বিষ কনুর বাংলাদেশে পাহাড়ীঞ্চলে জন্মানো ভেষজ বিরুৎ

বিরুৎ

বিষ কনুর

বৈজ্ঞানিক নাম: Crinum defixum Ker-Gawl., Quart. Journ. Sci. 3; 105 (1817). সমনাম: Crinum asiaticum Roxb. (1832). ইংরেজি নাম: পয়জনবাল্ব, ক্রাইম লিলি। স্থানীয় নাম: বিষ কনুর, সুখদর্শন।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Rosids. বর্গ: Sapindales. পরিবার: Amaryllidaceae. গণ: Crinum  প্রজাতির নাম: Crinum defixum.

ভূমিকা: বিষ কনুর (বৈজ্ঞানিক নাম: Crinum defixum) অ্যামেরিলিডেসি পরিবারের কন্দজ বিরুৎ। এর মধ্যে নানা ভেষজ গুণ আছে। এছাড়াও বাড়ি ও বাগানের শোভাবর্ধনের জন্য লাগানো হয়।

বিষ কনুর-এর বর্ণনা:

এই প্রজাতি কন্দাল বীরুৎ। কন্দ দৃঢ়, মূলীয় অংশ মূলকাকার বক্রধাবকবৎ, গ্রীবা বেলনাকার। পাতার দৈর্ঘ্য ৫০-৯০ সেমি ও প্রস্থ ২-৩ সেমি। রৈখিক বা রৈখিক বল্লমাকার, অবতল, মসৃণ, স্থূলাগ্র। ভৌম পুষ্পদন্ড ৪৫-৬০ সেমি লম্বা। সাধারণত পত্রাপেক্ষা ক্ষুদ্রতর, চাপা, মৃসণ। চমসা ৪৫-৬০ সেমি, ২ পত্র বিশিষ্ট, মঞ্জরীপত্র সূত্রাকার।

পুষ্পবিন্যাস আম্বেল, ৬-১৫ টি পুষ্প সমন্বিত। পুষ্প উভলিঙ্গ, বৃহৎ, খাটো বৃন্তক। পুষ্পপুট সাদা, নালি বেলনাকার, ৬.০-৭.৫ সেমি, খন্ড ৬টি, রৈখিক। পুংকেশর ৬টি, পুষ্পপুট নালিমুখ লগ্ন, ছড়ানো, বক্র, পুংদন্ড সাদা বা লাল, পুষ্পপুট খন্ডাপেক্ষা ক্ষুদ্রতর, পরাগধানী দীর্ঘায়ত, বাদামী, সর্বমুখ।

সুখদর্শন গর্ভপত্র ৩টি, যুক্ত, গর্ভাশয় অবোগর্ভ, ৩ কোষী, গর্ভদন্ড ঋজু, গর্ভমুণ্ড সরল। ফল ক্যাপসুল, উপবৃত্তাকার, ২.৫ সেমি, ১-২ বীজি। বীজ বৃহৎ, কুঞ্চিত।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২২ (Alam et al., 1998), ২২, ২৪, ৩০, ৫০, ৬০ (Kumar and Subramaniam, 1986)।

বংশ বিস্তার ও চাষাবাদ:

কন্দের সাহায্যে বংশ বিস্তার। নদীর তীরবর্তী জলাশয়, উদ্যান-যেখানে সাধারণত চাষাবাদ হয়। ফুল ও ফল ধারণ ও মে-আগস্ট।

বিস্তৃতি: ভারত ও শ্রীলংকা। বাংলাদেশের উদ্যানে সহজলভ্য।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও ভেষজ গুণ:

দৃষ্টিনন্দন, বৃহৎ ও সুগন্ধী পুষ্পের জন্য উদ্যানে সমাদৃত। কন্দ বমনেচ্ছা উদ্রেক করে, প্রদাহ স্থানে সেঁক দিতে পুলটিস হিসেবে ব্যবহার হয় (Sinha, 1996)।

আরো পড়ুন:  গাঁদা গিলা পার্বত্যঞ্চলে জন্মানো উপকারী উদ্ভিদ

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বিষ কনুর প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে বিষ কনুর সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের জন্য ব্যক্তিগত বাগানের বাইরেও লাগানো দরকার।

তথ্যসূত্র:

১. এম এ হাসান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৬১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Renjusplace

Leave a Comment

error: Content is protected !!