ফুলকপি, বাঁধাকপি বাংলাদেশের মৌসুমি সবজি

ফুলকপি: ইংরেজীতে একে Cauli flower বলে। এর বোটানিক্যাল নাম Brassica oleracea Var. botrytis Linn., হিন্দী নাম ফুল গোভী। ফুলকপির যে অংশটি আমরা খেয়ে থাকি, সেটি সাদা রঙের একগুচ্ছ ক্লীব বা গর্ভপাতিত পুষ্প (abortive flower) এবং সেগুলি প্রচুর শাখা-প্রশাখাযুক্ত পুষ্পদণ্ডের উপর অধিষ্ঠিত। বাঁধাকপির গাছ যত সহজে প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, ফুলকপি তা পারে না।

সমতল ভূমিতে এপ্রিল-সেপ্টেম্বর এবং পাহাড়ী অঞ্চলে ফেব্রুয়ারী থেকে জুনের মধ্যে বীজ বপন করা হয়। সাধারণত সপ্তাহ দুই-তিনের মধ্যে চারা মাঠে লাগানো হয়ে থাকে। গাছ লাগানোর পর ২ থেকে ৪ মাসের মধ্যে কপি পাওয়া যায়। বর্তমানে নানা রকমের ফুল কপির চাষ হয়। বিশেষ পদ্ধতিতে ভারতে ফুলকপির বীজ প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। বহির্ভারতে এর বীজ তৈরি করা অপেক্ষাকৃত সহজ। বীজ অনেকটা কালো সরষের মত দেখতে।

বাঁধাকপি: ইংরেজীতে একে Cabbage বলে। এটির বোটানিক্যাল নাম Brassica oleracea Var. capitata Linn., হিন্দী নাম পাত-গোভী বা বন্দা/বন্ধা গোভী। ভারতবর্ষে সর্বত্রই শীতকালে বাঁধাকপির চাষ হয়। বীজ বোনা থেকে ৩/৪ মাসের মধ্যে কপি পাওয়া যায়। প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে সহজেই এটি খাপ খাইয়ে নিতে পারে। ভারতে বাঁধা কপির বীজ সহজে প্রস্তুত করা যায় না, তবে বর্তমানে সে প্রচেষ্টা অব্যাহত হলেও বাইরে থেকে এদেশে বীজ আসে।

নানা পদ্ধতিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি খেয়ে থাকে এশিয়ার মানুষ। কৃষি গবেষণার উল্লেখযোগ্য অবদানের ফলে আমরা প্রায় সারা বছর ধ’রেই কম-বেশি কপি পেয়ে থাকি। তাহলেও শীতের মৌসুমে যে স্বাদ আমরা পাই, সে স্বাদ অন্য সময়ে প্রায় থাকে না। বাঁধা কপি কুচি কুচি ক’রে কেটে ভালভাবে শুকিয়ে রাখলে সেটি সারা বছর ধ’রে খাওয়া

চলে।

ফুলকপি, বাঁধাকপি-এর উপাদান:

(১) ফুলকপিতে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বহাইড্রেটস্, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন-এ, বি, সি প্রভৃতি বিদ্যমান।

আরো পড়ুন:  বেগুনের নানাবিধ ঔষধি গুনাগুণ, পুষ্টিগুণ, খাদ্যগুণ ও উপকারিতা

(২) বাঁধা কপিতে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বহাইড্রেটস্, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন-এ, বি, সি প্রভৃতি পাওয়া যায়।

তথ্যসূত্র:

১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ১১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, সপ্তম মুদ্রণ ১৪২৬, পৃষ্ঠা, ৮৪-৮৫।

Leave a Comment

error: Content is protected !!