লাইজাবরি দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মানো ভেষজ বিরুৎ

বিরুৎ

লাইজাবরি

বৈজ্ঞানিক নাম: Drymaria diandra Blume, Bijdr.: 62 (1825). সমনাম: Drymaria cordata Edge. & Hook. f. non (L.) Roem. & Schult. (1819). ইংরেজি নাম: Tropical Chickweed, chickweed, drymaria, heartleaf drymary, West Indian chickweed স্থানীয় নাম: লাইজাবরি (অসমীয়া)।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Tracheophytes.অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ:  Caryophyllales. পরিবার: Caryophyllaceae. গণ: Drymaria প্রজাতির নাম: Drymaria diandra

ভূমিকা: লাইজাবরি (বৈজ্ঞানিক নাম: Drymaria diandra) এক প্রকারের ভেষজ উদ্ভিদ। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে সংকটাপন্ন।

লাইজাবরি-এর বর্ণনা:

বর্ষজীবী বীরুৎ, কান্ড ভূশায়ী বা আরোহী, রেখা যুক্ত, পর্বমধ্য, পত্রের চেয়ে দীর্ঘতর, রোমশ বিহীন থেকে গ্রন্থি যুক্ত। পত্র প্রতিমুখ, সবৃন্তক, বৃন্ত ২-৬ মিমি লম্বা সাধরণত উপপত্রাপেক্ষা দীর্ঘতর, পত্রফলক ব-দ্বীপাকার, অর্ধগোলাকারকার বা তাম্বুলাকার, ৫-২৫X ৩-২০ মিমি, প্রায়শ শীর্ষ তীক্ষ্মাগ্র, মূলীয় অংশ অর্ধকর্তিতাগ্র থেকে স্থূলাগ্র, ৩-৭ শিরাল, উপপত্র ছিন্ন প্রান্ত, খন্ড সূত্রাকার, ১-২ মিমি লম্বা ।

পুষ্পবিন্যাস শীর্ষীয়, ৩ থেকে অনেক পুষ্প বিশিষ্ট সাইম। পুষ্প আড়াআড়ি ৪ মিমি, বৃন্ত গ্রন্থিল পিড়কা যুক্ত, মঞ্জরীপত্র ভল্লাকার। বৃত্যংশ ৫টি, দীর্ঘায়ত বা উপবৃত্তাকার ডিম্বাকার, ২.৫-৪.০ মিমি লম্বা, ৩-শিরাল। পাপড়ি ৩-৫ টি, ২.৫ – ৩.০ মিমি লম্বা, মধ্যাংশ পর্যন্ত দ্বিখন্ডিত। পুংকেশর ২-৩ টি পুংদন্ড ১.৫ মিমি লম্বা, পরাগধানী অর্ধগোলাকারকার। গর্ভাশয় ডিম্বাকার, ২ মিমি লম্বা, ১ প্রকোষ্ঠী, গর্ভদন্ড খাটো, ৩ খন্ডিত। ফল ক্যাপসিউল, দীর্ঘায়ত, ২ মিমি লম্বা, ৩টি  কপাটিকা যুক্ত, ১ বীজী । বীজ গালোকার বা বৃক্কাকার, আড়াআড়ি ২ মিমি।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার: পতিত জমি। ফুল ও ফল ধরে প্রায় সারা বর্ষ ব্যাপী। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার হয়।

লাইজাবরি-এর বিস্তৃতি:

ভারত, শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার উষ্ণাঞ্চল, ইন্দোচীন এবং চীন। Sharma and Balakrishna (1993) কর্তৃক এটি বাংলাদেশ থেকে রিপোর্টকৃত।

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক:

বিরেচক ও জ্বর নিবারক। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে শ্বাসনালির প্রদাহ কাশি, সর্দি, এবং নেত্র পীড়ায় এই উদ্ভিদের কান্ড, পাতা মূল ইত্যাদি ব্যবহার করে। ভারতে ভূমিক্ষয় রোধে খাড়া ঢালে এই গাছ রোপণ করা হয়। জাতিতাত্বিক ব্যবহার: ভারতে সাপের বিষ নাশক রূপে এই প্রজাতির ব্যবহার প্রচলিত।

আরো পড়ুন:  নীল টেংরাকাঁটা ভেষজ গুণাগুণের বিবরণ

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) লাইজাবরি প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, উদ্ভিদের আবাসস্থান ধ্বংসের কারণ বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে লাইজাবরি সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি অরণ্যাঞ্চলে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. এস কে দত্ত (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৮৯-১৯০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Krish Dulal

Leave a Comment

error: Content is protected !!