চিত্রপত্রী বাংলাদেশের সর্বত্রে জন্মানো ভেষজ বিরুৎ

বিরুৎ

চিত্রপত্রী

বৈজ্ঞানিক নাম: Commelina diffusa Burm. f., Fl. Ind.: 18. t. 7 (1768). সমনাম: Commelina audiflora L. (1753), Commelina longicaulis Jacq. (1790). ইংরেজি নাম: ক্লাইমম্বিং ডে ফ্লাওয়ার। স্থানীয় নাম: চিত্রপত্রী।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ:  Angiosperms. অবিন্যাসিত:  Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Monocots. বর্গ: Commelinales পরিবার:  Commelinaceae. গণ: Commelina. প্রজাতি: Commelina diffusa.

ভূমিকা: চিত্রপত্র (বৈজ্ঞানিক নাম: Commelina diffusa) বাংলাদেশের সব জেলাতেই জন্মে। এছাড়াও ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।

চিত্রপত্রী-এর বর্ণনা:

বর্ষজীবী বীরুৎ, শাখা প্রশাখা বিস্তৃত, কান্ড লতানো বা আরোহী, প্রায় ৪০ সেমি বা ততোধিক লম্বা, পর্বে মূল জন্মে, পত্র ২.৫-৬.০ x ১.০-২.৫ সেমি, দীর্ঘায়ত বল্লমাকার দীর্ঘাগ্র, পত্রাবরণ লক্ষ্যনীয় রূপে কান্ড আবৃত, মসৃণ, সিলিয়াযুক্ত প্রান্ত পুষ্প পাতার প্রতিমুখ চমসা সদৃশ।

মঞ্জরীপত্র থেকে উথিত দ্বি-খন্ডিত অয়িনত পুষ্প বিন্যাসে জন্মে, চমসা ২-৩ সেমি লম্বা, নিম্নাংশের কিনারা যুক্ত, মঞ্জরীদন্ড ১.০-১.৫ সেমি লম্বা। বৃত্যংশ ৩-৪ মিমি লম্বা, ডিম্বাকৃতি-বল্লমাকার, ফিকে নীল, নখরযুক্ত।

উর্বর পুংকেশর ৩টি, ২ মিমি লম্বা, পরাগধানী সর্বমুখ, বন্ধ্যা পুংকেশর ৩টি, ২ মিমি লম্বা, সব পুংদন্ড নগ্ন । গর্ভাশয় ৩ কোষী এবং ৩ ডিম্বক যুক্ত।

ফল ক্যাপসুল, ৫-৬ মিমি লম্বা, ৩ কোষী, ২ টি সম্মুখের কোষ কোষ্ঠীবিদারী, পশ্চাদের কোষ খাঁজযুক্ত। বীজ ২-৩ মিমি লম্বা, বেলনাকার, কালো, উভয়প্রান্ত মোটামুটি গোলাকার।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৩০ (Zaman and Ahmad, 1972) ।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

ভিজা কর্দমাক্ত বেলে মাটি, জলাশয়ের কিনারা, নদী তীরের পাললিক মাটি, জলাভূমি ও তৃণ ভূমি। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল ডিসেম্বর-জানুয়ারী। বীজ ও কলম করে নতুন চারা তৈরি হয়।

বিস্তৃতি:

ভারত উপমহাদেশ, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর। বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মে।

ব্যবহার:

কচিপাতা সবজিরূপে রান্না করে খাওয়া হয় । জাতিতাত্বিক ব্যবহার: সাঁওতাল আদিবাসীরা পাতাকে সবজি হিসেবে ব্যবহার করে।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) চিত্রপত্র প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

আরো পড়ুন:  ঘোড়া লেজী ঘাস দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় জন্মায়

বাংলাদেশে চিত্রপত্র সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির চাষাবাদ প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. হোসনে আরা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৫০-১৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Brisbane City Council

Leave a Comment

error: Content is protected !!