সোজা জাতা কানশিরা শোভাবর্ধক ও ভেষজ বিরুৎ

বিরুৎ

সোজা জাতা কানশিরা

বৈজ্ঞানিক নাম: Commelina erecta L., Sp. Pl.: 41 (1753). সমনাম: Commelina undulata R. Br. (1810), Commelina kurzii C.B. Clarke (1870). ইংরেজি নাম: ইরেক্ট ডে ফ্লাওয়ার। স্থানীয় নাম: সোজা জাতা কানশিরা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ:  Angiosperms. অবিন্যাসিত:  Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Monocots. বর্গ: Commelinales পরিবার:  Commelinaceae. গণ: Commelina. প্রজাতি: Commelina erecta.

ভূমিকা: সোজা জাতা কানশিরা (বৈজ্ঞানিক নাম: Commelina erecta) বাংলাদেশের সব জেলাতেই জন্মে। বাসার শোভাবর্ধনের জন্য টবে লাগানো হয়। এছাড়াও ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।

সোজা জাতা কানশিরা-এর বর্ণনা:

ঋজু, শাখান্বিত, মসৃণ বহুবর্ষজীবী বীরুৎ, প্রায় ৬০ সেমি লম্বা। পত্র ৮-১৫ x ২-৪ সেমি, বল্লমাকার, সূক্ষ্মগ্র থেকে দীর্ঘা, পত্রাবরণ সুস্পষ্ট, কান্ড আবৃত, অমসৃণ, সাধারণত সিলিয়া যুক্ত।

পুষ্প পাতার প্রতিমুখ চমসা সদৃশ মঞ্জরীপত্র থেকে উত্থিত দ্বিখন্ডিত অনিয়ত পুষ্প বিন্যাসে সন্নিবেশিত, চমসা ২.০ x ২.৫ সেমি, প্রান্তীয়, সমাকীর্ণ, অদ্ভমুখী বক্র, অমসৃণ, কখনও অতি রোমশ, প্রান্তীয় পত্র দ্বারা আচ্ছাদিত।

বৃত্যংশ সাদা, ৫x ৫ মিমি, পৃষ্ঠীয় ২ টি ডিম্বাকার এবং অঙ্কীয় ১ টি বল্লমাকার। পাপড়ি লালাভ নীল, ১২ x ৬ মিমি নখরযুক্ত, পরাগধানী ৪ খন্ডিত। গর্ভাশয় ৩ কোষী, প্রতিকোষে ডিম্বক ১ টি।

ফল ক্যাপসুল, ২-কপাটিকা যুক্ত, ৩-৪ মিমি লম্বা, অর্ধবর্তুলাকার। বীজ পার্শ্বীয় কোষে ৩-৪ মিমি লম্বা, প্রশস্ত উপবৃত্তাকার, চাপা বা অর্ধগোলাকার, মসৃণ।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৪৫, ৬০ (Rao et al., 1970)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

বেলে পাললিক মাটি, তৃণভূমি এবং শিলাময় পাহাড়ী ঢালে এই প্রজাতি জন্মে।  ফুল ও ফল ধারণ সময় জুন-ডিসেম্বর। C. erecta কে সহজেই C. paludosa রূপে ভুল সনাক্ত করা হয় কিন্তু শেষোক্তটির বীজ ৪ মিমি লম্বা ও উপবৃত্তাকার এবং এর পত্রাবরণের মুখ ধূসর রোমশ।

C. erecta এর পরিপক্ক ক্যাপসুলে ২ কপাটিকা আর C. Paludosa এর ক্যাপসুলে ৩ কপাটিকা থাকে। বীজ ও শাখা কলম দ্বারা বংশ বৃদ্ধি হয়।

আরো পড়ুন:  নলিকা-এর নানাবিধ ভেষজ প্রয়োগ

বিস্তৃতি:

আমেরিকার উষ্ণাঞ্চল, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, ভারতীয় উপমহাদেশ ও মালয়েশিয়া, বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মে।

সোজা জাতা কানশিরা-এর গুরুত্ব:

পাতা ও কান্ড সবজিরূপে ব্যবহারযোগ্য, বাহারি উদ্ভিদরূপে টবে রোপন করা যায়। এটির পাতা ক্ষতের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এর ক্বাথ শরীরের বাহ্যিক ত্বকে প্রয়োগ করা হয়।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) সোজা জাতা কানশিরা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে সোজা জাতা কানশিরা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির চাষাবাদ প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. হোসনে আরা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৫১-১৫২। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Vinayaraj

Leave a Comment

error: Content is protected !!