আকাশি মরিচ সারা দুনিয়ার জনপ্রিয় ঝালজাতীয় মসলা

মসলা

আকাশি মরিচ

বৈজ্ঞানিক নাম: Capsicum frutescens L., Sp. Pl.: 189 (753). সমনাম: জানা নেই। ইংরেজি নাম: Spur Pepper, Cayenne Pepper, Chilloes. স্থানীয় নাম: আকাশি মরিচ, লঙ্কা মরিচ ।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Edicots অবিন্যাসিত: Asterids বর্গ: Sapindales পরিবার: Solanaceae গণ: Capsicum প্রজাতির নাম: Capsicum frutescens

ভূমিকা: আকাশি মরিচ (বৈজ্ঞানিক নাম: Capsicum frutescens ইংরেজি: Spur Pepper, Cayenne Pepper, Chilloes) হচ্ছে সোলানাসি পরিবারের ক্যাপসিকাম গণের বিরুৎ। কাঁচা মরিচ তরকারি ঝাল করার জন্য জনপ্রিয় মসলা হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

বর্ণনা: আকাশি মরিচ গুল্মের ন্যায়, বহুবর্ষজীবী, ২ মিটার পর্যন্ত উঁচু, কান্ড কোণাকার অথবা লম্বা খাঁজবিশিষ্ট এবং লতানো অথবা শিথিলভাবে বিস্তৃত শাখাবিশিষ্ট। পত্র একক অথবা জোড়ায় স্থাপিত, আকৃতিতে ব্যাপক বৈচিত্র্যপূর্ণ, প্রশস্তভাবে ডিম্বাকার, দীর্ঘা, গোড়া সমান অথবা সামান্য অসমান, পত্রবৃন্তক ০.৫-২.৫ সেমি লম্বা, মঞ্জরীদন্ড সরু, ২-৫ সেমি লম্বা, প্রায়শই জোড়ায় স্থাপিত, সাধারণত ফল হতে অপেক্ষাকৃত বৃহৎ।

পুষ্প উভলিঙ্গ, প্রতি পর্বে একত্রে ২টি অথবা অধিক, কখনও কখনও ৫টি পর্যন্ত হয়, খাড়া। বৃতি ঘন্টাকার, সংক্ষিপ্ত, অনেক খাটো, স্থায়ী এবং ফলের গোড়ায় যুক্ত। দলমন্ডল ৫-খন্ডক, খন্ডক বিস্তৃত অথবা পশ্চাৎমুখী বাঁকানো, প্রান্তস্পর্শী, সবুজাভ-সাদা, গ্রীবয়ি প্রায়শই লালচে চিহ্নযুক্ত।

পুংকেশর ৫টি, দলমন্ডলের গোড়ায় সংযুক্ত, পুংদন্ড খাটো। গর্ভাশয় রৈখিক গর্ভদন্ড এবং অর্ধমুন্ডাকার গর্ভমুন্ডসহ ২-কোষবিশিষ্ট। ফল একটি বেরী, ০.৭-২.৫ x ০.৩-১.০ সেমি, সাধারণত পুষ্পবৃন্তিকা হতে অপেক্ষাকৃত খাটো, আয়তাকার, সবসময় খাড়া, লাল অথবা হলুদ, স্থূলাগ্র হতে দীর্ঘাগ্র, খুবই ঝাঁঝালো, অনেক বীজবিশিষ্ট। বীজ মন্ডলাকার, চ্যাপ্টা, ফ্যাকাশে হলুদ। ফুল ও ফল ধারণ: প্রায় সারা বর্ষব্যাপী।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২n = ২৪ (Fedorov, 1969)।

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: মাঠে মসলা শস্য হিসেবে আবাদ করা হয় অথবা কখনও কখনও বসতবাড়িতে লাগালো হয়। ভালো ফলন পেতে হলে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। মরিচ গাছের গোঁড়ায় পানি জমে থাকলে গাছ মারা যায়।  মরিচের বীজ থেকে চারা হয়।

আরো পড়ুন:  আলু ও মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতা ও ভেষজ গুণাগুণ

বিস্তৃতি: গ্রীষ্মমন্ডলীয় আমেরিকাতে স্থানীয়, এখন বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সর্বত্র ব্যাপকভাবে জন্মে।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: আকাশি মরিচের ফল মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয় যা বাংলাদেশে সর্বজনীনভাবে খাওয়া হয়।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) আকাশি মরিচ প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে আকাশি মরিচ সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।[১]

তথ্যসূত্র ও টিকা:

১. এম মতিয়ূর রহমান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৯৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-02

২. টীকা: ইহা Capsicum annum হতে খাড়া ফল, প্রতি পর্বে ২টি অথবা অধিক এবং ফল পুষ্পবৃন্তিকা হতে অপেক্ষাকৃত খাটো দ্বারা পার্থক্যমন্ডিত।

Leave a Comment

error: Content is protected !!