ভূমিকা: আমাদা (বৈজ্ঞানিক নাম: Curcuma amada) প্রজাতিটির আদিনিবাস ভারত। বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। এই প্রজাতি ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।
আমাদা-এর বর্ণনা:
পত্রল, রাইজোম সমৃদ্ধ বীরুৎ, রাইজোম বিশাল, ডিম্বাকার। পার্শ্ব রাইজোম পুরু, নলাকার, ভিতরে ফিকে হলুদ, কাঁচা আমের মতো গন্ধযুক্ত। পত্রগুচ্ছ ০.৬-১.০ মি. লম্বা।
পাতা সবৃন্তক, বৃন্ত প্রায় পত্রফলকের সমান, পত্রফলক আয়তাকার, আয়ত-উপবৃত্তাকার বা উল্টা বল্লমাকার, ৩০-৬০ x ১২.৫-১৭.৫ সেমি, দীর্ঘা, গোড়া কীলকাকার, ফিকে সবুজ, উপরতল রোমশ, নীচতল মসৃণ।
স্পাইক ৭.৫-১৫ x ৩.৫-৪.০ সেমি, পত্রগুচ্ছের মাঝখানে উৎপন্ন হয়। উর্বর মঞ্জরীপত্র সাদা বা ফিকে সবুজ, প্রায় ২.৫ সেমি লম্বা, কমা-মঞ্জরীপত্র হাল্কা গোলাপি বা সাদাটে।
পুষ্প প্রায় ৪.৫ সেমি লম্বা ও প্রায় মঞ্জরীপত্রের সমান লম্বা। বৃতি ৩-খন্ড, রোমশ। দলনল মাঝে স্ফীত, পাপড়ি ৩টি সাদাটে, উপরের খন্ড ঢাকনাবৎ।
লেবেলাম অগভীর ৩-খন্ড, মাঝের খন্ড খাতাগ্র, দলমন্ডল অতিক্রমি, ক্রীম এর ভিতর গাঢ় হলুদ মধ্য ব্যান্ড সম্পন্ন। পুংদন্ড খাট, চওড়া, পরাগধানী এলিয়ে থাকে, গোড়ায় ২ টি লম্বা স্পার থাকে। গভাশয় রোমশ।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৪২ (Kumar and Subramanium, 1986).
আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:
বন এবং পতিত এলাকা। ফুল ধারণ সময়কাল জুলাই-সেপ্টেম্বর। রাইজোম দ্বারা বংশ বিস্তার করা যায়।
বিস্তৃতি:
এই প্রজাতির আদিনিবাস ভারত । বংলাদেশে এই প্রজাতিটি ঢাকার পুরানা পল্টন থেকে ১৯৪৬ সালে রিপোর্ট করা হয়েছে (Yusuf, 1999)।
আমাদা-এর ভেষজ গুণ:
রাইজোম বায়ু নিরোধক, পাকস্থলীর শক্তি বর্ধক, শীতলকারক, রুচিকারক, কফ নির্গমক, যৌনশক্তি বর্ধক এবং দাস্ত কারক। রাইজোমের পেস্ট প্রদাহ, চুলকানি এবং চর্মরোগে ব্যবহার হয় এর ক্বাথ ব্রংকাইটিস, হাপানী, হিক্কা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ব্যবহার হয়। এটি আঘাত ও মচকানোতে লাগানো হয়। রাইজোম আচারেও ব্যবহার হয়।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১২ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) আমাদা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। ঢাকা থেকে উদ্ভিদটি রিপোর্ট হলে পরবর্তীতে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে আমাদা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে অতিসত্বর গাছটি খুঁজে বের করে এটিকে in-situ এবং ex-situ উভয় পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে।
তথ্যসূত্র:
১. মোহাম্মদ ইউসুফ (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১২ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪৫৯ আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি Gingerwood Nursery ফেসবুক গ্রুপ থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Timothy Chapman
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।