভেষজ বিরুৎ। বাংলাদেশে এই কচু পাওয়া যায় এবং আদিবাসীরা ভেষজ ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করে।

চীনা বিষকচু-এর বর্ণনা:

চিরহরিৎ বীরুৎ, ঋজু, বায়বীয় কান্ড সুস্পষ্ট, দৃঢ়, ৫০-৮০ X ৫-১৫ সেমি, শাখান্বিত, ভূমি বক্রধাবক সমৃদ্ধ। পাতা বহু, বৃন্ত ৭৫ সেমি, ৩০ সেমি পর্যন্ত কান্ডবেষ্টিত, সবুজ, পত্রফলক প্রায় চমবৎ, সামান্যযুক্ত (১-২ সেমি) সমলম্বা ও পাশযুক্ত, পশ্চাৎ খন্ড খাটো, সম্মুখ অংশ সবুজ, নিম্নাংশ ফ্যাকাশে সবুজ, ডিম্ব-তাম্বুলকার, সূক্ষ্মাগ্র, ভূমি অস্পষ্ট তাম্বুলাকার, প্রতি পার্শ্বে প্রাথমিক শিরা ৪ টি, বৃন্তোগত।

পুষ্পবিন্যাস একল, কাক্ষিক, মঞ্জরীদন্ড ৩৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা, চমসা ১৫ সেমি, সবুজ, নিমের ৫-৬ সেমি গাঢ় সবুজ, পুষ্পফলক নৌকাকৃতি, প্রান্ত সংবর্ত, স্পেডিক্স ১২ সেমি, গর্ভপত্রধারী অংশ ২ সেমি, বন্ধ্যা অংশ ৩.৫ সেমি, পুংকেশর ধারী অংশ ৩ সেমি, শীর্ষ উপাঙ্গ ৪ সেমি সাদা। ফল বেরি, অর্ধবর্তুলাকার, ৬-৮ মিমি ব্যাসযুক্ত, ১ ডিম্বক বিশিষ্ট।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৮ (Petersen, 1989)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

অরণ্যের ছায়াযুক্ত ও সেঁতসেঁতে স্থান এবং গ্রামের ঝোপ-ঝাড়। ফুল ও ফল ধারণ মে-জুলাই। বীজ ও কন্দের মাধ্যমে প্রজনন হয়।

বিস্তৃতি: দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই জন্মে।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার:

উদ্ভিদটিকে চূর্ণ করে লেই তৈরি করা হয় যা বিষধর সাপের কামড়ের স্থান, ফোড়া, বাত ও সন্ধিবাত রোগে বাহ্যিক প্রয়োগ করার প্রচলন রয়েছে। (Heng, 1979)। বাংলাদেশের আদিবাসিরা গাছটিকে ভেষজ রূপে ব্যবহার করে।

আরো পড়ুন:  মিষ্টি আলু নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে লতান বীরুৎ

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ১১ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) চীনা বিষকচু প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে চীনা বিষকচু সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. হোসনে আরা (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ১১, পৃষ্ঠা ২৮-২৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: David J. Stang

Leave a Comment

error: Content is protected !!